রবিবার, ১০ জুলাই, ২০১৬, ০৪:১২:২৬

সন্ত্রাসীদের বিষয়ে যা বললেন জাকির নায়েক

সন্ত্রাসীদের বিষয়ে যা বললেন জাকির নায়েক

ইসলাম ডেস্ক : ভারতের ধর্মীয় নেতা ড. জাকির নায়েক দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে উসকানি দেয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা বাংলাদেশ সরকার বিশ্বাস করেন না।  কোনো সন্ত্রাসী যদি তার ভক্ত হয়, সেটি সেই সন্ত্রাসীর ব্যক্তিগত বিষয়।

শনিবার ভারতের মুম্বাইয়ে প্রচারিত এক ভিডিওতে জাকির নায়েক এ দাবি করেন।  

এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।  তবে ভিডিওটির উৎস সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।  গুগল সার্চ করে সেই ভিডিও'র কোনো অনুলিপিও পাওয়া যায়নি।

এর আগে ৮ জুলাই নিজের ফেসবুকে পোস্ট করা ভিডিওতে জাকির নায়েক জঙ্গিবাদ ও গুলশানের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে একই রকম দাবি করেছিলেন।  তবে সেই ভিডিওতে বাংলাদেশ সরকারের কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কি-না তা জানাননি জাকির নায়েক।

নতুন ভিডিও’র বরাত দিয়ে প্রকাশিত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জাকির নায়েকের আলোচনার প্রসঙ্গ উদ্ধৃত করা হয়েছে।  

জাকির নায়েক বলেছেন, আমি বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।  তারা বলেছেন, নিষ্পাপ লোকদের হত্যার জন্য আমি বাংলাদেশি জঙ্গিদের উসকানি দিয়েছি বলে তারা বিশ্বাস করেন না।  জঙ্গি ব্যক্তি আমার ভক্ত নাকি ভক্ত নয় সে প্রশ্নটি আলাদা।

তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে আমার লাখ লাখ ভক্ত রয়েছে। অর্ধেকেরও বেশি বাংলাদেশি ভক্ত, কিন্তু আমি কাউকে নিষ্পাপ মানুষ হত্যার জন্য অনুপ্রাণিত করেছি তা বলাটা খুব খারাপ।

ওমরাহ পালনের কারণে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন জাকির নায়েক।  শিগগিরই তিনি ভারতে ফিরবেন।  জাকির নায়েক যুক্তরাজ্য, কানাডা ও মালয়েশিয়ায় নিষিদ্ধ উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমগুলোতে কয়েকদিন ধরে আলোচনা চললেও তার দাবি, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কেবল যুক্তরাজ্যে নিষিদ্ধ হয়েছেন।  অন্য দেশে তার ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই।

তিনি বলেন, আমার প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে এমন একটি দেশের কথাই আমি জানি।  কোনো দেশ আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করেছে বলে আমার কাছে কোনো প্রমাণ নেই।  

জাকির নায়েক বলেন, মালয়েশিয়ায় নিষিদ্ধ হওয়ার কথা বলাটা অযৌক্তিক।  তিন বছরেরও কম সময় আগে মালয়েশিয়া থেকে আমাকে তোকোহ মল হিজরাহ এবং কিং ফয়সাল আন্তর্জাতিক পুরস্কার দেয়া হয়েছে।  গত ২৫ বছর আমিসহ চারজন বিদেশিকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

যে ব্যক্তি সন্ত্রাসবাদের প্রচারণা চালায় তাকে কি তারা পুরস্কার দিতে পারত প্রশ্ন রাখেন জাকির নায়েক।

উল্লেখ্য, গুলশান হামলাকারীদের মধ্যে অন্তত দুজন জাকির নায়েকের ভক্ত বলে অভিযোগ ওঠার পর এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

নিহত জঙ্গিদের দুজন হলেন রোহান ইমতিয়াজ এবং নিব্রাস ইসলাম।  তারা জাকির নায়েককে অনুসরণ করত বলে অভিযোগ ওঠে।  

রোহান গত বছর জাকির নায়েকের পিস টিভির একটি অনুষ্ঠান তার ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছিল। ভারতে বিভিন্ন সময়ে আটক হওয়া জঙ্গিরাও জাকির নায়েককে অনুসরণ করতেন বলে অভিযোগ ওঠে।

পাটনার গান্ধী ময়দান ও বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে আটক জঙ্গিদের কাছ থেকেও জাকিরের বক্তৃতার সিডি ও বই উদ্ধারের দাবি করেছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)।  এসব কারণে ভারতে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর দাবি ওঠে।

জাকিরের বিভিন্ন বয়ানের অডিও-ভিডিও ক্লিপিংস এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার গতিবিধি খতিয়ে দেখতে ভারত সরকার এরই মধ্যে ৯টি তদন্ত দল গঠন করেছে।  ৎ

ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য যে ৯টি দল গঠন করা হয়েছে তার মধ্যে চারটি দল তার বক্তব্যের ভিডিও ও সিডির ফুটেজগুলো খতিয়ে দেখবে।

তিনটি দল খতিয়ে দেখবে সোশ্যাল সাইটে জাকির নায়েকের গতিবিধি।  জাকির নায়েকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বিশ্লেষণের দায়িত্ব দওয়া হয়েছে দু’টি দলকে।  দলগুলোতে থাকছেন এনআইএ, ইনটেলিজেন্স ব্যুরো এবং রেভিনিউ ইনটেলিজেন্সের প্রতিনিধিরা।
১০ জুলাই,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে