গজারিয়া গ্রামের নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মৃত আমাত শেখের ছেলে হেলাল উদ্দিন জীবিকার তাগিদে ২০০৯ সালে লিবিয়ায় পাড়ি জমান। সেখানে আলগানি এলাকায় বাউজ নামের একটি তেল কোম্পানিতে চাকরি করতেন তিনি। গত ৬ মার্চ দুপুরের দিকে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের সিরত এলাকার একটি তেল ক্ষেত্রে কাজ করার সময় জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সদস্যরা হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করে। এ সময় হেলাল উদ্দিনসহ দুই বাংলাদেশি ও বেশ কয়েকজনকে একটি গাড়িতে তুলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
এর পর থেকে তারা নিখোঁজ থাকেন। এ খবর জানাজানি হলে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা ছাড়াও প্রিয়জনের জন্য শোকের মাতম শুরু হয় হেলাল উদ্দিনের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। এ অবস্থায় ১৭ দিন পর গত ২৪ মার্চ সকাল ১০টার দিকে হেলাল উদ্দিন তার স্ত্রী আলেয়া বেগমের কাছে ফোন করে বলেন, তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি খুবই কষ্টে আছেন। তার জন্য সবাইকে দোয়া করতে বলেন। পরে ওই রাতেই মুক্তি পান হেলাল উদ্দিন। রাতের কোনো এক সময় স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় আহত অবস্থায় তাকে ফেলে রাখা হয়।
পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা শেষে হেলাল উদ্দিনের কোম্পানির পক্ষ থেকে তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
হেলাল উদ্দিন বলেন, 'আল্লাহর রহমতে ও দেশের মানুষের দোয়ায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছি। মুসলমান পরিচয় পেয়ে ওরা আমাকে কষ্ট দিয়ে হলেও বাঁচিয়ে রেখেছে এবং শেষ পর্যন্ত মুক্তি দিয়েছে।'
হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী আলেয়া বেগম বলেন, মৃত্যুকূপ থেকে স্বামীকে ফিরে পেয়েছি, এর চেয়ে বড় আনন্দের আর কী থাকতে পারে। ছেলেমেয়েরা তাদের বাবাকে ফিরে পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছে।'-সমকাল
৭ এপ্রিল,২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস