রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ১০:৪৭:০৬

রোজা রেখে অনেকেই এই ৮টি ভুল করে থাকে

ইসলাম ডেস্ক : রমজান মাসের রোজা ঈমানদার মুসলিম ব্যক্তির উপর ফরয করা হয়েছে। তাই ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিরা রোজা রেখে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির লাভের চেষ্টা করে। কিন্তু অনেকেই রোজা রেখে প্রতিনিয়ত এমন কিছু কাজ করে যেগুলো ওই ব্যক্তির মহামূল্যবান রোজাকে নষ্ট কখনো কখনো হালকা করে দেয়। তাই জেনে নিন রোজা রেখে আমরা প্রতিনিয়ত যে ভুল করে থাকি, সেই ভুলগুলোর মধ্যে থেকে ৮টি ভুল নিচে তুলে ধরা হলো-


১. খারাপ কাজ বর্জন না করা : আমাদের কিছু সংখ্যক রোজা রাখে কিন্তু তারা মিথ্যাচার, অভিশাপপ্রদান, মারামারি, গীবত ইত্যাদি বর্জন করে না। এদের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, “হে মানুষ, তোমরা যারা ঈমান এনেছো! তোমাদের ওপর সাওম ফরজ করা হয়েছে যেমনটি করা হয়েছিলো তোমাদের পূর্বপুরূষদের ওপর যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।”(সূরা বাকারাঃ১৮৩)। মহানবী (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা ও এর ওপর আমল করা বর্জন করে না ও মূর্খতা পরিহার করে না, তার পানাহার হতে বিরত থেকে উপবাস করা আল্লাহর নিকট প্রয়োজন নেই।”(বুখারী)।

২. ধূমপান ত্যাগ না করা : ধূমপান ইসলামে বর্জনীয় সেটা রামাদান মাসেই হোক বা এর বাইরে হোক, কারণ এটা “আল-খাবিছ্’(খারাপ কাজ) এর একটি। এবং এটা যাবতীয় ধূমপানের সামগ্রী অন্তভূর্ক্ত করে যেমনঃ সিগার, সিগারেট, পাইপ, শিশা, হুক্কা ইত্যাদি। “…তাদের জন্য যাবতীয় পাক জিনিসকে হালাল ও নাপাক জিনিসসমূহকে তাদের ওপর হারাম ঘোষণা করে...” (সূরাআ’রাফ : ১৫৭)।

৩. ইচ্ছাকৃতভাবে সেহরী বাদ দেওয়া : রাসূল (সা.) বলেছেনঃ “সেহরী খাও, কারণ এটার মধ্যে বরকত রয়েছে।”(বুখারী, মুসলিম) এবং তিনি (সা.) বলেছেন, “আমাদের সাওম আর আহলে কিতাবদের সাওম পালনের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে সেহরী গ্রহণ।”(মুসলিম)।

৪. ইফতার করতে দেরি করা : আমাদের অনেকেই ইফতারের সময় মাগরিবের আযান শেষ হওয়া পর্যন্ত বসে থাকেন, আযান শেষ হলে রোযা ভাঙেন। সূর্য অস্ত যাবার পর আযান দেওয়ার সাথে সাথে রোযা ভাঙা সুন্নাহ সম্মত। আনাস(রাঃ) বলেন,“রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এটাই করতেন।(মুসলিম)।

৫. ঈদের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে রমযানের শেষাংশ অবহেলায় পালন করা : আয়শা (রাঃ) হতে বর্ণিত, ‘যখন রমযানের শেষ দশক শুরু হত রাসুল(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)লুঙ্গি শক্ত করে বাঁধতেন(অর্থাৎ ইবাদতে ব্যস্ত থাকতেন,স্ত্রীদের সাথে অন্তরঙ্গ হওয়া থেকে বিরত থাকতেন),রাত্রি জাগরণ করতেন এবং তাঁর পরিবারকে জাগিয়ে তুলতেন।’(বুখারী,মুসলিম)।

৬. রোযা রাখা অথচ পর্দা না পরা : মুসলিম নারীদের জন্য হিজাব না পরা কবীরা গুনাহ। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেছেন, ‘হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।’(আল-আহযাবঃ ৫৯)।

৭. নির্দিষ্টভাবে শুধু ২৭ রমযানের রাতকে লাইলাতুল ক্বাদর মনে করে ইবাদত করা: রাসুল(সা.)বলেছেন, ‘রমজানের শেষ দশ রাত্রির বিজোড় রাতগুলিতে লাইলাতুল ক্বাদর তালাশ কর।’(বুখারি ও মুসলিম)।

৮. রোযা রাখা অথচ নামাজ না পরা : সিয়াম পালনকারী কোন ব্যক্তি নামাজ না পরলে তার সিয়াম কবুল হয়না। রাসুল(সা.)বলেছেন, ‘নামাজ হচ্ছে ঈমান এবং কুফর এর পার্থক্যকারী।’(মুসলিম) আসলে শুধু সিয়াম নয়, নামাজ না পরলে কোন ইবাদতই কবুল হয়না। রাসুল(সা.)বলেন, ‘যে আসরের সালাত পরেনা, তার ভাল কাজসমূহ বাতিল হয়ে যায়।’(বুখারি)।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে