চীন সরকার সেখানকার মুসলিমদের রোজা রাখা, নারীদের হিজাব পরাসহ ইসলাম পালন নিষিদ্ধ করার প্রেক্ষাপটে এই তথ্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
বেইজিংয়ের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্র পরিচালিত ‘চীনা ধর্ম জরিপ’ শীর্ষক গবেষণায় বলা হয়, ৩০ বছরের নীচের তরুণদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় ধর্ম হচ্ছে ইসলাম। এর আগে ২০১০ সালে পিউ রিসার্চ জানায় যে ‘নাস্তিক’ চীনে ২ কোটি ৩৩ লাখ মুসলমান বাস করেন, যা মোট জনসংখ্যার ১.৮ শতাংশ।
পিউ রিসার্চের গবেষণায় বলা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে চীনের মুসলিম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩ কোটিতে উন্নীত হবে।
সম্প্রতি চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সরকারি কর্মকর্তাদের রোজা রাখা নিষিদ্ধ করেছে কমিউনিস্ট পার্টি। তবে প্রকাশ্যে তারা এ খবর অস্বীকার করে চলেছে। সরকার মুসলিম দোকানাদারদের মদ ও সিগারেট বিক্রিতেও বাধ্য করেছে।
জিনজিয়াং একটি সংঘাতমত অঞ্চল। ‘ইসলামপন্থী জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে এখানকার বহু উইঘুর মুসলমানকে হত্যা করছে চীন। উইঘুররা বলছেন, তারা রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার। চীনে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম, ক্যাথলিজম, প্রটেস্ট্যানিজম, বুদ্ধিজম, ও তাওইজমকে স্বীকৃতি দেয়া হয়।
জরিপে বলা হয়, ইসলামের পরেই দেশটির ৩০ বছরের নীচের তরুণদের কাছে দ্বিতীয় জনপ্রিয় ধর্ম ক্যাথলিজম। অবশ্য চীনের ঐতিহ্যগত ধর্ম বুদ্ধিজম ও তাওইজম ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের কাছে জনপ্রিয়। চীনের বৌদ্ধধর্মাবলম্বীর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি বলে জরিপে উঠে এসেছে।
পিউ রিসার্চের জরিপে বলা হয়, চীনে মুসলমানদের জন্মহার সবচেয়ে বেশি, গড়ে ১.৭। দেশটির গড় উর্বরতার হার ১.৪।
চীনে মুসলমানদের ইতিহাস মসৃণ নয়। জিনজিয়াংয়ে সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস। অঞ্চলটি অষ্টাদশ শতাব্দীতে চীনের অংশে পরিণত হয়। এখানে মুসলমানরা তুর্কেস্তান রাষ্ট্র ঘোষণা করলে ১৯৪৯ সালে চীনা কর্তৃপক্ষ তাকে ধূলিস্যাৎ করে দেয়।
চীনের সর্বশেষ আদম শুমারি অনুসারে উইঘুর মুসলমানদের সংখ্যা ১ কোটি ১০ লাখ। তবে উইঘুর আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশনের হিসেবে এই সংখ্যা দেড় কোটি। সূত্র: নিউজউইক