ইসমাঈল আযহার: আল্লাহ তাআলার নিকট বান্দার সকল আমল একরকম আর রোযার হিসাব ভিন্ন রকম। আল্লাহ্র নিকট বান্দা আমলের প্রতিদান লাভ করবে। তবে রোযার প্রতিদান আল্লাহ নিজে বান্দাকে দান করবেন। আল্লাহ কেমন প্রতিদান দেবেন তা আল্লাহ্ই ভালো জানেন। আমরা শুধু বুঝি, যে প্রতিদান আল্লাহ বিশেষভাবে দেবেন তা তাঁর শান মোতাবেক দেবেন। রোযার ক্ষেত্রে বান্দার জন্য আল্লাহ্র তরফ থেকে এত বড় সম্মান ও পুরস্কার এ জন্য যে, রোযা সাধারণত আল্লাহ্র জন্যই হয়ে থাকে। অন্যান্য আমলের তুলনায় রোযার ক্ষেত্রে রিয়ার আশঙ্কাও কম থাকে। সেজন্যই আল্লাহ বলেছেন, রোযা আমার জন্য। আর এজন্যই আল্লাহ নিজে এর প্রতিদান দান করবেন।
দ্বিতীয়ত রোযাদারের জন্য এত বড় পুরস্কার এজন্যও যে, আল্লাহ তাআলা অন্যান্য সময় তার জন্য যা হালাল করেছেন রোযা অবস্থায় দিনের বেলা কেবল আল্লাহ্র হুকুমের কারণে সে তা থেকে বিরত থাকছে। সে পানাহার ও বৈধ জৈবিক চাহিদা দমন করছে কেবল আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের লক্ষ্যে এবং একমাত্র তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। অথচ এগুলো এমন বিষয়, একমাত্র আল্লাহ্র ভয়, তাঁর প্রতি বিশ্বাস এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনের প্রত্যাশা ব্যতীত এ থেকে নিবৃত্ত থাকা সম্ভব নয়।
প্রচন্ড গরম। খুব তৃষ্ণা। নামাযের জন্য অযু করছি। কুলি করার জন্য মুখে পানি দিলাম। এ পানি মুখ থেকে বের না করে গিলে ফেললেও দেখার ও বলার কেউ নেই। তবুও মুখের পানি গলার ভেতর না নিয়ে বাইরে ফেলে দিচ্ছি। কারণ? আমার এ বিরত থাকা একমাত্র আল্লাহর জন্য। এজন্য আল্লাহ নিজেই এর বিনিময় দান করবেন।
সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেন, সকল আমলের সওয়াব তো (একরকম) নির্ধারিত। অর্থাৎ প্রতিটি নেকী দশ থেকে সাতশ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে। তবে রোযার বিষয়টি এর ব্যতিক্রম। কেননা রোযা একমাত্র আল্লাহ্র জন্যই হয়ে থাকে। আর তাই এর প্রতিদান আল্লাহ নিজেই দেবেন।
তো যে আমলের প্রতিদান মহান রাব্বুল আলামীন নিজে দান করবেন সেই প্রতিদান কেমন মহান হতে পারে! আর এমন আমলের প্রতি একজন মুমিনের আগ্রহ কত প্রবল থাকতে পারে!! আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সেই অনুভূতি জাগরূক রেখে সিয়াম সাধনার তাওফীক দান করুন। আমীন।