বুধবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৫, ১০:১২:১২

কোরআনের বাণী মানুষের হৃদয় বদলে দেয়: নোমান আলী খান

কোরআনের বাণী মানুষের হৃদয় বদলে দেয়: নোমান আলী খান

ইসলাম ডেস্ক : আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামি আলোচক নোমান আলী খান এক বক্তব্যে অবিশ্বাসী ও বিশ্বাসী মুমিনের চিন্তার পার্থক্য এবং মানুষের অন্তরে কোরআন ও ইসলামি শিক্ষার প্রভাব নিয়ে কথা বলেছেন। ২৯ আগস্ট ২০২৫ নিজের ভেরিভায়েড ইউটিউব চ্যানেলে `Destroy the False God Within You' শিরোনামে ওই বক্তব্যের ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। এমটিনিউজ২৪.কম পাঠকদের জন্য তার বক্তব্যের সারাংশ তুলে ধরছি।

নোমান আলী খান বলেন:
আপনি আপনার চারপাশে যা কিছু দেখছেন সবই আল্লাহর সৃষ্টি ও নেয়ামত। কিছুই আপনার নিজের নয়, এমন কি আপনিও আপনার নিজের নন। আপনি আপনার নিজেরও মালিক নন। এটা এক বৈপ্লবিক বিশ্বাস।

আধুনিক অবিশ্বাসী মানুষ দাবি করে, ‘আমিই আমার ওপর কর্তৃত্ববান’। আমার পছন্দ, আমার স্বাধীনতা, আমার অনুভূতিই আমার জীবন নির্ধারণ করবে। প্রাচীন ফেরাউন বলত, ‘আমিই তোমাদের প্রভু’। আজকের যুগে প্রত্যেকে বলে, ‘আমাদের কোনো ফেরাউনের প্রয়োজন নেই, আমরা প্রত্যেকে নিজেরাই নিজেদের প্রভু হতে পারি। ইসলাম এই দাবি সমর্থন করে না। একজন মুসলমান কখনও নিজেকে নিজের প্রভু মনে করে না।

অমুসলিম ঐতিহাসিকরা ইসলামিক বিপ্লবকে শুধুমাত্র সামরিক বা রাজনৈতিক আন্দোলন হিসেবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা বুঝতে পারেন না যে, এটা ছিল প্রথমত মানুষের হৃদয়ের ভেতরের জগতের একটি রূপান্তর। তারপর আপনি এটিকে রাজনৈতিক বিপ্লব, অর্থনৈতিক বিপ্লব, সামাজিক বিপ্লব, আইনগত বিপ্লব বা অন্য কোন ধরনের বিপ্লব বলতে পারেন।

কোরআনের বাণী মানুষের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করে। মানুষের হৃদয় বদলে দেয়। মানুষের মূল্যবোধ বদলে দেয়। ফলে তারা এমন কথা বলতে শুরু করে যা অন্য কেউ বলে না। তাদের সাফল্যের সংজ্ঞা বদলে যায়। সম্মানের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। তারা বলে, ‘মানুষ কী বলবে তা নিয়ে আমার ভয় নেই, আমার ভয়ের জন্য অন্য কিছু আছে’।

সমাজের বিপ্লব তখনই আসে যখন আপনি অন্যদের থেকে আলাদা হওয়ার সাহস রাখবেন। সত্যিকার মুমিন শুধু আলাদা হওয়ার জন্য আলাদা হয় না, তাদের সুদৃঢ় নীতির জন্য আলাদা হয়।

প্রতিটি বিপ্লবের জন্য একটি ম্যানিফেস্টো বা ইশতেহার প্রয়োজন হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের একজন আইকন দিয়েছেন, তিনি মোহাম্মাদ (সা.), একটি ম্যানিফেস্টো দিয়েছেন, সেটি কোরআন।

মানুষ যত বেশি কোরআনের সাথে যুক্ত হয়, তত বেশি তারা ভেতর থেকে বদলে যায়। তত বেশি তারা উপলব্ধি করে, ‘আমি ভুল কিছুকে ভয় পাচ্ছিলাম’। ‘আমি ভুল কিছুর পেছনে ছুটছিলাম’। ‘আমি ভুল কিছুর প্রতি মোহগ্রস্ত ছিলাম’। ‘আমি ভুল কিছুর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিলাম’।

কোরআনের শিক্ষা আমাদের ভেতরের মিথ্যা উপাস্যকে চিনতে এবং ধ্বংস করতে শেখায়। সেই অহংকার ও ভয়কে জয় করতে শেখায় যা আমাদের সত্যিকার স্রষ্টা থেকে দূরে রাখে। এটি একটি গভীর আধ্যাত্মিক বিপ্লবের সূচনা করে, যা প্রথমে হৃদয়ে শুরু হয় এবং পরবর্তীতে পুরো জীবন ও সমাজ বদলে করে।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে