সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ১০:০৭:১৫

জান্নাত হারাম হয়ে যাবে যে গুনাহ করলে!

জান্নাত হারাম হয়ে যাবে যে গুনাহ করলে!

ইসলাম ডেস্ক : মানুষ যত গুনাহই করুক না কেন, আল্লাহ তাআলা যদি চান, ক্ষমা করে দিতে পারেন। তাঁর রহমতের দরজা সব সময় খোলা। পবিত্র কোরআনে তিনি ঘোষণা করেছেন, ‘হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের প্রতি জুলুম করেছ, তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয় আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা জুমার: ৫৩)

তবে এমন একটি গুনাহ আছে, যা আল্লাহ তাআলা সাধারণত ক্ষমা করেন না। সেই গুনাহের ব্যাপারে তিনি কোরআনে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। এমনকি বলেছেন, এই গুনাহ যার মধ্যে থাকবে, জান্নাত তার জন্য হারাম হয়ে যাবে। সেই ভয়ানক গুনাহ কেউ করলে, চিরতরে জাহান্নামের যোগ্য হয়ে যাবে।

সেই গুনাহটির নাম—শিরক। অর্থাৎ, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে অংশীদার বা সমকক্ষ বানানো। এটি এমন এক অন্যায়, যা আল্লাহর একত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বে হস্তক্ষেপ করার শামিল। 

কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করাকে ক্ষমা করবেন না। তিনি এর নিচে যা আছে, তা যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করবেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার করে, সে মহাপাপ করেছে।’ (সুরা নিসা: ৪৮)

শিরক কী
শিরক হলো আল্লাহর সত্তা, গুণাবলী বা কার্যকলাপে কাউকে অংশীদার বানানো। কখনো জেনে, কখনো না জেনে মানুষ এই গুনাহ করে ফেলে। কেউ আল্লাহর বদলে অন্য কিছুর ওপর নির্ভর করলে, কারও প্রতি অতিরিক্ত ভয় বা সম্মান দেখিয়ে আল্লাহর অধিকার লঙ্ঘিত হলে তাও শিরকের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

শিরক থেকে তাওবা করলে?
কোনো ব্যক্তি অজ্ঞতাবশত শিরক করলে সরাসরি তাকে মুশরিক বলা হয় না। তবে শর্ত হলো, জানতে পারার পরই তাকে তাওবা করতে হবে। আন্তরিক অনুতাপে তাওবা করলে আল্লাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন।

আল্লাহ বলেন, ‘তবে কি তারা আল্লাহর কাছে তাওবা করবে না, তাঁর কাছে ক্ষমা চাইবে না? আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা মায়েদা: ৭৪)

জান্নাত হারাম হয়ে যায়
যদি কেউ জানার পরও শিরকে লিপ্ত থাকে এবং তাওবা না করে মৃত্যুবরণ করে, তার জন্য জান্নাত চিরতরে হারাম হয়ে যাবে। কোরআনের ভাষায়- ‘নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার বাসস্থান জাহান্নাম। আর জালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।’ (সুরা মায়েদা: ৭২)

নবীজির দোয়া: অজানা শিরক থেকেও বাঁচুন
নবী (স.) তাঁর সাহাবিদের অজানা শিরক থেকেও বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতে শিখিয়েছেন। দোয়াটি করতে হবে এভাবে— اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا أَعْلَمُ 

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযু বিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ’লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আ’লামু।’

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি জেনে-শুনে শিরক করার হাত থেকে আপনার আশ্রয় চাই এবং অজান্তে যদি কিছু হয়ে থাকে, তার জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাই।’ (আদাবুল মুফরাদ: ৫৫১)

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে শিরক থেকে হেফাজত করুন। তাওহিদের ওপর দৃঢ়ভাবে অটল রাখুন। অজান্তে কোনো গুনাহ হলে তা জানার সঙ্গে সঙ্গে তাওবার তাওফিক দিন। আমিন।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে