সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৯:০৬:০৭

একই দিনে রোজা ও ঈদ কেন নয় : ডা. জাকির নায়েক

একই দিনে রোজা ও ঈদ কেন নয় : ডা. জাকির নায়েক

ইসলাম ডেস্ক : সিয়াম সাধনার মাস।  রহমতের মাস।  মহান আল্লাহ পাক প্রতিটি মুসলমানের ওপর রোজা ফরজ করেছেন।  বাংলাদেশের অনেক জায়গায় সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে রমজান মাস শুরু এবং ঈদ পালিত হয়ে থাকে।  বিশেষ করে চাঁদপুর, দিনাজপুর ও চট্টগ্রামের বেশকিছু স্থানে।  এতে কিছুটা ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়। কোরআন ও হাদিসের আলোকে এ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করেছেন পিসটিভির প্রখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ ডা. জাকির নায়েক।

সহীহ মুসলিমে বলা হয়েছে, প্রত্যেক দেশের জন্য চাঁদ দেখা জরুরি, যখন মুসলিমগণ এক দেশে চাঁদ দেখবে সেটা থেকে দূর দেশের জন্য সে হুকুম সাব্যস্ত হবে না।  ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে।

ইসলামী চিন্তাবিদ ডা. জাকির নায়েক এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

প্রশ্ন : পৃথিবীতে মুসলমানরা একই দিনে রোজা রাখা, ঈদুল ফিতর এবং ইদুল আজহা পালন করার ব্যাপারে একতাবদ্ধ নয় কেন?

ডা. জাকির নায়েক : এ ব্যাপারে আলিমদের মধ্যে মতভেদ আছে।  একদল বলেন, সারাবিশ্বের মুসলমানদের মক্কার সময় অনুসরণ করা উচিত।  অন্য দলের আলেমগণ বলেন, এই সময়টি বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় সময়ে হওয়া উচিত।

আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, রমজান মাসই হলো সেই মাস, যে মাসে নাযিল করা হয়েছে আল কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ, ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।  কাজেই তোমাদের মধ্যে যে লোক এ মাসটি পাবে, সে এ মাসের রোজা রাখবে।  যে লোক অসুস্থ কিংবা মুসাফির অবস্থায় থাকবে সে অন্যদিনে গণনা পূরণ করবে।  আল্লাহ তোমাদের জন্য সহজ করতে চান; তোমাদের জন্য জটিলতা কামনা করেন না যাতে তোমরা গণনা পূরণ কর। (সূরা বাকারা : ১৮৫)

মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, তোমরা যখন নতুন চাঁদ দেখ তখন রোজা রাখ এবং নতুন চাঁদ দেখলে রোজা ভেঙে ফেল।  (বুখারী : ১৯০৭ ও ১৯০৯)

সুতরাং হাদিসটির ওপর ভিত্তি করে ইবনে তাইমিয়াহ (রহ.) বলেন, বিশ্বের সব জায়গা থেকে একইদিনে রমজানের চাঁদ দেখা অসম্ভব।  তাই মক্কার সময়টি সারাবিশ্বে একযোগে অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

আল কোরআনে বলা হয়েছে, পানাহার কর যতক্ষণ না কালরেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়।  তারপর রোজা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। (বাকারা : ১৮৭)

কিন্তু সূর্যোদয় সারাবিশ্বে একই সময়ে হয় না বরং একেক দেশে একেক সময়ে হয়।  সুতরাং রোজা পালনে স্থানীয় সময় অনুসরণ করতে হবে।

প্রশ্ন : যে শহরে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে রমজান এবং ঈদ পালন করা হয় সেই শহরের লোকদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কী?

ডা. জাকির নায়েক : হাদিসে পরিস্কার বলা হয়েছে, ওইদিন রোজা শুরু হবে যেদিন সবাই রোজা রাখবে, রোজা ভাঙতে হবে ওইদিন যেদিন সবাই রোজা ভাঙে, কোরবানি করতে হবে ওইদিন যেদিন সবাই কোরবানি করে।  (তিরমিযী : ৬৯৭)

সুতরাং হাদিসটি দ্বারা বোঝা যায়, একই শহরের লোকদের একই সাথে রোজা এবং ঈদ পালন করা উচিত।  কারণ এমন কোনো বড় শহর নেই যেখানে একইদিনে চাঁদ দেখতে পাওয়া যায় না।  

সুতরাং তাদের একসাথে রোজা পালন করা উচিত।  এ ক্ষেত্রে যারা নিজের এলাকার চাঁদ না দেখে দূরের কোনো দেশের চাঁদ দেখার ওপর ভিত্তি করে রোজা ও ঈদ পালন করে তাদেরটা বৈধ হবে না।  সূত্র : ইন্টারনেট

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে