ইসলাম ডেস্ক: দোয়া সব ইবাদতের মগ'জ। যে আল্লাহর কাছে দোয়া করে না, আল্লাহ তার ওপর রাগা'ন্বিত হন। আকাশ-বাতাস, গ্রহ-নক্ষত্র—সব কিছুর মালিক তিনি। তিনিই সবার পালনকর্তা ও রিজিকদাতা। মানুষের যেকোনো চাওয়া-পাওয়া পূরণ করার ক্ষমতা একমাত্র তিনিই রাখেন। এ জন্য আমাদের উচিত জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে আল্লাহকে স্মরণ করা। যেকোনো প্রয়োজনে আল্লাহর কাছে আ'ত্মসম'র্পণ করা।
আল্লাহর কাছে দোয়া করার কিছু আদব আছে। যেনতেনভাবে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত নয়। এমন কোনো শব্দ সেখানে ব্যবহার করা উচিত নয়, যা আল্লাহ অপছন্দ করেন। রাসুল (সা.) স্বীয় উম্মতদের শিক্ষা দিয়ে গেছেন যে কী ধরনের শব্দে আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত নয়। নিম্নে তা তুলে ধরা হলো—
তোমার ইচ্ছা হলে আমাকে দান করো
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন দোয়া করে, সে যেন দৃঢ়'তা প্রকাশের সঙ্গে দোয়া করে। আর সে যেন না বলে, ‘হে আল্লাহ! যদি তুমি ইচ্ছা করো, তবে আমাকে দান করো।’ কেননা মহান ও সর্বশক্তিমান আল্লাহর জন্য কোনো বা'ধ্যকারী নেই। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭০৪)
মৃত্যু কাম'না করা
কোনো বিপ'দে পড়লে কখনো মহান আল্লাহর কাছে মৃত্যু কামনা করে দোয়া করা উচিত নয়। বরং বিপদে ধৈর্যসহকারে তাঁর আশ্রয় প্রার্থনাই মুমিনের কাজ। আনাস (রা.)-এর সনদে নবী (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যেন বিপদে পড়ার কারণে মৃত্যু আকা'ঙ্ক্ষা না করে। তবে মৃত্যু তার কা'মনা হয়, তাহলে সে যেন বলে, ‘হে আল্লাহ! আপনি আমাকে জী'বিত রাখুন যতক্ষণ পর্যন্ত আমার হায়াত আমার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়, তবে আমাকে মৃত্যু দিয়ে দিন।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৭০৭)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে এবং মৃত্যু আসার আগে যেন মৃত্যুর জন্য দোয়া না করে। কেননা তোমাদের কেউ মা'রা গেলে তার আমল ব'ন্ধ হয়ে যায়। আর মুমিন লোকের বয়স তার কল্যাণই বাড়িয়ে থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭১২)
ইহকালেই শাস্তি প্রার্থনা করা
আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) একজন মুসলিম রোগীকে সেবা করতে গেলেন। সে (অসুখে কাতর হয়ে) অত্যন্ত দুর্ব'ল হয়ে পড়েছিল, এমনকি সে পাখির ছানার মতো হয়ে গেল। রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেন, তুমি কি কোনো বিষয় প্রার্থনা করছিলে অথবা আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে কিছু চেয়েছিলে? সে বলল, হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে আল্লাহ! আপনি পরকালে আমাকে যে সা'জা দেবেন তা এ ইহকালেই দিয়ে দিন। সে সময় রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, সুবহানাল্লাহ! তোমার এমন সামর্থ্য নেই যে, তা বহ'ন করবে? অথবা তুমি তা স'হ্য করতে পরবে না। তুমি এমনটি বললে না কেন? হে আল্লাহ! আমাদের কল্যাণ দাও পৃথিবীতে এবং কল্যাণ দান করো পরকালেও। আর জাহা'ন্নাম থেকে আমাদেরকে রক্ষা করো। তিনি (বর্ণনাকারী) বলেন, তখন তিনি তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। আর আল্লাহ তাকে সুস্থ করে দেন। (মুসলিম, হাদিস : ৬৭২৮)।
লেখক : মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা, সূত্র :কালেরকণ্ঠ