ইসলাম ডেস্ক: বয়সের কাছে হার মানেননি রংপুরের সাহেবগঞ্জ এলাকার মতিয়ার রহমান মতি। বয়স প্রায় ৯০ বছর হলেও নিজেই উপার্জন করে সংসার চালান। ছেলে-মেয়ে থাকলেও তার দেখভাল করতে হয় না তাদেরকে। এলাকায় একজন পুঁথি পাঠক হিসেবেও বেশ নামডাক আছে তার।
রংপুর সদরের হারাগাছ রোডের কালির থান মোড় বাজারে একটি ছোট দোকান দিয়েছেন তিনি। অল্প পুঁজির দোকান। সবসময় ক্রেতা থাকে না। আর ক্রেতা না আসলেও সমস্যা নেই তার। সময় কাটান পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করে।
মতিয়ার রহমান বলেন, ‘দোকানে ক্রেতা যখন থাকে না তখন কুরআন তেলাওয়াত করাকে আমি উত্তম মনে করি। এটা আমি প্রতিনিয়ত করি। খুব ভালো লাগে। এতে আমার অন্তরের ময়লা ও অপবিত্রতা দূর হয় বলে আমি মনে করি।’
সংসার সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার দুই বউ ছিল। দুই বউয়ের মধ্যে প্রথম বউ মারা গেছেন। প্রথম বউয়ের ঘরে দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে। দ্বিতীয় বউ বেঁচে আছেন। দ্বিতীয় বউয়ের ঘরে দুই ছেলে। ছেলে-মেয়ের সবাইকে বিয়ে দিয়েছেন।
মতিয়ার রহমান আরও জানান, ‘জমিজমা যা ছিল তা ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছেন। ছেলেরা আলাদা থাকেন। তিনি এখন দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এতে আমার কোনো লজ্জা নেই। রুজি রোজগারে আল্লাহর প্রতি আমার রয়েছে অঘাত বিশ্বাস।’
কালির থান মোড় বাজারের ব্যবসায়ী রহিম উদ্দীন জানান, খুব ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ মতিয়ার রহমান। ছেলে-মেয়ে থাকলেও তাদের কাছে ভরণপোষণ না নিয়ে নিজেই রোজগার করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
মতিয়ার রহমানকে দেখে পথচারীসহ অনেকেই অভিভূত হয়ে পড়েন। বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন তার কাজে অনুপ্রাণিত হন। অনেকেই এসে তার কাছে পুঁথি পাঠ শোনেন। শোনেন আরও অনেক গল্পও। মতিয়ার রহমান এই সংবাদদাতাকে তার জন্য দোয়া করতে বলেন। বলেন আল্লাহ যেন তাকে ঈমানের সাথে পরপারে নিয়ে যান।