শনিবার, ০৪ জুন, ২০১৬, ০২:১৬:২৬

রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের জন্য ১৫০ কোটি মুসলমানের প্রস্তুতি শুরু

রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের জন্য ১৫০ কোটি মুসলমানের প্রস্তুতি শুরু

ইসলাম ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের দ্বারে কড়া নাড়ছে পবিত্র মাহে রমজান। রমজান মাসের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করছে রোজা কবে শুরু হবে। তবে আগামী সোমবার অথবা মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে বাংলাদেশে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। ইতোমধ্যেই বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলমান রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এই মাস পালনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।

এ মাসে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অফুরন্ত করুণা লাভের জন্য ইবাদত বন্দেগিতে নিজেদের সঁপে দিবেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।

রজমান মাসে মুসলমানদের জীবনধারায় ব্যাপক পরিবর্তন আসে। খাদ্যাভাস থেকে ঘুম, কথা বলা থেকে পথচলা প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রভাব ফলে সংযমের এ মাস।

রমজান পালনের জন্য বিশ্বের অন্যতম মুসলিম প্রধান বাংলাদেশের মানুষও প্রস্তুতি গ্রহণ  করেছেন। তবে দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে রমজান মাস আসার আগে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হয় দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক এবং অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি।

মধ্যবিত্ত থেকে নিম্ন আয়ের- সব সব মানুষই এই লাগামহীন পণ্যমূল্য নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েন। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ইতোমধ্যেই  নিত্যপ্রয়োজনীয় বহু পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। কয়েকদিন আগে যে ছোলা ছিল ৬৫-৭০ টাকা/কেজি তা এখন একশ টাকার কমে মিলছে না। চিনি, কাঁচামরিচ, মাছ-মাংসহ বহু পণ্যের দামই বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে।

অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, সরকার এ নিয়ে ব্যবসায়ীদের কিছু উপদেশ দিলেও মাঠ পর্যায়ে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো পদক্ষেন নেয় না। এবারই হয়তো তাই হবে।

তবে অতিলোভী ব্যবসায়ীদের এই মুনাফাবৃত্তিকে মেনে নিয়ে বাংলাদেশে মানুষ পবিত্র রহমান পালন করবেন এবং সাধ্যানুযায়ী ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করবেন।

দিনের বেলা পানাহার থেকে বিরত থাকা ছাড়াও জাগতিক মোহ, কাম, ক্রোধ, লোভ-লালসা দমন করে আত্মশুদ্ধির সাধনা চলবে পুরো রমজান মাসে। রোজা রাখার পাশাপাশি সাধ্যমতো দান-খয়রাত ও বেশি বেশি নফল ইবাদতের মধ্য দিয়ে ইসলামে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এই মাসের দিনগুলো অতিবাহিত করবেন মুসল্লিরা।

রহমত ও বরকতের দিক দিয়ে রমজান মাস বছরের অন্য ১১ মাস থেকে ভিন্ন। এ সম্পর্কে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, রমজান মাসের প্রথমাংশে রহমত, দ্বিতীয়াংশে মাগফিরাত অর্থাৎ ক্ষমা আর তৃতীয়াংশে নাজাত তথা দোজখ থেকে মুক্তি।

আখেরি নবীর মদিনায় হিজরত করে যাওয়ার দ্বিতীয় বছরে রমজানের সিয়াম পালনের বিধান নিয়ে নাজিল হয় কুরআন মজিদের সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে। ঘোষণা করা হয়, হে মুমিনরা, তোমাদের প্রতি সিয়াম পালন আবশ্যিক করা হলো যেমন তা আবশ্যিক করা হয়েছিল তোমাদের আগে যারা ছিল তাদের প্রতি, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।

পবিত্র এ মাসে যে ব্যক্তি কোনো নেক কাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করবে, তার জন্য থাকবে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায়ের সমান প্রতিদান। আর যে ব্যক্তি এতে একটি ফরজ আদায় করবে, তার জন্য থাকবে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায়ের সমান প্রতিদান। যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য রয়েছে গুনাহ মাফ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি এবং রোজাদারের মতোই তাকে প্রতিদান দেয়া হবে। কিন্তু রোজাদারের প্রতিদান কমানো হবে না।

নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে যে ব্যক্তি সিয়াম আদায় করবে, তার পূর্বেকার পাপগুলো ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারি ও মুসলিম শরীফ)।

তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, রমজান মাস শুরু হলে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেয়া হয়; সারা মাস তা আর বন্ধ করা হয় না। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়; সারা মাস তা আর খোলা হয় না। আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, হে কল্যাণ অন্বেষণকারী, তুমি অগ্রসর হও। আর হে অকল্যাণ অন্বেষণকারী, তুমি নিবৃত্ত হও।
৪ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে