ইসলাম ডেস্ক : ইসলাম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান নামাজ আদায়ের জন্য পবিত্রতা জরুরি। পবিত্রতা ছাড়া নামাজ হয় না। পবিত্রতাকে ঈমানের অর্ধেক বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
হজরত আবু মালেক আশআরি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম, হাদিস, ২২৩)
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুমিনগণ, তোমরা যখন নামাজের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন নিজেদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে, মাথা মাসেহ করবে এবং পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধৌত করবে; যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। তোমরা যদি পীড়িত হও, কিংবা পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নিবে। (সূরা মায়িদাহ, আয়াত, ৬)
কেউ অপবিত্র হওয়ার পর কোনো কারণে যদি তাৎক্ষণিক পবিত্র হতে না পারে এবং এই অবস্থায় অন্য কোনো কাজ করে, যেমন অপবিত্র শরীরে কোনো কাপড় ধোওয়ার কাজ করে। তাহলে অপবিত্র অবস্থায় কাপড় ধুলেও তা পবিত্র হয়ে যাবে। কারণ অপবিত্র অবস্থায় মানুষ অপবিত্র বিধানের আওতায় থাকে কিন্তু শরীরের অঙ্গ থাকে না। এজন্য হাত বা যেই কাপড় পরিস্কার করা হচ্ছে তার ওপর স্পষ্ট কোনো অপবিত্রতা না থাকলে তা পবিত্র হয়ে যাবে।
আর কাপড়ে কোনো অপবিত্রতা লেগে থাকলে যদি ধোয়ার সময় তা ভালোভাবে ঢলে ধুলে দূর হয়ে যায় এবং কাপড়ে নাপাকির কোনো চিহ্ন না থাকে তাহলে কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। তবে উত্তম হলো কোনো কারণে শরীর অপবিত্র হয়ে গেলে দেরি না করে তাৎক্ষণিক পবিত্র হয়ে যাওয়া। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩)
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, মদিনার কোনো একপথে একবার নবীজির সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়ে গেল। আমি তখন (জুনুবি অর্থাৎ ফরজ) গোসলের অবস্থায় ছিলাম। আমি নিজেকে নাপাক মনে করে সরে পড়লাম। পরে গোসল করে পুনরায় নবীজির সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে নবীজি জিজ্ঞাসা করলেন-আবু হুরায়রা! কোথায় গিয়েছিলে? আমি বললাম, আমি অপবিত্র অবস্থায় আপনার সঙ্গে বসা সমীচীন মনে করিনি। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘সুবহানাল্লাহ! মুমিন নাপাক থাকতে পারে না।’ (বুখারি, হাদিস, ২৭৯)।
অপবিত্র কাপড় পবিত্র করার নিয়ম হলো- কাপড়ে লাগা অপবিত্র বস্তু দূর করে কাপড়কে তিনবার ধুতে হবে, তিনবারই নিংড়াতে হবে। শেষবার একটু শক্তভাবে নিংড়াতে হবে, যাতে করে পরবর্তীতে আর কোনো পানি বের না হয়। (ফাতাওয়ায়ে হাক্কানিয়া, ২/৫৭৪; জামিউল ফাতাওয়া, ৫/১৬৭)