আবেগ মানব-স্বভাবের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। আবেগহীনতা মানবিক ত্রুটি। অতএব আবেগের যথার্থ ও পরিমিত ব্যবহার যেমন কাম্য— তেমনি আবেগের যথেচ্ছ ব্যবহারও পরিহার্য এবং পরিত্যাজ্য।
মানবিক আবেগ ও অনুভূতি তাড়িত হয়ে যেমন মানুষ অনেক ভালো কাজ ও মহৎ কাজ করে; তেমনি সাময়িক আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেক বড় বড় ভুলও করে ফেলে। অনেক সাময়িক ভুলের খেসারত মানুষকে জীবনভর দিয়ে বেড়াতে হয়। অসময়ের অপ্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আবেগের ব্যবহার মানুষকে বিপথগামী করে।
কাজেই প্রিয় তরুণ ও যুবকদের প্রতি নিবেদন— আবেগকে ভালো কাজে ব্যবহার করুন। আবেগ-তাড়িত হোন, কিন্তু আবেগের বশবর্তী হবেন না। নিজের আবেগকে শরিয়তের নির্দেশনার নিরিখে যাচাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ, বয়োজ্যেষ্ঠ ও মুত্তাকি-আল্লাহভীরুদের পরামর্শ নিন, তাদের সাহচর্যে থাকুন।
আবেগ অনেকটা সফট ড্রিংকসের মতো। খুব তাড়াতাড়ি উবে যায়। বর্তমান সময়ের তরুণ-যুবকদের আবেগের অনেকখানি খরচ হয় অবৈধ ভালোবাসায়। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, যারা বিয়ের আগে অবৈধ প্রেমে অনেকে বেশি আবেগ-কাতর থাকেন— বিয়ের পর স্ত্রীর প্রতি অতটা আবেগ ধারণ করেন না। এর কারণ হারামের প্রতি মোহ মানুষকে হালালের আগ্রহ থেকে বঞ্চিত করে। হালালের স্বাদ থেকে বঞ্চিত করে।
সুতরাং শুভার্থী হিসেবে তরুণ-যুবকদের প্রতি আমার আবেদন— অন্তরের আবেগ জমিয়ে রাখুন বৈধ ভালোবাসার জন্য, এটি পাওয়ার অধিকার যার— তার জন্য। আবেগ ও প্রেম যদি অপাত্রে অপচয় করে ফেলেন, তাহলে যথার্থ পাত্রে খরচ করার সময় তা অবশিষ্ট থাকবে না।
এখনকার দাম্পত্য-কলহের মূলে রয়েছে প্রেমহীনতা। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও আস্থার অনুপস্থিতি। স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বিশ্বাস ও আস্থার ঘাটতির জন্য বিবাহ-পূর্ব প্রেম অনেকাংশে দায়ী।
শায়খ আহমাদুল্লাহ।। বিশিষ্ট ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও সুবিদিত মধ্যপন্থাবলম্বী আলোচক।