মুফতি আবদুল্লাহ তামিম : বিয়ে জীবনের অনুষঙ্গ। আল্লাহ তাআলাই পৃথিবীতে জোড়া জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, সন্তান সাবালক হলে বিয়ে না করালে সে যে গুনাহগুলোতে জড়াবে আপনিও তার ভাগিদার হবেন।
যার সামর্থ আছে তাকে অবশ্যই বিয়ে করিয়ে দেয়া বাবা-মায়ের কর্তব্য। ইসলামে বিয়ের অনেক নিয়ম নীতি রয়েছে। ইসলামে একইসঙ্গে আপন দুই বোনকে বিয়ের অনুমতি নেই। ইসলামে বিয়ের অনেক নিয়ম নীতি রয়েছে। ইসলামে একই সঙ্গে আপন দুই বোনকে বিয়ের অনুমতি নেই।
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে, ভাতিজীদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে, তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সাথে মিলিত না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং দুই বোনকে একত্র করা(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন কথা। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সুরা নিসা ২৩)
বেশ কয়েকটি নিউজ চোখে পড়েছে, একে একে তিন বোনকে বিয়ে করেছেন বলে ভাইরাল হয়েছে সোহরাব হোসেন নামের এক যুবক। এর আগেও এ ধরণের অনেক নিউজ সামনে এসেছে। ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ রয়েছে দুই বোনকে একসঙ্গে বিয়ে করা। সে জায়গায় তিন আপন বোনকে বিয়ে করা কতটা অজ্ঞতার পরিচায়ক।
কোন স্বামীর অধিনে স্ত্রী থাকা অবস্থায় স্ত্রীর আপন বোনকে বিয়ে করা সম্পূর্ণ হারাম। সে জায়গায় তিন বোনকে বিয়ে করা তো হারামের উপর হারাম। কবিরা গুনাহ। তবে স্ত্রী মারা গেলে কিংবা তালাকপ্রাপ্ত হলে ইদ্দতের পর স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করতে পারবে।
ফতোয়া শামিতে রয়েছে ‘মাহরাম দুজনকে একত্রে এক বিবাহে অথবা তালাকে বায়েনের এক ইদ্দতে আবদ্ধ করা হারাম। এবং একজনকে পুরুষ ধরলে অন্যজনের সাথে বিয়ে শুদ্ধ হয় না এমন কাউকেও বিয়ে করা বা বিবাহে একত্র করা হারাম।’ (ফতোয়া শামি ৩/৩৭)
ফতোয়া হিন্দিয়াতেও কাছাকাছি শব্দে একই হুকুম বর্ণিত হয়েছে, ‘মাহরাম দুজনকে একত্রে বিবাহ করা হারাম। এ ক্ষেত্রে মূলনীতি হল, এবং একজনকে পুরুষ ধরলে অন্যজনের সাথে বিয়ে শুদ্ধ হয় না এমন কাউকেও বিয়ে করা বা বিবাহে একত্র করা হারাম। চাই উভয়ের মাঝে বংশের আত্মীয়তা হোক বা দুগ্ধ সম্পর্কের। উভয়ে একত্রে বিয়ে করা জায়েজ নেই। (ফতোয়া হিন্দিয়া ১/২৭৭)
কেউ স্ত্রীর বোনকে বিয়ে করলে স্ত্রীর বোন দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গণ্যই হবে না। কারণ তা বিয়ে বলেই গণ্য হয় নি। তা বাতিল বিয়ে হিসেবে ধর্তব্য হবে। বরং তা যিনা ব্যাভিচার হিসেবে ধতর্ব্য হবে বিধায় উভয়ের মাঝে কথিত এ বিয়ে ছিন্ন করে দিতে হবে। পরের বিয়েটি ফাসেদ হবে। ফতোয়া হিন্দিয়াতে রয়েছে আলাদা আলাদা আকদে যদি দুই বোনকে বিয়ে করে তাহলে পরের বিয়ে ফাসেদ বলে গণ্য হবে। (ফতোয়া হিন্দিয়া, ১/২৭৭)