প্রায় দুই শ বছর অপেক্ষা করার পর মসজিদে নামাজ আদায়ের সুযোগ পাচ্ছে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের মুসলিমরা। দীর্ঘ বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করার পর আগামী সেপ্টেম্বরে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে মসজিদটি। গত সপ্তাহে গ্রিসের শিক্ষা, গবেষণা ও ধর্ম মন্ত্রী কাসতাস গ্যাভরুগলু মসজিদের নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে এই সময়সীমার কথা জানান। তিনি বলেন, ‘এথেন্স মসজিদের ইমাম শিগগিরই প্রথম নামাজটি পড়াবেন।’
২০১৬ সালে গ্রিসের পার্লামেন্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মসজিদটি নির্মাণের অনুমোদন দেয়। সরকারি সহযোগিতা ও সাধারণ মুসলিমদের অনুদানেই নির্মিত হচ্ছে এথেন্সের প্রথম মসজিদ। নির্মাণকাজ শেষ হলে তাতে সাড়ে তিন শ মানুষ একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারবে। এথেন্সের একজন মুসল্লি বলেন, এটি একটি স্বপ্নের মতো ব্যাপার। গ্রিস রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এথেন্সের মুসলিমদের জন্য এটা একটা চমৎকার উপহার। বর্তমানে বৃহত্তর এথেন্সে দুই লাখের বেশি মুসলিম বাস করে।
মসজিদের ইমাম মুহাম্মদ জাকি বলেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি যে অবশেষে আমাদের একটি মসজিদ হলো। এখানে আমরা নামাজ পড়তে পারব, একত্র হতে পারব এবং আমাদের নিজস্ব বিষয়গুলো আলোচনা করতে পারব।’
১৮৩৩ সালে গ্রিস তুর্কি খেলাফতের কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার পর সেখানে কোনো মসজিদ চালু রাখা বা নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হয়নি। এথেন্স একমাত্র ইউরোপীয় রাজধানী, যেখানে কোনো মসজিদ ছিল না। এত দিন অস্থায়ী ও ব্যক্তিগত জায়গায় এথেন্সের মুসল্লিরা নামাজ আদায় করত। তবে গ্রিসের উত্তরাঞ্চলে তুর্কি সীমান্তের কাছে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় এর আগে মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, স্বাধীনতার পর গত শতকের শুরুতে গ্রিসের আলেকজান্দ্রিয়া, ভেরোরিয়া, থিসালোনিকি, ডিডিমোটেইকো ও এভরোসে বহুসংখ্যক মসজিদ ছিল, যা ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়া হয়। গ্রিসে তুর্কি আমলে নির্মিত বহু স্থাপনাও ধ্বংস করা হয়; এমনকি সাম্প্রতিক সময়েও রোডস অ্যান্ড কোস দ্বীপের একটি তুর্কি মসজিদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
তবে সাম্প্রতিক গ্রিসের মুসলিমরা একটি অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে বন্ধ করে দেওয়া মসজিদ খুলে দেওয়ার জন্য আন্দোলন শুরু করেছে। তারা বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদগুলো তারা নিজস্ব অর্থায়নে সংস্কার করবে; কিন্তু গ্রিস সরকার এখনো সম্মত হয়নি।
তথ্যসূত্র : গালফ নিউজ, রয়টার্স ও ডেইলি সাবাহ