ইসলাম ডেস্ক : বর্তমান সময়ে দেশের জনপ্রিয় ইসলামের আলোচক মিজানুর রহমান আল-আজহারী সম্প্রতি এক ওয়াজ মাহফিলে বলেছেন, মডেল স্কুল দেখেছি। মডেল কলেজ দেখেছি। মডেল থানা দেখেছি। মডেল আরো কত কী দেখেছি। কিন্তু কখনো মডেল মসজিদ দেখেনি। আমাদের মাঝে ইসলামপ্রিয়রা এমনি একটি মডেল মসজিদের স্বপ্ন দেখি প্রতিটি থানায় থানায়। তিনি মসজিদের অবকাঠামো তুলে ধরেছেন জাতির সামনে।
তার মতে মডেল মসজিদের নমুনা-
১) ৫০ বিঘা জমির উপর নির্মিত হবে এই মডেল #মসজিদ।
২) একজন যোগ্য ইমাম থাকবেন। যার বেতন হবে (এক লক্ষ টাকা) তার কাজ শুধু নামাজ পড়ানো নয়। তিনি নেতৃত্ব দেবেন মসজিদ এরিয়ার পুরো সমাজের। প্রতি জুমাবারে আলোচনা ও সমাধান হবে সমাজের সকল অন্যায় বিশৃঙ্খলা নিয়ে। সমাজে চলমান সকল মহামারী ও সমস্যায় ইসলামী পদ্ধতি কী ও ইসলামে সমাধান কী? মহানবী সা. সকল সমস্যায় কিভাবে সমাধান করতেন? ও বর্তমান বিশ্বে কোন সমস্যাটি চলমান ও তার প্রভাব থেকে এই মসজিদ এরিয়া তার সমাধান কী হবে তা তিনি দেবেন।
৩) ওয়াশ/টয়লেট/অজু এরিয়া। যা হবে 5স্টার মানের। ৪) মসজিদে থাকবে ফ্রি বিশুদ্ধ খাবার পানি। ৫) জুতা রাখার জন্য আলাদা সেল্প বক্স। যা টোকেনের মাধ্যমে নিরাপদে জুতা রাখবে। কেননা অনেকে জুতার সিকিউরিটির জন্যও নামাজটি মসজিদে পড়তে চায় না।
৬) মসজিদ থাকবে এয়ার কন্ডিশনযুক্ত। ৭) মসজিদের বাইরে প্রবেশধারে থাকবে ফুলের বাগান।মুসল্লিদের যাতায়াতে ফুলের গন্ধে মনটা ভরে যাবে নামাযের পূর্বেই।
৮) মসজিদ প্রাঙ্গনে থাকবে বিশাল পার্ক। দূর দূরান্ত থেকে এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসা VIP, CIP সকল এলিট শ্রেণীর লোকজন ও সাধারণ সকলে তাদের বাহন প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল সব পার্কিং করে রাখবে।
৯) মসজিদের এরিয়ায় থাকবে শিশুদের জন্য আলাদা বিনোদনের জায়গা। যেন আমাদের শিশুরা শিশুকাল থেকেই মসজিদমুখী হয়। ১০) থাকবে একটি লাইব্রেরী। যেখানে সমাজের সবাই এসে বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়বে। দেশি বিদেশি লেখকদের আহরণ করা জ্ঞান থেকে সমাজের লোকজনও জ্ঞান আহরণ করবেন।
১১) মসজিদের এক পাশর থাকবে মায়েদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা। যেখানে থাকবে তাদের আলাদা প্রবেশধার, আলাদা 5স্টার মানের ওয়াশ/টয়লেট/অজুর ব্যবস্থা। এবং তা হবে হাই সিকিউরিটি সম্পন্ন।
১২) মসজিদ এরিয়ায় থাকবে একটি কমিউনিটি সেন্টার। যেখানে মসজিদ এলাকার সকল বিবাহ, আকিকা, কুলখানির আয়োজন হবে। আমরা দেখি আজকাল মুসলিম বিবাহ অনুষ্ঠানে হিন্দিগানের তালে ড্যান্স করে আমাদের বোনেরা। যদি কোনো মসজিদ এলাকায় এমন বিবাহ অনুষ্ঠান হয়, তাহলে অন্তত এমন পাপ থেকে কিছুটা নিস্তার পাওয়া যাবে।
১৩) থাকবে একটি কনফারেন্স রুম। যেখানে সমাজের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সমাজপতিরা আলোচনায় বসবেন ও সুষ্ঠু সমাধান দিবেন। ১৪) মসজিদে থাকবে সিকিউরিটি গার্ড। যারা নিয়মিত মসজিদের প্রহরার কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
১৫) পুরো মসজিদ এরিয়াজুড়ে থাকবে সিসিটিভি। কোন অনাকাঙ্খীত ঘটনা যেন না ঘটে বা ঘটলে যেন দ্রুত সমাধান করা যায়। ১৬) এই মসজিদ থাকবে ২৪/৭ ঘন্টা খোলা ও মুসল্লিদের যাতায়াতের ব্যবস্থা। মসজিদে কোনও ক্রমেই তালা লাগানো যাবে না।
১৭) রমাদানে ইফতারের জন্য থাকবে আলাদা ব্যবস্থা।যেখানে মুসল্লিগণ পরিবার নিয়ে বা প্রতিবেশী নিয়ে একত্রে ইফতারি করতে পারবে। ১৮) সব শেষে থাকবে একটি মসজিদ কমিটির অফিস।যেখান থেকে পুরো মডেল মসজিদের সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রিত হবে।
হয়ত বলবেন এত বিশাল এই মডেল মসজিদের কার্যক্রম চালাতে প্রতি মাসে লাগবে অঢেল টাকা। কোথায় পাওয়া যাবে এই টাকা। হ্যাঁ! সেটারো আছে সুষ্ঠু সমাধান। মডেল মসজিদের আয়ের উৎস- ১) গাড়ি পার্কিং এর ‘পার্কিং ফি’। ২) কমিউনিটি সেন্টারের আয়। ৩) সমাজের বিত্তশালীদের অনুদান। ৪) সাপ্তাহিক মুসল্লিদের দান ইত্যাদি।
যেহেতু থানার প্রধান মসজিদ হবে এটাই, তাই সরকারি নিয়মিত মাসিক অনুদানও থাকতে পারে। হয়ত অনেকে চিন্তায় পড়ে গেলেন। কিভাবে এই বাংলাদেশে এমন মডেল মসজিদ তৈরী করা সম্ভব। হয়ত অনেকে বলেই ফেললেন যে “পাগলের প্রলাপ” আমি বলব, আমাদের সমাজের যুবকেরা যে পরিমাণে ইসলাম প্রিয়।