রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৩:৩২

চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীর ক্ষতি নিয়ে কী বলছে হাদিস?

চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীর ক্ষতি নিয়ে কী বলছে হাদিস?

ইসলাম ডেস্ক : রাতেই শুরু হচ্ছে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। এ চন্দ্রগ্রহণে রক্তলাল হয়ে উঠবে চাঁদ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে দেখা যাবে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, আকাশ মেঘমুক্ত থাকলে বাংলাদেশ থেকেও এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞানীদের মতে, একই সরলরেখায় সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে পৃথিবী এলে চন্দ্রগ্রহণ ঘটে। এ সময় সূর্যের আলো পৃথিবীর ছায়ায় আটকে যায়, ফলে চাঁদ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে যে, চন্দ্রগ্রহণ গর্ভবতী নারীর জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু ইসলাম এ ধারণা সমর্থন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর দুটি নিদর্শন। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। যখন এটি দেখবে, তখন দোয়া করবে, আল্লাহর মহত্ব ঘোষণা করবে, তাকবির বলবে, নামাজ আদায় করবে এবং সদকা করবে। (বোখারি : ১০৪০, আবু দাউদ : ১১৭৭)

অতএব, চন্দ্রগ্রহণ কোনো অশুভ বা অকল্যাণের নিদর্শন নয়; বরং আল্লাহর সামনে সিজদাহ ও দোয়ার সময়।

নাসা, আমেরিকান প্রেগন্যান্সি অ্যাসোসিয়েশন ও মায়ো ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, চন্দ্রগ্রহণের সময় কোনো ক্ষতিকর রশ্মি উৎপন্ন হয় না। তাই গর্ভবতী নারী বা গর্ভস্থ শিশুর জন্য চন্দ্রগ্রহণ কোনো ঝুঁকি তৈরি করে না।

শিশুর বিকলাঙ্গতা বা জন্মদোষের সঙ্গে চন্দ্রগ্রহণের কোনো সম্পর্ক নেই। এগুলো সাধারণত জেনেটিক কারণ, পুষ্টিহীনতা, সংক্রমণ বা হরমোনজনিত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে।

আল্লাহ সূর্যকে কিরণোজ্জ্বল করেছেন ও চাঁদকে স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত করেছেন। (সুরা ইউনুস : ৫), যখন দৃষ্টি চমকে যাবে, চাঁদ জ্যোতিহীন হয়ে যাবে, তখন সূর্য ও চাঁদকে একত্রিত করা হবে। (সুরা কিয়ামাহ : ৭-৯)

. চন্দ্র জ্যোতিহীন হয়ে পড়া আসলে চন্দ্রগ্রহণকেই নির্দেশ করে।

. চন্দ্রগ্রহণের নামাজ (সালাতুল খুসুফ)

. হাদিসে চন্দ্রগ্রহণের সময় নামাজ আদায় করার সুন্নত প্রমাণিত হয়েছে।

. একাকী নামাজ পড়া সুন্নত, জামাতে নয়।

. নামাজ দুই রাকাত, তবে ইচ্ছা করলে চার রাকাত বা তার বেশি পড়া যায়।

. আজান বা একামত নেই।

. নামাজ শেষে চন্দ্রগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিকির, দোয়া ও মোনাজাতে সময় কাটানো উত্তম।

উল্লেখ্য, চন্দ্রগ্রহণ কোনো অশুভ ঘটনা নয়। ইসলাম এটি আল্লাহর নিদর্শন হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে এবং ইবাদতের প্রতি উৎসাহ দিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানও বলে, গর্ভবতী নারীর জন্য এতে কোনো ঝুঁকি নেই। বরং এ সময় বেশি করে দোয়া, জিকির ও নফল নামাজ আদায় করাই মুসলমানদের জন্য উত্তম আমল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে