ফরাসি মুসলিমদের বিরুদ্ধে কঠোর অভিযানের অংশ হিসেবে ফ্রান্সের অনেক মসজিদ সাময়িক বন্ধ করেছিল দেশটির সরকার। গতকাল শুক্রবার (৯ এপ্রিল) দীর্ঘ ছয় মাস বন্ধের পর প্যারিসের প্যান্টিন উপশহরের গ্র্যান্ড মসজিদে পুনরায় নামাজ শুরু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে জানা যায়, প্যান্টিন গ্র্যান্ড মসজিদটি পুনরায় চালুর পর অনুষ্ঠিত জুমায় দুই শতাধিক মুসল্লি অংশ গ্রহণ করেন। অবশ্য মসজিদে ১৩ শয়ের বেশি মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা আছে।
গত বছরের ১৬ অক্টোবর প্যারিসের কনফ্লানস সেইন্তে-হনোরাইন শহরতলীর মিডল স্কুলের ইতিহাসের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি ক্লাসে মহানবী (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন করেন। পরবর্তীতে একজন চেচনিয়ান বংশোদ্ভূত কিশোর তাঁকে হত্যা করে। পুলিশের গুলিতে ওই কিশোর নিহত হয়।
এরপর থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যরা বিভিন্ন অভিযান শুরু করে এবং শহরতলীল প্যান্টিন মসজিদ বন্ধ করে দেয়। কারণ শিক্ষক হত্যার আগের দিন মহানবী (সা.)-এর নিন্দা জানিয়েছে নিজেদের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও শেয়ার দিয়েছিল।
ফরাসি নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে বিবেচিত উগ্রবাদ প্রতিরোধে কঠোর কর্মসূচীর অংশ হিসেবে এ পুলিশ নিকটতম এ মসজিদ সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশনা দেয়। সন্ত্রাসবাদ দমনের উদ্দেশ্যে ছয় মাস ব্যাপী এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা ছিল। শিক্ষক হত্যার ঘটনার পর মসজিদের ইমাম পদত্যাগ করেন। এছাড়া পরিচালক মহাম্মাদ হেনিচও পদত্যাগ করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও শেয়ার করায় দুঃখ প্রকাশ করেন।
পুনরায় চালুর বিষয়ে মসজিদের ইমাম ও পরিচালকের চলে যাওয়ার শর্তারোপ করেছেন ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিরার্ল্ড ডারমানিন। গত মার্চে ডারমানিন দেশটির ৮৯টি মসজিদে নজরদারির কথা জানিয়েছেন।
ইরোপের মধ্যে ফ্রান্সে সবচেয়ে বেশি মুসলিম বসবাস করে। মুসলিমরা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম জনগোষ্ঠী। খ্রিস্টান ধর্মের পর ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম।
গত বছরের সেপ্টম্বরে চার্লি অ্যাবদো পত্রিকার সাবেক অফিসের সামনে দুই ব্যক্তি ছুরিকাঘাত, শিরচ্ছ্যেদ করে শিক্ষক হত্যা, নিস শহরের নটরডেম বাসিলিকানে তিন ব্যক্তিকে হত্যার ধারাবাহিক ঘটনায় আন্তর্জাতিক বিশ্ব তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে। এরপর থেকে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর নানা রকম বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ