আমিন মুনশি : হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম; যদি আমি জানতে পারি যে, আজ রাতেই ‘শবে কদর’ তাহলে আমি কোন দোয়া পড়বো? রাসূল (সা.) বলেন, এই দোয়া পড়বে- ‘আল্লাহুমা ইন্নাকা আফুব্বুন, কারীমুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নী’। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনি বড় ক্ষমাশীল, বড় দয়ালু, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন; অতএব, আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ খুবই ব্যাপক অর্থবোধক দোয়া। পুরো রমজানেই এই দোয়া পড়া উত্তম।
লাইলাতুল কদরে আমাদের করণীয় :
(১) মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের ভিত্তিতে প্রত্যেক অভিভাবক নিজে রাত জাগবেন এবং পরিবার-পরিজনকে জাগরণে উদ্বুদ্ধ করবেন।
(২) সাধ্যানুপাতে তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ নামায লম্বা কিরাআত ও লম্বা রুকু সিজদা দ্বারা দীর্ঘক্ষণ যাবৎ আদায় করবেন। সিজদায় তিন বা ততোধিকবার সিজদার তাসবীহ পাঠ করে কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত দোআসমূহ পাঠ করবেন। এ মর্মে বিশুদ্ধ হাদীসও রয়েছে। অনেকে আবার খুব পেরেশান থাকেন যে, কদরের নামাযের নিয়্যাত কি হবে? কোন-কোন সূরা দিয়ে নামাজ পড়তে হবে?
আমাদের ভালোভাবে জানা থাকা প্রয়োজন, ইশার নামাযের পর থেকে নিয়ে ফযর পর্যন্ত যে নফল নামায পড়া হয়, তাকে বলা হয় কিয়ামুল-লাইল বা তাহাজ্জুদ। অতএব কদরের রাতে ইশার পর থেকে ফযর পর্যন্ত যতো নামায পড়া হবে সে গুলোকে নফলও বলা যাবে অথবা তাহাজ্জুদও বলা যাবে। লাইলাতুল কদর উপলক্ষে নামাযের জন্য বিশেষ কোন নিয়্যত নেই বা অমুক-অমুক সূরা দিয়ে পড়তে হবে এমনও কোন ধরাবাধা নিয়ম নেই।
(৩) অতীতের কবীরা গুনাহ বা বড় পাপের জন্য একনিষ্ঠভাবে তাওবা করবেন ও অধিকরূপে ইস্তেগফার করবেন।
(৪) কুরআন মাজীদ পাঠ করবেন। শরীয়াত সম্মত পদ্ধতিতে তথা চুপিসারে, একাকী, রিয়ামুক্ত অবস্থায় যিকির-আযকার করবেন।
(৫) পাপ মোচনসহ পার্থিব ও পরকালীন সার্বিক মুক্তি ও কল্যাণের জন্যে বিনয়ীভাবে একাগ্রচিত্তে দুআ কবুলের প্রত্যাশা নিয়ে দুআ করবেন।
নিঃসন্দেহে ঐ বরকতপূর্ণ রাতটি যে ব্যক্তি অবহেলায় বা অলসতায় অবমূল্যায়ন করলো, এর যথার্থ গুরুত্বারোপ করলো না, সে সমূহ কল্যাণ থেকে নিজকে বিরত রাখলো। প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, ঐ রাতের যথাযথভাবে হক আদায় করে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণ, ফজিলত, বরকত ও আশাতীত সওয়াব লাভে ধন্য হওয়া। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে লাইলাতুল কদরের ফজিলত অর্জন করে তার নৈকট্য লাভের তাওফিক দান করুন।-আমাদেরসময়.কম