মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:৩০:৩৫

রাসূল সা. দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, আকাশে মেঘ ছেয়ে গেল এবং অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামল

রাসূল সা. দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, আকাশে মেঘ ছেয়ে গেল এবং অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামল

ইসলাম ডেস্ক : আসমান থেকে নেমে আসা রহমতের বৃষ্টি সৃষ্টিকে নতুন জীবন দান করেন। মৃতপ্রায় জনপদকে সজীব করে তোলে। কোরআনের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টির উপকারিতার কথা বর্ণনা করেছেন।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যখন তা ভারী মেঘমালাকে বয়ে নিয়ে যায়, তখন আমি তাকে কোনো মৃত ভূখন্ডের দিকে চালিয়ে নিয়ে যাই, তারপর সেখানে পানি বর্ষণ করি এবং তা দ্বারা সর্বপ্রকার ফল উৎপন্ন করি। এভাবেই আমি মৃতদেরও জীবিত করে তুলব। হয়তো তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে।’ (সূরা আরাফ, আয়াত : ৫৭)।

অপর এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমি আকাশ থেকে বর্ষণ করি পবিত্র পানি। তা দ্বারা মৃত ভূমিকে সঞ্জীবিত করা এবং আমার সৃষ্ট বহু জীবজন্তু ও মানুষকে তা পান করানোর জন্য।’ (সূরা ফুরকান, আয়াত : ৪৮-৪৯)

পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন সময় আল্লাহ তায়ালা বৃষ্টি বন্ধ রেখেছিলেন। অনাবৃষ্টির মাধ্যমে মানুষকে পাপাচার থেকে মুক্ত থাকার সর্তকবার্তা দিয়েছেন। তখন সেই যুগের নবীরা সবাইকে নিয়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। এই তালিকায় হজরত নূহ, মুসা ও সুলাইমান আ.-এর কওমের নাম পাওয়া যায় কোরআন-হাদিসের বিভিন্ন উদ্ধৃতির আলোকে।

যেমন নূহ আ.-এর কওমের ক্রমাগত আল্লাহর নাফরমানির শাস্তিস্বরূপ যখন আল্লাহ বৃষ্টি বন্ধ করে দিলেন, তখন নূহ আ. তাদের বৃষ্টি প্রার্থনার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়ে বললেন, 

‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে গুনাহ ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি মহা ক্ষমাশীল। তখন তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।’ (তাফসিরে কুরতুবি, সূরা নুহ, আয়াত : ১০-১১) 

বনি ইসরাইল যখন পানিসংকটে পড়ল, তখন মুসা আ. আল্লাহর কাছে পানির জন্য প্রার্থনা করলেন। 

পবিত্র কোরআনে তা এভাবে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর যখন মুসা তার জাতির জন্য পানি প্রার্থনা করল, তখন আমি বললাম, তোমার লাঠি দিয়ে পাথরটিকে আঘাত করো। তখনই সে পাথর থেকে ১২টি পানির ধারা জারি হয়ে গেল।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ৬০)

একইভাবে একদিন সুলায়মান আ. লোকজন নিয়ে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করার জন্য বের হলেন। তখন তিনি দেখলেন, একটি পিঁপড়া চিৎ হয়ে শুয়ে দোয়া করছে, 

‘হে আল্লাহ, আমি তোমার অন্যতম মাখলুক। তোমার বৃষ্টি ও রিজিকের আমার খুব প্রয়োজন। সুতরাং হয় বৃষ্টি বর্ষণ করুন, নয়তো আমাকে মৃত্যু দান করুন।’ 

এটা শুনে সুলায়মান আ. লোকজনকে বললেন, ‘ফিরে যাও। অন্য মাখলুকের দোয়ার বরকতে বৃষ্টি বর্ষিত হবে।’ (দারাকুতনি, ইবনে আসাকির) 

এই ধারাবাহিকতায় আমাদের নবী মুহাম্মদ সা. ও তাঁর সাহাবিগণ প্রয়োজনের সময় আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছিলেন।

আনাস রা. থেকে বর্ণিত, জুমার দিন রাসূল সা. খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে বললেন, ‘ (অনাবৃষ্টির কারণে) মাল-সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জীবিকার পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব আল্লাহর কাছে দোয়া করুন যেন তিনি আমাদের বৃষ্টি দান করেন। 

রাসূল সা. দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ, আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদের বৃষ্টি দান করুন।’ আনাস রা. বলেন, দোয়ার পরপরই আকাশে মেঘ ছেয়ে গেল এবং অঝোর ধারায় বৃষ্টি নামল। (বুখারি ও মুসলিম) 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে