ইসলাম ডেস্ক: মেধা, আচরণ, মনোমুগ্ধকর কোরআন তেলাওয়াত, শুদ্ধ আরবি ও অন্যান্য সাফল্যের কারণে বাংলাদেশি ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের পারস্য উপসাগরীয় দেশ কাতারে।
দেশটির বিভিন্ন মসজিদের মুয়াজ্জিন ও ইমামদের বড় অংশ বাংলাদেশি। দেশটির ২ হাজার ৪শ’র মতো মসজিদে প্রায় ১ হাজার ৩শ’ বাংলাদেশি ইমাম ও মুয়াজ্জিন কর্মরত। কাতারিদের কাছে মুসলিম রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশি ইমাম-মুয়াজ্জিন বেশ সম্মানিত। শুদ্ধ উচ্চারণে কোরআন তেলওয়াতের কারণে বাংলাদেশিদের অংশগ্রহণ বাড়ছে বলে মনে করেন প্রবাসী ইমামরা।
সেই কাতারে আবারও ইমাম-মুয়াজ্জিন হিসেবে নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশিরা। দেশটির ধর্ম মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানের এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এ জন্য কোনো অর্থ খরচ হবে না। শুধুমাত্র যোগ্যতার ভিত্তিতে এই নিয়োগ সম্পন্ন হবে।
আবেদন প্রক্রিয়া
১. মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় মসজিদে (কবরস্থান) আগামী ১ অক্টোবর (মঙ্গলবার) থেকে ৩ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত রেজিষ্ট্রেশন করার সুযোগ থাকবে। এ বছর কোনো ফরম বিতরণ হবে না, কাগজপত্র জমা দিয়ে সিরিয়াল নম্বর নিতে হবে। ৪ অক্টোবর (শুক্রবার) থেকে ১৬ (অক্টোবর) বুধবার পর্যন্ত সাক্ষাতকারের মূলপর্ব ধাপে ধাপে চলবে। এ সময় কোনো নতুন নাম রেজিষ্ট্রেশন হবে না।
২. আগ্রহী প্রার্থীকে অবশ্যই স্বীকৃত আলেম অথবা ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া প্রশংসাপত্র জমা দিতে হবে। সর্বনিম্ন ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর বয়সী হতে হবে। অবশ্যই কোরআনের হাফেজ হতে হবে এবং তাজবিদসহ কোরআন তেলাওয়াতে সক্ষম হতে হবে। পাশাপাশি সুন্দর কণ্ঠ ও ভালো তেলাওয়াতের দক্ষতা থাকতে হবে। যাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ডিগ্রি রয়েছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৩. আবেদনকারীকে অবশ্যই পাসপোর্ট অথবা জন্মসনদের সঙ্গে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি জমা দিতে হবে। পাশাপাশি উত্তীর্ণ প্রার্থীকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ যথাযথ কর্তৃপক্ষ থেকে সত্যায়ন করে জমা দিতে হবে। সবার মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। মৌখিক পরীক্ষা ও সাক্ষাতকারে উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রার্থীকে জীবনবৃত্তান্ত কাগজ ও স্বাস্থ্যসনদ জমা দিতে হবে। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কোনো হেফজ প্রতিযোগিতার ফলাফলের সার্টিফিকেট (জরুরি নয়) আনতে হবে।
আবেদনকারীর প্রস্তুতি
ক. পরীক্ষার বিষয়বস্তু কোরআন তেলাওয়াত (হিফজ) হদর ও আজান-ইকামত। আজান-ইকামতের ক্ষেত্রে মক্কা-মদিনার আজান অনুসরণ করা যেতে পারে।
খ. তাজবিদসহকারে কোরআনে কারিমের উচ্চারণ সুন্দর থেকে সুন্দরতর করার চেষ্টা অব্যাহত রাখা। কোরআন সহিহ-শুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করা।
গ. লাহান ঠিক রেখে পুরো কোরআন ইয়াদ রাখা। মনে রাখতে হবে, যে কোনো জায়গা থেকে কোরআন তেলাওয়াত করা লাগতে পারে।
ঘ. সুউচ্চ আওয়াজে কোরআন তেলাওয়াত করা। গলাটা ছেড়ে আওয়াজ উঁচু করে তেলাওয়াত করা। কারও যদি ‘ইয়াদ-তাজবিদ-লাহান’ ভালো হয়, কিন্তু সে মিনমিন করে আস্তে আস্তে কোরআন তেলাওয়াত করে তা হলে চলবে না। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকা চাই।