ইসলাম ডেস্ক : আরবি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাত ‘লাইলাতুম মিন নিসফা শাবান’। এটি ‘লাইলাতুল বরাত’ বা ‘শবেবরাত’ নামে বেশি পরিচিত। বান্দার ক্ষমা ও মুক্তির রাত লাইলাতুল বারাআত। এ রাতে আল্লাহ তা’আলা বান্দাকে ক্ষমা করেন। মুসলমানরা রাতটিকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন। যদিও সম্মিলিতভাবে ইবাদত সম্পর্কে হাদিসে কোনো দিকনির্দেশনা নেই।
তবে নিসফা শাবানের রাতে বা শবেবরাতের রাতে মহানা আল্লাহ বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। এ রাতে আল্লাহপাক বিশ্ববাসীর তাকদির সম্পর্কীয় যাবতীয় বিষয়ের নথিপত্র কার্যকর করার জন্যে ফেরেশতাদের কাছে হস্তান্তর করেন। তাই এই রাতে বেশি বেশি দোয়া করা উত্তম।
হাদিসে এসেছে- ‘হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, পাঁচটি রাত এমন আছে, যে রাতে বান্দার কোনো দোয়া ফেরত দেওয়া হয় না। আর তা হলো-
১. জুমার রাতের দোয়া। ২. রজব মাসের প্রথম রাতের দোয়া। ৩. নিসফা শাবান তথা অর্ধ শাবানের রাতের দোয়া। ৪. ঈদুল ফিতর তথা রোজার ঈদের রাতের দোয়া। ৫. ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদের রাতের দোয়া।’ (মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক)
ইমাম শাফেঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘আমাদের কাছে পৌঁছেছে যে, পাঁচটি রাতে দোয়া বেশি বেশি কবুল করা হয়। জুমআর রাত, ঈদুল আজহার রাত, ঈদুল ফিতরের রাত, রজব মাসের প্রথম রাত এবং নিসফা শাবান তথা শাবানের ১৫তম রাতের দোয়া।’ (কিতাবুল উম্ম, আস-সুনানুল কুবরা)
তাই আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করতে নিচের দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়তে পারেন- رَبِّ أَوْزِعْنِىٓ أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِىٓ أَنْعَمْتَ عَلَىَّ وَعَلٰى وٰلِدَىَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صٰلِحًا تَرْضٰىهُ وَأَدْخِلْنِى بِرَحْمَتِكَ فِى عِبَادِكَ الصّٰلِحِينَ
উচ্চারণ: রাব্বি আওঝি'নি আন আশকুরা নি'মাতাকাল্লাতি আনআমতা আলাইয়্যা ওয়া আলা ওয়ালিদাইয়্যা ওয়া আন আ'মালা সালেহাং তারদাহু ওয়া আদখিলনি বিরাহমাতিকা ফি ইবাদিকাস সালিহিন।' (সুরা নামল : আয়াত ১৯) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَ ضَلَعِ الدَّيْنِ وَ غَلَبَةِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হাযানি ওয়াল আজযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল জুবনি ওয়াল বুখলি ওয়া দালায়িদ দাইনি ওয়া গালাবাতিল রিজালি।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَاَعُوْذُبِكَ مِنَ الْبُخْلِ وَاَعُوْذُبِكَ مِن اَرْذَلِ الْعُمُرِ وَ اَعُوْذُبِكَ مِن فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَ عَذَابِ الْقَبْرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল জুবনি ওয়া আউজুবিকা মিনাল বুখলি ওয়া আউজুবিকা মিন আরজালিল উমুরি ওয়া আউজুবিকা মিন ফিতনাতিদ দুনিয়া ওয়া আজাবিল কাবরি।’ (বুখারি ও মিশকাত) اَللَّهُمَّ اِنِّى اَعُوْذُبِكَ مِن جَهْدِ الْبَلَاءِ وَ دَرَكِ الشَّقَاءِ وَ سُوْءِ الْقَضَاءِ وَ شَمَاتَةِ الْأَعْدَاءِ
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন জাহদিল বালায়ি ওয়া দারাকিশ শাক্বায়ি ওয়া সুয়িল ক্বাজায়ি ওয়া শামাতাতিল আ’দায়ি।’
اَللَّهُمَّ اكْفِنِىْ بِحَلَالِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَأَغْنِنِىْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মাকফিনি বিহালালিকা ওয়া হারামিকা ওয়া আয়িন্নি বিফাজলিকা আম্মান সেওয়াকা।’
মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ক্ষমা ও মুক্তি লাভে ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি দোয়ার মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য হাসিলের তাওফিক দান করুক এবং আমাদের সবাইকে বেশি বেশি ইবাদাত করার তাওফিক দান করুক। আমিন।