সব বয়সি শত শত শিশু-কিশোর ও নারীকে বিনাপারিশ্রমিকেই প্রায় ১৫ বছর ধরে কুরআন শরিফ শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন জামেলা খাতুন (৩০) নামে এক নারী।
দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় স্কুল থেকে একদিন বাড়ি ফেরার পর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন জামেলা খাতুন। রাত পার হওয়ার পর হাত-পা বাঁকা হয়ে যায় তার। দিনমজুর বাবা অভাবের কারণে মেয়েকে ভালো চিকিৎসাও দিতে পারেননি। একটা সময় শারীরিক প্রতিব'ন্ধী হয়ে পড়েন জামেলা।
ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার প্রতি প্র'ব'ল আগ্রহ থাকলেও আর কখনও স্কুলে যাওয়া হয়নি তার। এর মধ্যে কিডনি রোগে আক্রা'ন্ত হয়ে মা'রা যান বাবা জমশের আলী প্রামাণিক। সংসারে জেঁকে বসে অভাব। কিন্তু দ'মে যাননি জামেলা। আল্লাহকে ভালোবেসে শারীরিক প্রতিব'ন্ধকতাকে জয় করে স্থানীয় এক হাফেজের কাছে পবিত্র কুরআন শরিফ পড়া শেখেন জামেলা। কিছু দিনের মধ্যেই পুরোটা শিখে ফে'লার পর গ্রামের সব বয়সি শত শত শিশু-কিশোর ও নারীকে বিনাপারিশ্রমিকে প্রায় ১৫ বছর ধরে কুরআন শরিফ শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন বছর ত্রিশের এ নারী।
সংসার চলে কীভাবে, ঘরে বাজার আছে কিনা এসব কোনো চিন্তা না করে প্রতিদিন সকাল, দুপুর ও বিকাল হলেই পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল ইউনিয়নের ডেফলচড়া গ্রামে জামেলার জরাজীর্ণ টিনের ঘরের সামনের উঠোনে ভিড় জমান শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সি নারী-পুরুষ। কুরআন শরিফের বিভিন্ন সুরা ও আয়াতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারদিক। একজন নারী এবং শারীরিক প্রতিব'ন্ধী হয়েও যেভাবে দিনের পর দিন জামেলা পবিত্র কুরআন শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন তা দেখে স্থানীয়রাও মুগ্ধ!