রবিবার, ২২ মে, ২০১৬, ০৪:৪০:২৯

শবে বরাত : করণীয়-বর্জনীয়

শবে বরাত : করণীয়-বর্জনীয়

ইসলাম ডেস্ক: ১৪ শাবান দিবাগত রাত উপমহাদেশে শবে বরাত হিসেবে পরিচিত। ফার্সি ‘শব’ অর্থ রাত আর ‘বরাত’ অর্থ ভাগ্য। সুতরাং ‘শবে বরাত’ অর্থ ‘ভাগ্য রজনী’। হাদিসের পরিভাষায় ১৪ শাবান দিবাগত রাতকে শবে বরাত বলা হয়। এ রাতের ফজিলত সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। সুন্নাহর সঠিক জ্ঞান না থাকায় এ রাতে অনেকেই ধর্মের নামে ধর্মবহির্ভূত কাজ করে থাকে। ফলে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। তাই শরিয়তের মানদ-ে শবে বরাত পালনে করণীয় ও বর্জণীয় সম্পর্কে জানাচ্ছেন দেশ বরেণ্য আলেমরা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আল ফাতাহ মামুন

মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ
ইমাম, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ

হাদিসের পরিভাষায় মধ্য শাবানের রাত খুবই তাৎপর্যময় একটি রাত। এ রাতের ফজিলত অনেক। রাসুল সা. এ রাতে কবর জিয়ারত করেছেন। ইবনে মাজাহ শরিফে আয়শা রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল সা. এ রাতে কবর জিয়ারত করেছেন। হজরত আলী রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে জানা যায়, এ রাতে বিপুল সংখ্যক বান্দাকে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দেন। আমাদের করণীয় হলো এ মোবারক রাতটি নফল ইবাদত, কুরআন তেলাওয়াত ও কবর জিয়াতের মাধ্যমে অতিবাহিত করা।

মুফতি ড. সাইয়্যেদ এনায়েতুল্লাাহ আব্বাসী
পীর সাহেব, আব্বাসী মঞ্জিল, জৌনপুর দরবার শরীফ

শবেরাতের ফজিলত সম্পর্কে হাদিসের কিতাবগুলোতে একাধিক সহিহ হাদিস রয়েছে। মুয়াজ ইবনে জাবাল রা. থেকে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেছেন, ‘মধ্য শাবানের রাতে আল্লাহ তায়ালা অবতীর্ণ হন। মুশরিক এবং বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতিত সবাইকে ক্ষমা করে দেন।’ এ হাদিসটি শাব্দিক ব্যতিক্রমে মোট আটটি সনদে বর্ণিত হয়েছে। প্রখ্যাত হাদিস আলোচক আল্লামা হাইসামি রহ. বলেন, ‘ইমাম তাবারানি এই হাদিসটি তার মুজামুল কাবির ও আওসাতে উদ্ধৃত করেন। এ হাদিসের প্রত্যেক রাবি নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত।’ সুতরাং এ রাতে আল্লাহর ক্ষমা অনুসন্ধান করা প্রতিটি মুসলিমের জন্য জরুরি।

মাওলানা জাফর আহমদ মজুমদার
শিক্ষক, আল জামেয়াতুল আরাবিয়া, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

হজরত আলী রা. থেকে বর্ণিত হাদিসে ১৪ শাবান রাতে নামাজ ও দিনে রোজা রাখার কথা বর্ণিত হয়েছে। তবে মুহাদ্দিসরা হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। অপর দিকে সহি হাদিসের আলোকে প্রতি মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখা সুস্পষ্ট সুন্নাত। একইভাবে শাবান মাসের পুরো সময়ও রোজা রাখা সুন্নাত। তাই সম্ভব হলে শাবানের বাকি দিনগুলো রোজা রাখব। নতুবা ‘আইয়ামে বিজে’র তিন দিন রোজা রাখব। এসব না পারলে রমজানের প্রস্তুতি হিসেবে মধ্য শাবানে রোজা রাখব। এতে অসুবিধার কিছু নেই।

মাওলানা শাহ্ মোঃ শফিকুর রহমান
খতিব, আমলীগোলা জামে মসজিদ, লালবাগ, ঢাকা

ইবাদাতের রাত শবে বরাত এখন আমাদের মাঝে উৎসবের রাতে পরিণত হয়েছে। ইবাদাতের চেয়ে আনন্দ-উল্লাস আমাদের কাছে মুখ্য হয়ে ওঠেছে। এ রাতে রাসুল সা. ব্যক্তিগতভাবে নফল ইবাদাত ও কবর জিয়ারত করেছেন বলে হাদিসে পাওয়া যায়। আমাদেরও উচিত বেশি হৈ হুল্লোর না করে ব্যক্তিগত পর্যায়ে ইবাদত-বন্দেগি করা। শবে বরাত উপলক্ষে অহেতুক আলোক সজ্জা করা, হালুয়া-রুটি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া, আতশবাজী ফোটানো এগুলো কোনোটিই শরিয়ত সমর্থিত নয়। ইসলামের দৃষ্টিতে এসবই গর্হিত কাজ। সুতরাং এ ধরনের প্রচলিত রুসমগুলো আমাদের অবশ্যই বর্জন করতে হবে। তবেই এ রাতের ফজিলত আমরা অর্জন করতে পারব।- আমাদের সময়.কম
২২ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে