ইসলাম ডেস্ক : মানুষ সামাজিক জীব। পরিবার-পরিজন এবং আত্মীয়স্বজনের বাইরেও আরো কিছু সম্পর্ক থাকে আমাদের। থাকে কিছু অধিকার বা দায়িত্ব পালনের হিসাব-নিকাশ। একাকি বাস করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।
পরিবার-পরিজন এবং আত্মীয়স্বজনের বাইরেও একজন মানুষের যেসব সম্পর্ক থাকে, প্রতিবেশীর সম্পর্ক তার মাঝে অন্যতম। প্রতিবেশী বলতে সাধারণত, বাড়ির পাশে বসবাসকারী লোকজনকে বোঝানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে আপন আত্মীয়স্বজনের চেয়েও অনেক বেশি কাছের এবং অনেক উপকারী হয়ে থাকেন এসব প্রতিবেশীরা। সাধারণ দৃষ্টিকোণ থেকে একটি কথা এভাবেও বলা যেতে পারে যে, যে বা যারা আপনার সবচেয়ে বেশি কাছে অবস্থান করেন, আপনার সুন্দর ব্যবহার এবং সাহায্য-সহযোগিতার তারাই সবচেয়ে বেশি অধিকারী।
মহান আল্লাহ এ মর্মে পবিত্র কোরানে ইরশাদ করেছেন, আর মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার কর, নিকটাত্মীয়, এতিম, মিসকিন এবং নিকটতম প্রতিবেশী ও দূরবর্তী প্রতিবেশী, পাশাপাশি চলার সঙ্গী, পথিক ও অধীনস্থ দাস-দাসীদের সঙ্গেও ভালো ব্যবহার কর। [সুরা আন-নিসা, ৩৬]
প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেয়া এবং সম্ভাব্য নিজের পারিবারিক সব কাজে, আচার-অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ করানোর প্রতি গুরুত্ব প্রদান করতে গিয়ে নবিজি [সা.] প্রিয় সাহাবি হজরত আবু জর [রা.]-কে লক্ষ্য করে বলেছেন, হে আবু জর! তোমার ঘরে যখন তুমি তরকারি পাক কর, তখন পানি বাড়িয়ে দাও এবং প্রতিবেশীর অঙ্গীকার পূর্ণ কর। [মুসলিম]
হজরত আবু হোরায়রা [রা.] থেকে বর্ণিত রাসুল [সা.] বলেছেন, আল্লাহ শপথ! সে ব্যক্তি মুমিন নয়, আল্লাহ শপথ! সে ব্যক্তি মুমিন নয়, আল্লাহ শপথ! সে ব্যক্তি মুমিন নয়।
জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল; কে সেই ব্যক্তি? তিনি বললেন, যার অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ নয়। [বোখারি] হজরত আবু হোরায়রা [রা.] থেকে আরো বর্ণিত আছে, নবিজি [সা.] বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের প্রতি ইমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। [বোখারি]
এছাড়া প্রতিবেশীর হক আদায় এবং তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করার অপরিসীম গুরুত্বের কথা নবিজি [সা.]-এর একটি বাণী দ্বারা প্রতীয়মান হয়। তিনি বলেছেন, হজরত জিবরাইল [আ.] আমাকে প্রতিবেশীর হক আদায় এবং তাদের খোঁজখবর নেয়ার বিষয়ে এত বেশি পরিমাণে অসিয়ত করেছে, আমি এমন ধারণা করেছিলাম যে, প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকার বানিয়ে দেয়া হবে। [বোখারি ও মুসলিম]।
২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই/