ইসলাম ডেস্ক: ফেরেশতা আল্লাহর বি'স্ময়কর এক সৃষ্টি। আল্লাহ সৃষ্টিজগতে নানা কাজে ফেরেশতাদের নিয়োজিত করেছেন। পবিত্র কোরআনে তাঁদের আল্লাহর বিশেষ বাহি'নী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহর বাণী ও নির্দেশনা তাঁর প্রেরিত পুরুষ নবী-রাসুলদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করেন ফেরেশতারা। সে হিসেবে নবী-রাসুলদের সঙ্গে ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ খুবই স্বাভাবিক।
কিন্তু নবী না হয়েও অনেকেই ফেরেশতার সাক্ষাৎ পেয়েছেন। তাদের মধ্যে যেমন পুণ্যবান মানুষ রয়েছে, তেমনি রয়েছে পাপি'ষ্ঠরাও। যেমন—সারা, মারিয়াম, মুসা (আ.)-এর মা ও লুত (আ.)-এর স'ম্প্রদায়ের লোকেরা। এ ছাড়া মৃ'ত্যুর সময় প্রত্যেক মানুষ মৃ'ত্যুর ফেরেশতাকে দেখতে পায়। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা বলে আল্লাহ আমাদের প্রভু; অতঃপর তারা অট'ল থাকে। তাদের কাছে (মৃত্যু'র সময়) ফেরেশতা এসে বলে, তোমরা ভ'য় পেয়ো না, চি'ন্তিত হয়ো না এবং জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো—যার প্রতিশ্রু'তি তোমাদের দেওয়া হয়েছিল।’ (সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩০)
পাপীদের ব্যাপারে বলা হয়েছে, ‘যেদিন (মৃ'ত্যুর সময়) তারা ফেরেশতাদের দেখবে, (সেদিন বলা হবে) আজ অপরা'ধীদের জন্য কোনো সুসংবাদ নেই।’ (সুরা : ফোরকান, আয়াত : ২২)
মানুষের চোখে ফেরেশতাদের দেখা কি সম্ভব?
মানুষের পক্ষে ফেরেশতাদের দেখা সম্ভব। যা কোরআনের আয়াত ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে ধর্মতা'ত্ত্বিক আলেমদের মতে, ফেরেশতাদের নিজস্ব আ'কৃতিতে দেখা সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে তাঁরা বলেন, ফেরেশতারা আল্লাহর নূর বা জ্যোতি দ্বারা সৃষ্ট, যা মানুষের চোখ স'হ্য করার ক্ষ'মতা রাখে না। মুসা (আ.) আল্লাহর নূর দেখে অচে'তন হয়ে যান। ইরশাদ হয়েছে, ‘সে বলল, হে আমার প্রভু! আমাকে দর্শন দাও, আমি আপনাকে দেখব। তিনি বললেন, তুমি আমাকে কখনোই দেখতে পারবে না। বরং তুমি পাহাড়ের প্রতি ল'ক্ষ করো, যদি তা নিজ স্থানে স্থির থাকে, তবে তুমি আমাকে দেখতে পারবে। যখন তার প্রতিপালক পাহাড়ে জ্যোতি প্রকাশ করলেন, তখন তা পাহাড়কে চূ'র্ণ-বিচূ'র্ণ করল এবং মুসা জ্ঞা'ন হা'রিয়ে পড়ে গেল।...’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৪৩)
এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয়, মানবচোখে ফেরেশতাদের দেখা সম্ভব নয়। তবে রাসুলুল্লাহ (সা.) জিবরাঈল (আ.)-কে একাধিকবার আপন আকৃ'তিতে দেখেন। প্রথমবার দেখার পর তিনিও ভ'য় পান। হাদিসের বর্ণনায়, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তা নিয়ে এমন অবস্থায় ফিরে এলেন যে তাঁর হৃ'ত্স্প'ন্দন বে'ড়ে গেল। তিনি খাদিজা বিনতে খুয়াইলিদ (রা.)-এর কাছে এসে বললেন, আমাকে চাদর আবৃ'ত করো, আমাকে চাদর আবৃ'ত করো। তিনি তাঁকে চাদর আবৃ'ত করলেন। যাতে তাঁর ভ'য় দূর হয়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩)
তবে আল্লাহ কখনো কখনো মানুষকে শেখানোর জন্য, তাদের পরী'ক্ষা করার জন্য মানুষরূপে ফেরেশতা পাঠিয়েছেন। পৃথিবীতে নবী (আ.) ছাড়া যারা ফেরেশতাদের সাক্ষাৎ পেয়েছে, মানুষরূ'পেই পেয়েছে। সহিহ বুখারি ও মুসলিমের হাদিসে সাহাবিদের উপস্থিতিতে রাসুল (সা.)-এর কাছে জিবরাঈল (আ.)-এর আগ'মনের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি যাওয়ার পর তিনি বলেন, ‘ইনি জিবরাঈল। তিনি তোমাদের দ্বিন শেখাতে এসেছিলেন।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২)