ইসলাম ডেস্ক: আমরা জেনে কখনো না জেনে ভুল করে অনেক গুনাহ করে থাকি। পরে আবার এই গুনাহগুলোর জন্য আপছোচ করি। আমরা যতই আফছোস করি না কেন আল্লাহ পাক যদি সেই পাপ যদি ক্ষমা করে না দেন তাহলে আমরা কেউই রক্ষা পাব না। কিন্তু কিভাবে গুনাহ থেকে মুক্তি লাভ করা যায়, এ বিষয়ে মহান আল্লাহ তা’য়ালাই তাঁর বান্দাদের শিখিয়ে দিয়েছেন।
পরকালের আজাব-গজবের ভয়ে আল্লাহর স্মরণ ও নিজের অক্ষমতার জন্য অনুশোচনা। তখন তওবা কবুলের সম্ভাবনা আছে। তওবার গুরুত্ব সম্পর্কে কোরআনে বর্ণিতÑ হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর নিকট তওবা কর, তওবায়ে নাসুহা বা বিশুদ্ধ তওবা। আল্লাহ পাপ মোচন করে দেবেন।
কোরআর আরও বলছে, যারা তাওবা করে, ঈমান আনয়ন করে এবং ভালো কাজ করে আল্লাহ তায়ালা তাদের খারাপ কাজগুলোকে ভাল কাজ দ্বারা পরিবর্তন করে দেবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু আর যারা তাওবা করে এবং নেক কাজ করে আল্লাহর প্রতি তাদের তাওবাই সত্যিকারের তাওবা। (সূরা ফুরকান : ৭০-৭১)
কোরআনুল কারিম আরও বলছে, তারা কি আল্লাহর দিকে তাওবা করে ফিরে আসবে না এবং তাদের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চাইবে না? অথচ আল্লাহ তো ক্ষমাশীল এবং মেহেরবান। (সূরা মায়েদা :৭৪)
এগারো রোজা থেকে শুরু হয় মাগফেরাত। আর এই সময় হলো পাপ মোচনের উপযুক্ত সময়। আল্লাহর দেওয়া ক্ষমার প্রতিটি মুহূর্তকে তওবা-
বন্ধুরা, নীরবে ভাবুন। আমরা আজ রোজা পেয়েছি। আগামী দিন পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা নেই। গত বছর একসঙ্গে রোজা রেখেছি, তারাবি পড়েছি। এ বছর তাদের অনেকেই জীবিত নেই। আমাদের জীবনের মূল্যবান সময় বরফের মতো গলে গলে শেষ হয়ে যাচ্ছে। জীবনের অন্যায় অপরাধের ক্ষমার জন্যই এ মহান শক্তির কাছে যাব, যিনি বান্দাকে ক্ষমা করেই আনন্দ পান। যার প্রশস্ত দরবার বান্দার প্রার্থনা কবুল করে। পাপমুক্তির জন্য তওবার নিখুত পদ্ধতি সম্পর্কে ইমাম গাজালি এভাবে বলেছেনÑ তওবার আগে গোসল করবে, গায়ের জামাকাপড় পরিবর্তন করবে। নিভৃত স্থানে চার রাকাত নফল নামাজ পড়বে। সিজদায় পড়ে কপাল মাটিতে লুটিয়ে দেবে। পাপের অনুশোচনায় কাঁদবে। মনকে প্রবোধ দেবে, আল্লাহর দরবারে মুক্তির পথ খোলা আছে। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেছেন, হে আদম সন্তান! তোমরা দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে আমার কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করলে আমি অবশ্যই ক্ষমা করে দেব। গোনাহর পরিমাণ যাই হোক, (তিরমিজি)।
ইসতেগফারে কাজে লাগানো। পাপের গ্লানিতে অনুতপ্ত হওয়া। বরফ গলা জীবনে তওবাই আশার আলো। এক জীবনের পাপ মাফ পাওয়ার একমাত্র অবলম্বন তওবা। হজরত আনাস (রা.) বলেন,আমি রাসূল (সা.) কে বলতে শুনেছি। আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে বনি আদম, তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকবে ও আমার প্রতি প্রত্যাশা করবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, তোমার থেকে যত পাপই প্রকাশ পাক, এতে আমি কোন পরোয়া করি না। হে বনি আদম, তোমার গুনাহ যদি ঊর্ধ্বগগণ পর্যন্ত পৌছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব, এতে আমি সামান্য পরোয়া করি না। হে বনি আদম, তুমি যদি আমার কাছে দুনিয়াভরা গুনাহ নিয়ে আস, অতঃপর শিরকে লিপ্ত না হয়ে আমার সঙ্গে সাক্ষাত কর, আমি তোমার নিকট জমিন ভরা ক্ষমা নিয়ে উপস্থিত হব। (তিরমিজি)
রাসুল সা. বলেন, আল্লাহ তার রহস্যময় হাত বাড়িয়ে দেন রাতে, দিবসের পাপীদের ক্ষমা করে দেওয়াজন জন্য। ক্ষমার এ ধারা অব্যাহত থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত, (মুসলিম শরিফ)।
রাসুল সা. বলেছেন, দুর্ভাগ্য ওই ব্যক্তির, যে রোজা পেয়েও নিজের পাপ মোচন করাতে পারল না, (তিরমিজি শরিফ)।
২ আগস্ট,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর