সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:১৪:৩৮

যে কারণে ইসলামে দাবা খেলা নিষিদ্ধ

যে কারণে ইসলামে দাবা খেলা নিষিদ্ধ

ইসলাম ডেস্ক: খেলাধূলা শরীর চর্চার জন্য অবশ্য ভাল কাজে দেয়। অবশ্য বর্তমান ফুটবল, ক্রিকেট কিংবা টেনিসের এই যুগে অনেকেই পুরনো খেলা দাবার নামই ভুলে গেছে। বর্তমান সময়ে ফুটবল, ক্রিকেট, কিংবা টেনিসের সাথে অনেকটাই জনপ্রিয় খেলা দাবা। তবে এই খেলাটিকে নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন, ইসলামে দাবা খেলা কেন হারাম? যদিও অন্যান্য খেলার মতই এটি একটি বুদ্ধির খেলা। এই খেলা খেললে বুদ্ধির চর্চা করা হয়। তারপরও এই খেলাটি কেন ইসলামে নিষিদ্ধ।

যেকোনো কাজ যা মানুষকে আল্লাহ স্মরণ করা থেকে বিরত রাখে তাই হারাম। আবু হানিফা (র) , ইমাম মালিক (র) সহ আরও অনেক ইমাম এক্ষেত্রে একটা কুরআনের আয়াত প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেছেন, “হে মুমিনগণ! নিশ্চয় মদ,জুয়া,মূর্তি ইত্যাদি এবং লটারির তীর এসব গর্হিত বিষয় শয়তানি কাজ ছাড়া এর কিছুই নয় কাজেই এইসব বিষয় থেকে দূরে থাক,যাতে তোমাদের কল্যাণ হয়।শয়তান তো এটাই চায় যে মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে হিংসা ও শত্রুতা এবং আল্লাহর স্মরণ এবং সালাত হতে তোমাদেরকে বিরত রাখে,সুতরাং এখনও কি তোমরা ফিরে আসবে?”(মায়েদাহ ৫:৯০-৯১)

আমরা সবাই হয়ত জানি যে ইসলাম সকল প্রকার মূর্তি হারাম করেছে। দাবার প্রায় সব গুটিই কোনো না কোনো মূর্তির আদলে তৈরি। আর এজন্য উপরের হাদিসটি এটাই প্রমান করে যে দাবা খেলা হারাম।

আল কুরতুবী (র) বলেছেন যে, এই আয়াত এটাই নির্দেশ করে যে পাশা বা দাবা খেলা হারাম সেখানে জুয়ার কোন অস্তিত্ব থাকুক আর নাই বা থাকুক কারণ আল্লাহ্ সুবহানাত’লা মদকে হারাম করেছেন এবং এর পেছনে কারণ ও বলে দিয়েছেন, আর কারণটা হচ্ছে শয়তান মানুষের মাঝে নেশা ও বাজির মাধ্যমে শত্রুতা ও বিদ্বেষ তৈরি এবং মানুষকে আল্লাহকে স্মরণ এবং নামাজ থেকে বিরত রাখে । তাই এমন কোন খেলা যা তুচ্ছ জিনিসকে বড় করে তুলে এবং যারা ইহা খেলে তাদের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ জাগরিত করে সাথে সাথে আল্লাহ্র স্মরণ ও নামাজ থেকে বিরত রাখে তাও মদ খাওয়ার মতই হারাম ।

সুলাইমান ইবনে বুরাইদাহ তার পিতা বুরাইদাহ (রাঃ) হইতে বর্ণনা করেছেন।রাসুল (সাঃ) বলেছেন,“যে ব্যাক্তি পাশা খেলল সে যেন শূয়রের গোশত ও রক্তে হাত রাঙাল”।(মুসলিমঃ২২৬০)

আবু মুসা আল আশারি (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সাঃ) বলেন,“যে পাশা খেলল সে যেন আল্লাহ্ এবং আমাকে অমান্য করল”।(আবু-দাউদঃ৪১২৯,নাসিরুদ্দিন আলবানীর মতে সহীহ)
একদিন দু’জন আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কি ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্তু যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক (لَهْو) ... (নাসাঈ, ছহীহাহ হা/৩১৫)। এতে বুঝা যায় যে, বৈধ খেলাও যদি আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, তবে সেটাও জায়েয হবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (لَهْو) বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাৎহুলবারী ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায় ৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃঃ)।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে