ইসলাম ডেস্ক: জার্মান নাগরিক মার্টিন আহমদ জন্মগ্রহণ করেন একটি খ্রিস্টান পরিবারে। স্কুলে মুসলিম সহপাঠীর সঙ্গে বন্ধুত্বের সূ'ত্রে ইসলামের সঙ্গে তাঁর প্রথম জানাশোনা হয়। পরবর্তী সময়ে বন্ধু হাসানের পারিবারিক শৃ'ঙ্খল, পরিবারের সৌহার্দ্য ও স'ম্প্রী'তি দেখে ইসলাম গ্রহণে উৎ'সা'হিত হন এবং বন্ধুর বাবার হাতে ইসলাম গ্রহণ করেন। তাঁর ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ঘ'টনাটি অ্যাবাউট ইসলাম-এ প্রকাশিত হয়েছে।
রোজার সময় মুসলিম বন্ধুর খাবার পরিহার : হাইস্কুলে এক সহপাঠীর সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ছেলেটি শান্ত-সভ্য। কথা বলে কম। নিজের মতো থাকতে স্বা'চ্ছন্দ্যবো'ধ করে। একদিন বিরতির সময় আমি নিজেই তার সঙ্গে কথা বলি। সেদিন থেকে আমরা দুজন একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেতাম। শরতের একদিন সে আমাকে জানাল যে আজ সে আমার সঙ্গে দুপুরের খানা খাবে না। আমি যখন খানা খাব তখন সে আমার পাশে বসে থাকবে। বিষয়টি আমার কাছে খুব অ'দ্ভু'ত মনে হলেও আমি তাকে এ ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন করিনি। এভাবে বেশ কয়েক দিন চলল। একদিন তাকে প্রশ্ন করেই ফেললাম—কেন সে আমার সঙ্গে দুপুরে খাবার খায় না। আমি ভেবেছিলাম হয়তো সে অ'র্থসং'ক'টে আছে। প্রশ্ন করেছিলাম যেন আমি তাঁকে সাহায্য করতে পারি। কিন্তু সে আমার সাহায্য প্র'ত্যা'খ্যা'ন করে বলল, আমি রোজাদার। ওই দিনই আমার বন্ধুটি আমাকে রাতের খাবারে তার বাড়িতে নিমন্ত্রণ করে।
বন্ধুর বাড়িতে স্মরণীয় মুহূর্ত : আমার বন্ধুর নাম হাসান। হাসানের বাড়িতে প্রথম মেহমান হওয়ার দিনটি আমার কাছে স্ম'রণীয়। আমাকে হাসানের মা নিজের ছেলের মতো অ'ভ্যর্থ'না জানালেন। স্নেহ-মমতায় আমাকে ব'র'ণ করেছিলেন। সেদিন আমাদের সঙ্গে হাসানের দাদা-দাদিও উপস্থিত ছিলেন। আমার মনে আছে, আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম, হাসানের দাদা-দাদি কী মাঝেমধ্যে এখানে বেড়াতে আসেন।
হাসানের মা হেসে বলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে থাকি। আমরা সবাই এক পরিবারের মানুষ। প্রথমে কথাটি শুনে আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। কেননা আমার দাদা-দাদি আমাদের সঙ্গে থাকেন না। তাদের আতিথেয়তায় আমি বেশ মু'গ্ধ হয়েছি। আমাদের পরিবারে আমরা কখনো একসঙ্গে খবার খাই না। কারো ক্ষু'ধা লাগলে কিংবা খাবারের প্রয়োজন হলে ফ্রি'জ থেকে নিয়ে খে'য়ে ফেলে। আমাদের বাড়িতে কোনো মেহমান আসে না। আর যদি আমি আমার কোনো বন্ধুকে আমাদের বাড়িতে নিয়েও আসি, তবে আমার মাকে পাওয়া যায় না। তিনি তাঁর কাজে ব্যস্ত থাকেন।
প্রতি সপ্তাহে বন্ধুর বাড়িতে আমন্ত্রণ : হাসানের বাড়িতে এটিই আমার শেষ আমন্ত্রণ ছিল না। প্রতি সপ্তাহে সে আমাকে একদিন না একদিন ডিনারের দাওয়াত দিত। তাদের সঙ্গে কা'টা'নো সময়গুলো আমার খুব ভালো লাগত। আমি প্রায় হাসানের বাড়ি যেতাম। তাদের সঙ্গে সময় কা'টা'তাম। আমি হাসানের পরিবার ও আমার পরিবারের মধ্যে পার্থক্য কী তা খুঁ'জে বের করার চে'ষ্টা করতাম। হাসানের পরিবারে কী আছে, যা আমার পরিবারে নেই?
পরিবারের সম্মিলিত ইবাদত দেখে ইসলাম গ্রহণ : সে সময় ইসলাম নিয়ে আমার তেমন জানাশোনা ছিল না। হাসানের পরিবার যে মুসলিম তাও আমি জানতাম না। একদিন আমি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সময় হাসানের বাড়িতে অবস্থান করি। হঠাৎ দেখলাম, পরিবারে সবাই একসঙ্গে প্রার্থনা পড়ছে। এ দৃ'শ্যটি আমার ভেতরে আ'লো'ড়ন সৃ'ষ্টি করে। তারা শুধু একসঙ্গে খানা খায় না, তারা একসঙ্গে আল্লাহর মু'খোমু'খিও হয়। তারা একসঙ্গে আল্লাহর ইবাদতও করে। পরের দিন খাবারের বিরতির সময় হাসানের সঙ্গে আমার দেখা হলো। তাকে তাদের প্রার্থনা-ইবাদত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। বললাম, তাদের মতো হলে আমাকে কী কী করতে হবে। সে আমার কথা শুনে খুব অবা'ক হলো।
স্কুল ছুটির পর আমি হাসানের বাড়ি যাই। তার বাবা আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করি। তিনি এলে হাসান তাঁকে জানায়, আমি মুসলমান হতে চাই। তিনি আবে'গাপ্লু'ত হয়ে আমাকে জ'ড়িয়ে 'ধরেন। জায়নামাজে বসে তিনি আমাকে কালিমা পাঠ করান। আল-হামদুলিল্লাহ!