জামালপুর: সদ্য ওএসডি হওয়া জামালপুরের জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের ভিডিও কেলেঙ্কারীতে দৃশ্যমান নারীকর্মী এখন নিজেকে আড়াল করতেই ব্যস্ত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার পরিচয় ও ছবি নিয়ে চলছে বিরূপ সমালোচনা। জেলা অফিস সহায়ক ওই নারী এ অবস্থাতেই সোমবার সকালে অফিসে যান। কিন্তু গণমাধ্যম কর্মীদের এড়াতে অসুস্থতার ভান করে তিনদিনের ছুটির আবেদন করেন। রবিবার তিনি অফিসে ছিলেন অনুপস্থিত। কার্যত আত্মগোপনে থাকা এ নারী সোমবার সকালে কর্মস্থলে হাজির হলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। নতুন জেলা প্রশাসক তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, ডিসি অফিসের আলোচিত অফিস সহায়ক সোমবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে হিজাব ও বোরকা পরিহিত অবস্থায় একা অফিসে যান। অফিসের সিঁড়ি দিয়ে তিনি দোতলায় উঠতেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের রোষাণলের শিকার হন । কর্মচারীরা তাকে তাড়িয়ে দিতে উদ্যত হলে কর্মকর্তারা পরিস্থিতি সামলান। এরপর তিনি জেলা প্রশাসকের গোপনীয় শাখায় গিয়ে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি অফিসে বসে সাদা কাগজে ছুটির আবেদন লিখেন। পরে তিনি ছুটির আবেদনপত্র হাতে নিয়ে সোফায় বসে থাকেন কয়েক মিনিট। এসময় তাকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিল।
উপস্থিত সাংবাদিকরা অফিস সহায়ক ওই নারীর কাছে ভিডিও ক্লিপ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই জানিনা। ষড়যন্ত্র করে ভিডিও করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। কিন্তু স্যারের যেন কোনো ক্ষতি না হয়। স্যার খুব ভালো মানুষ। স্যার আমার কোনো ক্ষতি করেন নাই। আমার আর বাঁচার কোনো ইচ্ছা নাই। শুধুমাত্র আমার এতিম সন্তানের দিকে তাকাইয়া বেঁচে আছি। আমাকে আপনারা বাঁচার মতো কোনো ব্যবস্থা করে দেন।’
এরপর ছুটির আবেদন জমা দেওয়ার জন্য কক্ষে ঢুকতেই আলোচিত নারী অসুস্থতার ভান করে দরজার সামনে মেঝেতে শুয়ে পড়েন। পরিস্থিতি দেখে সবাই বিব্রত বোধ করছিলেন। সেখানকার একজন নারীকর্মী তাকে অফিসের ভেতর এই পরিস্থিতি তৈরি না করার জন্য অনুরোধ করেন। তাকে উঠে দাঁড়াতে বলে চোখেমুখে পানি ছিটিয়ে দেন। তখনও ছুটির আবেদনপত্রটি নারীর হাতেই ছিল। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই সুস্থ্যভাবে ছুটির আবেদন জমা দিয়ে দ্রুত কালেক্টরেট ভবন ত্যাগ করেন। জেলা প্রশাসক বরাবর করা আবেদনপত্রে তিনি অফিস চলাকালীন সময়ে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার কারণ দেখিয়ে মঙ্গলবার থেকে তিনদিনের ছুটির আবেদন করেছেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গোপনীয় শাখার অফিস সহকারী (সিএ) মো. সাখাওয়াত হোসেন তার আবেদনপত্র গ্রহণ করেছেন।
সাখাওয়াত হোসেন ওই নারীর ছুটির আবেদনপত্র প্রসঙ্গে বলেন, ‘তার ছুটির আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয়েছে। নতুন জেলা প্রশাসক স্যার দায়িত্ব গ্রহণ করলে তার কাছে ওই ছুটির আবেদনপত্রটি দেওয়া হবে।’