বৃহস্পতিবার, ১৬ জুন, ২০১৬, ১০:৫১:১২

সাদাকাতুল ফিতর-এর সঠিক দৃষ্টিকোন

সাদাকাতুল ফিতর-এর সঠিক দৃষ্টিকোন

মুনিরুল ইসলাম মাহ্দী :

ফিত্রার পরিচয় :
রমযান মাসের সিয়ামের ত্রুটি বিচ্যুতির ক্ষতি পূরণার্থে এবং অভাবগ্রস্তদের খাবার প্রদানের উদ্দেশ্যে ঈদের সালাতের পূর্বে নির্ধারিত পরিমাণের যে খাদ্যসামগ্রী অভাবীদের দান করা হয়ে থাকে- শরীয়াতের পরিভাষায় তাকেই যাকাতুল ফিত্র বা সাদাকাতুল ফিতর অথবা ফিত্রা বলা হয়ে থাকে।

হাদীস :
 ابن عباس رضي الله عنهما: (فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنْ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ) أبو داود)

ফিত্রার হুকুম, কার উপর ফিতরা ওয়াজিব ও এর হকদারের বর্ণনা

ইসলামী শরী‘য়াতে প্রত্যেক মুসলিম নারী-পুরুষ, ছোট-বড়, স্বাধীন-পরাধীন, ধনী-গরীব সকলের উপর ফিত্রা দেয়া ওয়াজিব। যাকাত প্রদানের আটটি খাতে ফিতরা প্রদান করা যাবে। আর এই আট শ্রেণীই ফিতরার প্রকৃত হকদার।

فرض رسولُ الله صلى الله عليه وسلم زكاة الفطر صاعًا من تمر أو صاعًا من شعير على العبد والحر والذكر والأنثى والصغير والكبير من المسلمين وأمر بها أن تؤدى قبل خروج الناس إلى الصلاة

অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনে ‘উমার রা. বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সা. স্বাধীন, কৃতদাস, নারী, পুরুষ, ছোট, বড় প্রত্যেক মুসলিমের প্রতি রমযানের সিয়ামের কারণে এক সা‘য়া খেজুর বা এক সা‘য়া যব ফিত্রা হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন এবং তা ঈদের সালাত আদায় করার পূর্বেই ফিত্রা দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারী ও মুসলিম)

فِيْ زَكَاةِ الْفِطْرِ عَلَى كُلِّ حَرٍّ وَعَبْدٍ ذَكَرٍ وَأُنْثَى صَغِيْرٍ أَوْ كَبِيْرٍ فَقِيْرٍ أَوْ غَنِىٍّ صَاعًا مِنْ تَمَرٍ

অর্থাৎ হযরত আবু হোরায়রা রা. থেকে বর্ণিত আছে যে, প্রত্যেক স্বাধীন, পরাধীন, নারী, পুরুষ ছোট, বড়, ফকীর-ধনী, প্রত্যেকের উপর জনপ্রতি এক সা‘আ পরিমাণ খেজুর ফিত্রা হিসেবে দান করা ওয়াজিব। (মুসনাদে আহমাদ)

ফিত্রা প্রদানের মাধ্যম ও পরিমাণের তারতম্যতা

সাদাকায়ে ফিতরের আদায়ের মাধ্যম ও পরিমাণ কত? এর জবাবের জন্য এ সংক্রান্ত হাদীসগুলো পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। বিভিন্ন হাদীসে পাঁচ প্রকার খাদ্যের বর্ণনা পাওয়া যায়। যেমন: যব, খেজুর, পণির, কিসমিস ও গম। এই পাঁচ প্রকারের মধ্যে রাসূল সা. এর যুগে প্রাচুর্য্যতা ও সহজলভ্যতা বিবেচনায় পরিমাপের মধ্যে কিছুটা তারতম্য বিদ্যমান ছিল। যেমন- যব, খেজুর, পণির ও কিসমিস দ্বারা ফিতরা প্রদান করলে প্রত্যেকের জন্য নির্ধারণ ছিল- ‘এক সা’ পরিমাণ। পক্ষান্তরে ‘গম’ দ্বারা আদায় করতে চাইলে, প্রত্যোকের জন্য নির্ধারণ ছিল- ‘অর্ধ সা’ পরিমাণ।

এ পার্থক্যের কারণ ছিল তখনকার যুগে ‘গম’ সহজলভ্য ছিলনা। এর ফলন ছিল খুবই কম। যার ফলে এটি ছিল দুস্প্রাপ্য। হাদীসে বর্ণিত এই পাঁচটি দ্রব্যের যে কোন একটি  দ্বারা ফিতরা আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে, যেন মুসলিমগণ নিজ নিজ সামর্থ্য ও সুবিধা অনুযায়ী এর যে কোন একটি দ্বারা, তা আদায় করতে পারে।

এখন প্রশ্ন হলো সব শ্রেণীর লোক যদি সবচেয়ে নি¤œ মানের  দ্রব্য দিয়েই নিয়মিত সদকায়ে ফিতর আদায় করে, তবে হাদীসে বর্ণিত অন্য চারটি দ্রব্যের হিসেবে ফিতরা আদায়ের ওপর আমল করবে কে?
আসলে এ ক্ষেত্রে হওয়া উচিত ছিল এমন যে, যে ব্যক্তি উন্নত মানের খেজুর দ্বারা সদকা আদায়ের  সামর্থ রাখে সে তা দিয়েই করবে। যার সামর্থ এর চেয়ে কম মূল্য মানের দ্রব্য দিয়ে আদায়ের, সে তাই করবে। আর যার সামর্থ্য রয়েছে কিসমিস দিয়ে, সে কিসমিস দিয়েই ফিতরা আদায় করবে।রাসূল সা. এর সাহাবী ও তাবেঈগণের যুগে এমন আমলই লক্ষ্য করা যায়। হযরত ওমার রা. সর্বদা খেজুর দ্বারাই ফিতরা আদায় করতেন। তিনি একবার কেবল ‘যব’ দ্বারা আদায় করেছেন। (আল ইসতিযকার, খ-:৩, পৃষ্ঠা:৩৫৪, হাদীস নং: ৫৯০) এবার আসুন হাদীসগুলো দেখি:
قال أبو سعيد الخدري رضي الله عنه: كنا نخرج يوم الفطر في عهد النبي صلى الله عليه وسلم صاعًا من طعامنا؛ الشعير والزبيب والأقط والتمر )واه البخاري(
অর্থাৎ হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রা. এরশাদ করেন। আমরা রাসূল সা. এর যুগে ঈদুল ফিতরের দিন ফিত্রা প্রদান করতাম এক সা‘য়া পরিমাণ খাদ্য বা এক সা‘য়া যব বা এক সা‘য়া কিসমিস বা এক সা‘য়া পনির বা এক সা‘য়া খেজুর। (সহীহ বুখারী, তিরমিযি, আবু দাউদ, দারেমী, নাসাঈ)

فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هَذِهِ الصَّدَقَةَ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ شَعِيرٍ أَوْ نِصْفَ صَاعٍ مِنْ قَمْحٍ عَلَى كُلِّ حُرٍّ أَوْ مَمْلُوكٍ ذَكَرٍ أَوْ أُنْثَى صَغِيرٍ أَوْ كَبِيرٍ
একদা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রমযানের শেষের দিকে বসরার কোন এক মসজিদের মিম্বারের উপর খুতবা দানকালে বলেন: রাসূল সা. সাদাকাতুল ফিতর অপরিহার্য করেছেন ‘এক সা’ খেজুর কিংবা যব, ‘অর্ধ সা’ গম; প্রত্যেক গোলাম স্বাধীন,নারী-পুরুষ ও ছোট বড় প্রত্যেকের উপর। (আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ)

كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ تَمَرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ أقط أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيْبٍ  (متفق عليه)
অর্থাৎ হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রা. বলেন। আমরা ফিত্রা দিতাম মাথাপিছু এক সা‘য়া পরিমাণ খাদ্য বা এক সা‘য়া যব বা এক সা‘য়া খেজুর বা এক সা‘য়া পনির বা এক সা‘য়া কিসমিস। (বুখারী ও মুসলিম)

সুনানে নাসাঈর অন্য বর্ণনায় এসেছে:  
صَدَقَةُ الْفِطْرِ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ
অর্থৎ ফিত্রা হচ্ছে ‘এক সা’ পরিমাণ খাদ্যবস্তু। (সুনানে নাসাঈ)

সাদাকাতুল ফিতরের হাদীসগুলো পর্যালোচনা করলে এ কথা স্পষ্ট প্রতীয়মাণ হয় যে, কেবল একটি মাত্র জিনিসকে এর মানদ- নির্ণয় করলে চলবে না। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত সকলের একই হারে সাদাকা হওয়াও বাঞ্চনীয় নয়। উচ্চবিত্ত কিসমিস আর মধ্যবিত্ত খেজুর এবং নিন্মমধ্যবিত্ত গম অথবা যব কে মানদ- ধরে সাদাকাতুল ফিতর আদায় করলে গরীবদের স্বার্থ রক্ষা হবে বলে বিজ্ঞজন মনে করেন।  

সাদাকাতুল ফিতর এক সা-এর পরিবর্তে অর্ধ সা-এ পরিবর্তিত হওয়ার ইতিহাস
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ كُنَّا نُخْرِجُ إِذْ كَانَ فِينَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ عَنْ كُلِّ صَغِيرٍ وَكَبِيرٍ حُرٍّ أَوْ مَمْلُوكٍ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ أَوْ صَاعًا مِنْ أَقِطٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ زَبِيبٍ فَلَمْ نَزَلْ نُخْرِجُهُ حَتَّى قَدِمَ مُعَاوِيَةُ حَاجًّا أَوْ مُعْتَمِرًا فَكَلَّمَ النَّاسَ عَلَى الْمِنْبَرِ فَكَانَ فِيمَا كَلَّمَ بِهِ النَّاسَ أَنْ قَالَ إِنِّي أَرَى أَنَّ مُدَّيْنِ مِنْ سَمْرَاءِ الشَّامِ تَعْدِلُ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ فَأَخَذَ النَّاسُ بِذَلِكَ ‏.‏ فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَأَمَّا أَنَا فَلاَ أَزَالُ أُخْرِجُهُ أَبَدًا مَا عِشْتُ ‏.‏

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রা. বর্ণনা করেন। আমরা রাসূল সা. এর যুগে ঈদুল ফিতরের দিন ফিত্রা প্রদান করতাম এক সা‘য়া পরিমাণ খাদ্য বা এক সা‘য়া যব বা এক সা‘য়া কিসমিস বা এক সা‘য়া পনির বা এক সা‘য়া খেজুর। আর এ পদ্ধতি আমিরে মুয়াবিয়ার রা. শাসনামল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। একদা তিনি হজ্ব অথবা ওমরার মৌসুমে মিম্বরে দাড়িয়ে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে একটি খুতবা পেশ করেন। তিনি তার খুতবায় বলেন, আমি মনে করি সিরীয় জাতের দুই মুদ্দ (অর্ধ সা) গম, এক সা পরিমাণ খেজুরের সমান। এরপর থেকে লোকেরা তার এ মতকে (দু’ সা-এর পরিবর্তে অর্ধ সা) গ্রহণ করল।
আবু সাঈদ রা. বলেন, কিন্তু আমি যতদিন জীবিত আছি, আগে যে নিয়মে এক সা পরিমাণ সাদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম বর্তমানেও আগের পদ্ধতি অব্যাহত রাখব। (বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ)

قال عبد الله بن عمر رضي لله عنه :" فجعل الناس عدلَه مُدَّين من حنطة: "وأشار بن عمر بقوله: الناس, إلى معاوية ومن تبعه )الحافظ العسقلاني
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমার রা. বলেন, অতঃপর লোকজন গমের ক্ষেত্রে এক সা-এর পরিবর্তে দু’মুদ্দ (অর্ধ সা) নির্ধারণ করলেন। ইবনে হাজার আসকালানী র. ফাতহুল বারীতে উল্লেখ করেন, ইবনে ওমার রা. এখানে লোকজন দ্বারা ইঙ্গিত করেন যে, এরা ছিলেন হযরত মুয়াবিয়া রা. ও তার অনুসারীগণ। (ইবনু হাজার আসকালানী, ফাতহুল বারী)

সাহাবীগণের যুগে ‘অর্ধ সা’ গমের মূল্য ‘এক সা’ খেজুরের সমপরিমাণ ছিল। নবী সা. এর যুগে মদিনাতে খেজুরের ফলন খুব একটা ছিলনা। পরবর্তীতে হযরত মুয়াবিয়া রা. এর যুগে ফলন বৃদ্ধি পেলেও মূল্য ছিল খুবই বেশি। একাধিক বর্ণনায় এসেছে যে, ‘অর্ধ সা’ গমের মূল ‘এক সা’ খেজুরের সমপরিমাণ ছিল।
হযরত মুয়াবিয়া রা. এর যুগে গমের ফলন বৃদ্ধি পেলে ‘অর্ধ সা’ গমকে সদকায়ে ফিতরের অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের ‘এক সা’ এর  মত গণ্য করা হতো। (আবু দাউদ, খ-:২)

‘এক সা’ ‘অর্ধ সা’ ও ‘মুদ্দ’-এর ব্যাখ্যা
রাসূল সা. এর বর্ণিত ‘সা’ মূলত কোন ওজন পমিাপের নাম নয়। বরং এটি ছিল একটি  গোলাকার গর্তওয়ালা একটি বাটি বা বোল সাদৃশ কোন পরিমাপ বিশেষ। এটি চার মুদের সমপরিমাণ আয়তন বিশিষ্ট পাত্র। এক ‘মুদ’ বলা হয় তুলনামূলক ছোট আয়তনের একটি বাটি সাদৃশ কৌটা পরিমাপকে। ‘এক মুদ’-কে আধুনিক পরিমাপে .৭৫ লিটার বা ৭৫০ মিলি আয়তন বিশিষ্ট পাত্র সম্যক ধরা হয়। (ইন্টারনেট অবলম্বনে)

ফিত্রা প্রদানের সঠিক সময়

ফিত্রা প্রদানের দু’টি সময় রয়েছে : একটি হল উত্তম সময়, অন্যটি হল বৈধ সময়।
উত্তম সময় হল ঈদের দিন, ঈদের সালাত আদায় করার পূর্বে ফিত্রা প্রদান শেষ করা। আর জায়েয সময় হল ঈদের দু’এক দিন আগেই ফিত্রা প্রদান করে ফেলা।

ইবনু ‘উমার রা. বলেছেন,
أَنَّ النَّبْيَّ -صلى الله عليه وسلم- أَمَرَ بِزَكَاةِ الْفِطْرِ قَبْلَ خُرُوْجِ النَّاسِ إِلَى الصَّلاَةِ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের ঈদের সালাত আদায় করার আগেই ফিত্রা দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (মুসলিম)
وكان ابن عمر يعطي الذين يقبلونها وكانوا يُعطون قبل الفطر بيوم أو يومين
ইবনে উমার রা. ঈদের দু’ একদিন পূর্বেই ফিতরার হকদারদেরকে ফিতরা প্রদান করতেন।

পক্ষান্তরে ঈদের সালাত আদায়ের পূর্বে যদি কেউ ফিতরা প্রদান করে তাহলে তা ফিতরা হিসেবে গণ্য হবে। বিনা কারণে ইচ্ছাকরে সালাতের পর কেউ যদি ফিতরা প্রদান করে, তাহলে তা হবে সাধারণ দান-খয়রাত। তার পক্ষ থেকে ফিতরার ওয়াজিবাত আদায় হবে না।

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. সূত্রে বর্ণিত। রাসূল সা. এরশাদ করেছেন,

زَكَاةُ الْفِطْرِ طُهْرَةٌ لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطَعْمِهِ لِلْمَسَاكِيْنَ - فَمَنْ أَدَّاهَا قَبْلَ الصَّلاَةِ فَهِيَ زَكَاةٌ مَقْبُوْلَةٌ وَمَنْ أَدَّاهَا بَعْدَ الصَّلاَةِ فَهِيَ صَدَقَةٌ مِنْ صَدَقَاتٍ  (ابو داود و ابن ماجة)
অর্থাৎ সিয়াম পালনকারীর অপ্রয়োজনীয় ও বেফাস কথাবার্তা থেকে তাকে পবিত্রকরণ এবং গরীব মিসকীনদের খাবার প্রদানের উদ্দেশ্যে রাসূল সা. ফিত্রা প্রদান করাকে অবশ্য কর্তব্য (ফরজ) করে দিয়েছেন। অতএব যে ব্যক্তি ঈদের সালাতের আগে তা পরিশোধ করবে সেটা ফিত্রা হিসেবে আল্লাহর কাছে গৃহীত হবে। আর ঈদের সালাতের পর প্রদান করলে তা হবে একটা সাধারণ দান-খয়রাত (আবুদাউদ, ইবনে মাজাহ)
ঈদের দিন সূর্যোদয়ের আগে কোন শিশু জন্ম গ্রহণ করলে তার কি কোন ফিত্রা দেয়া লাগবে। তবে সেদিন সূর্যোদয়ের পর জন্মগ্রহণ করলে ফিত্রা দেয়া লাগবে না। অনুরূপভাবে ঈদের আগের দিন সূর্যাস্তের পূর্বে কেউ ইন্তেকাল করলে তার ফিত্রা দিতে হবে না। কিন্তু সেদিন সূর্যাস্তের পর মারা গেলে তার পক্ষে ফিত্রা দিতে হবে। কারণ ফিত্রা প্রদানের ফরয সময় শুরু হয় ঈদের আগের দিন সূর্যাস্তের পর থেকে।

মুনিরুল ইসলাম মাহ্দী
লেখক: ইসলামী ব্যাংকার ও শরীয়াহ্ বিশেষজ্ঞ।
১৬ জুন, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে