রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০, ০১:২১:৩৮

মহান আল্লাহ্‌ বলেন – এই যে মানুষ! শোনো! তুমি যদি সুখী সংসার চাও তোমাকে এই এই কাজগুলো করতে হবে

মহান আল্লাহ্‌ বলেন – এই যে মানুষ! শোনো! তুমি যদি সুখী সংসার চাও তোমাকে এই এই কাজগুলো করতে হবে

“আর তাঁর আশ্চর্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে একটি নিদর্শন এই যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের সঙ্গিনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা ওদের মধ্যে শান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে দিয়েছেন প্রেম আর মায়া। যারা চিন্তা করে তাদের জন্য নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন আছে। (সূরা রুম:২১)

 একটা সুন্দর সংসার এর জন্য স্বামী-স্ত্রীর কি করা উচিত, কি না করা উচিত এগুলো নিয়ে আমরা তো কত লেখাই পড়ি, কত মানুষের কত উপদেশই শুনি – তার কতটা সত্য কতটা মিথ্যা কে জানে? কিন্তু, একটি সুখী বিবাহিত জীবন পাওয়ার জন্য কি করতে হবে – সেই শর্তগুলি যদি সরাসরি আল্লাহর তরফ থেকে আসলে তাহলে কেমন নয়? যিনি স্রষ্টা তার চাইতে বেশী কে জানবে তার সৃষ্টি সম্পর্কে? ভেবে দেখুন, যেখানে মহান আল্লাহ্‌ আমাদের সরাসরি বলে দিচ্ছেন – এই যে মানুষ! শোনো! তুমি যদি সুখী সংসার চাও তোমাকে এই এই কাজগুলো করতে হবে – তাহলে আমাদের কি আর অন্য কোনো দিকে তাকানো ঠিক হবে?

একটা আনন্দময় সংসারের জন্য স্বামী/স্ত্রীর পারষ্পরিক করণীয় কি হবে – এই লেখায় তা আমরা কুরআন মাজিদের সূরা নিসা’র ৩৪ নং আয়াতের প্রথম অংশের আলোকে আলোচনা করব। আল্লাহ্‌ এই আয়াতে প্রথমে ছেলেদের কি করণীয় তা বলেছেন, এরপর মেয়েদের কি করণীয় তা নিয়ে বলেছেন। আমি আয়াতটির বাংলা অনুবাদে ইচ্ছে করে গুরুত্বপূর্ন শব্দগুলোকে আরবীতে রাখব। তারপর সেই আরবী শব্দগুলোর অর্থ ধরে ধরে স্বামী/স্ত্রীর পারষ্পরিক করণীয় কাজগুলির তালিকা বের করব। আসুন তাহলে শুরু করা যাক —
মহান আল্লাহ্‌ বলেন:

অর্থ:
ছেলেরা মেয়েদের ব্যাপারে “ক্বাওয়াম” হবে; কারণ, আল্লাহ্‌ তাদের কাউকে কারো উপর সুবিধা দিয়েছেন, এবং কারণ তারা তাদের সম্পদ থেকে ব্যয় করবে।
কাজেই, “সালিহা” মেয়েরা হবে “কানিতা” ও “হাফিযা” – হেফাযত করবে যা দেখা যায় না এবং যা আল্লাহ্‌ তাদেরকে হেফাযত করতে বলেছেন।

আয়াতাংশটা যে জটিল সন্দেহ নেই। লক্ষ্য করলে দেখবেন, এখানে আসলে দুইটা বাক্য আছে (উল্লেখ্য, বাক্য আর আয়াত এক জিনিস নয়। অনেক বাক্য মিলে এক আয়াত হতে পারে, আবার একাধিক আয়াত মিলেও একটা বাক্য হতে পারে)। প্রথম বাক্যে আল্লাহ্‌ ছেলেদের করণীয়গুলি নিয়ে বলেছেন, আর দ্বিতীয় বাক্যে বলেছেন মেয়েদের করণীয়গুলি নিয়ে।

"তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।"
- সূরা নূর, আয়াত ৩২

লক্ষ্য করুন, কুরআনের আয়াত আমাদের কি বলে? "এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ন, তাদেরও (বিয়ে দিয়ে দাও)।" তখনকার সমাজে দাস দাসীরাও ছিল। এদের বলতে গেলে কোন টাকা-পয়সাই ছিল না। আল্লাহ বলেন - তাদেরকেও বিয়ে দিয়ে দাও। তাই এই যুক্তি যে, বিয়ে সম্পর্কে চিন্তা করার আগে কাউকে স্বাবলম্বী হতে হবে- তা এই একটি বক্তব্যের মাধ্যমে তছনছ করে দেয়া হল, সমীকরণ থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হল। যে বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে তা হল, প্রথমতঃ তারা কি বিয়ের বয়সে পৌঁছেছে? আর দ্বিতীয়তঃ 'সলিহিন' ভাল মানুষ। ভাল মানে তাদের আল্লাহর সাথে ভাল সম্পর্ক রয়েছে এবং তারা পরিণত, তারা প্রস্তুত।

তারপর আল্লাহ এর সাথে যোগ করে আরও বলেন - কারণ এখনও বহু মানুষ এই বিষয়টাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে- ''তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন ''

কারণ টাকা পয়সার বিষয়টা আল্লাহর নিকট ক্ষুদ্র সমস্যা। কিন্তু 'আইমা' ... আইমা মানে সমাজের বহু মানুষ যারা অবিবাহিত রয়ে গেছে, সেটা তুলনামূলক বড় সমস্যা। অর্থ কড়ি না থাকা ছোট সমস্যা। কিন্তু মানুষের মাঝে সম্পর্ক জুড়ে না দেয়া আল্লাহর নিকট অনেক অনেক বড় সমস্যা। এই আয়াতটি পড়ার সময় আমি একটি বর্ণনার সন্ধান পাই যেখানে বলা আছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন সমাজ থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইতেন যেখানে প্রচুর অবিবাহিত মানুষ রয়েছে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে