রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:০০:৩৭

মহানবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে যা বলেছিলেন

মহানবী (সা.) বিদায় হজের ভাষণে যা বলেছিলেন

ইসলাম ডেস্ক: নবুওয়াতের দশম হিজরি। মহানবী (সা.) ঘোষণা করলেন হজ করবেন। এ ঘোষণা ছড়িয়ে পড়ল আরবজুড়ে। মহানবীর সঙ্গে হজে অংশ গ্রহণের আগ্রহে আকুল সাহাবিরা। লক্ষাধিক সাহাবি নিয়ে হজ শেষ করলেন মহানবী সা.। দশ লক্ষ হজপালনকারীদের নিয়ে জড়ো হলেন আরাফাতের ময়দানে। নবীজী (সা.) সেদিন জীবনের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করলেন।


সাহাবিদের লক্ষ করে মহানবী সা. ঘোষণা করলেন, ‘শুনে রাখো! জাহিলি যুগের সমস্ত প্রথা ও বিধান আমার দু পায়ের নিচে।’ ‘অনারবদের ওপর আরবদের এবং আরবদের ওপর অনারবদের কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তেমনি সাদার ওপর কালোর কিংবা কালোর ওপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। তোমরা সবাই আদমের সন্তান আর আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে মৃত্তিকা থেকে। মর্যাদার ভিত্তি হচ্ছে শুধু তাকওয়া।’ ‘মুসলমানরা পরস্পর ভাই ভাই। সাবধান! আমার পরে তোমরা একজন আরেক জনকে হত্যা করার মতো কুফরি কাজে লিপ্ত হবে না।’ ‘তোমাদের গোলাম! তোমাদের ভৃত্য! তোমরা নিজেরা যা খাবে, তা-ই তাদের খাওয়াবে; নিজেরা যা পরবে, তা-ই তাদের পরতে দেবে।’

‘জাহিলী যুগের সমস্ত রক্তের প্রতিশোধ প্রত্যাহার করা হলো। (এখন আর কেউ কারো কাছ থেকে পুরানো রক্তের প্রতিশোধ নিতে পারবে না। সর্বপ্রথম আমি নিজ খান্দানের রক্ত-রাবি‘আ বিন্ হারিস পুত্রের রক্ত প্রত্যাহার করে দিলাম।’ ‘জাহিলী যুগের সমস্ত সুদও প্রত্যাহার করা হলো। সর্বপ্রথম আমি নিজ খান্দানের সুদ-আব্বাস বিন আবদুল মুত্তালিবের সুদ প্রত্যাহার করে দিলাম। ‘মেয়েদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। জেনে রাখ, তাদের ওপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে, তেমনি রয়েছে তোমাদের ওপর তাদের অধিকার । তাদের কল্যাণের বিষয়ে আমার উপদেশ গ্রহণ করো।’ ‘আজকের এই দিন, এই মাস এই এই শহরটি যেমন সম্মানিত, তেমনি তোমাদের রক্ত, তোমাদের ইজ্জত, তোমাদের ধন-দৌলত পরস্পরের প্রতি কিয়ামত পর্যন্ত সম্মানিত।’ ‘আমি তোমাদের মধ্যে একটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, তোমরা যদি তা দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো, তাহলে কখনো পথভ্রষ্ট হবে না আর তা হচ্ছে আলøাহর কিতাব।’

এক পর্যায়ে তিনি জনতার কাছে জিজ্ঞেস করেন, ‘আলøাহর দরবারে আমার সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসা করা হলে, তোমরা কি বলবে? সাহাবীরা বললেন, ‘আমরা বলবো, আপনি আমাদের কাছে বার্তা পৌঁছিয়ে দিয়েছেন এবং আপন কর্তব্য পালন করেছেন।’ তিনি আসমানের দিকে শাহাদাত অঙ্গুলি তুলে তিনবার বললেন : ‘হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থেকো।’ এ সময় কুরআনে নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হলো ‘আজকে আমি দ্বীন (ইসলাম)-কে তোমাদের জন্যে পরিপূর্ণ করে দিলাম এবং আমার নিয়ামতকে সম্পূর্ণ করলাম। আর দ্বীন (জীবন পদ্ধতি) হিসাবে ইসলামকে তোমাদের জন্যে মনোনীত করলাম। সর্বশেষ তিনি সম¯Í মুসলমানকে লক্ষ করে বলেন, ‘উপস্থিত ব্যক্তিরা (এসব কথা) অনুপস্থিত লোকদের কাছে পৌঁছে দিও।’
সূত্র : রাসুলুল্লাহর বিপ্লবী জীবন।
৫ আগস্ট,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/রাসেল/এমআর

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে