জামালপুর : আর কোনোদিন হাত পাতবে না বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান যে স্কুলের ছাত্র ছিলেন সেই স্কুলের ছাত্রী মোর্শেদা। পরীক্ষার ফি সংগ্রহ করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সে।
পরীক্ষার ফি সংগ্রহ করতে না পেরে জামালপুরের এসএসসি পরীক্ষার্থী মোর্শেদা অকালে ঝড়ে গেল। আজ বুধবার দুপুরে সদর উপজেলার ছোনটিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মোর্শেদা স্থানীয় ছোনটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল। একই স্কুলের ছাত্র ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
মোর্শেদার পরিবার ও প্রতিবেশীরা জানান, মোর্শেদা খাতুনের পিতার নাম কাইঞ্ছা [ দীর্ঘদিন আগে মারা যান তিনি। মা ছবি বেওয়া মোর্শেদাকে নিয়ে বাবার বাড়িতেই বসবাস করছিলেন।
বৃদ্ধ নানা আবুল কাশেম ও মা ছবি বেগম মোর্শেদার লেখাপড়ার খরচ যোগাতেন অন্যের সহায়তায়। চলতি এসএসসি পরীক্ষার ফিও অন্যের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।
স্কুল কর্তৃপক্ষ এবার বিজ্ঞান বিভাগের ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য ১ হাজার ৫শ’ টাকা ফি নির্ধারণ করে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যেই নির্ধারিত ফি পরিশোধের সময় বেধে দিয়েছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এবারো ছবি বেওয়া অন্যের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে মেয়েকে ৬শ’ টাকা দিয়েছিলেন। ওই টাকা নিয়েই মোর্শেদা খাতুন আজ স্কুলে যায়, বাকি টাকা যোগাড় করতে পারেনি বলে শিক্ষকদের জানায়।
কিন্তু মোর্শেদা খাতুনকে ফিরিয়ে দেন শিক্ষকরা। সমাধান না পেয়ে স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মিজানুর রহমানের সঙ্গেও কথা বলে সে। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
পরে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে মোর্শেদা। অবশেষে দারিদ্র্যের যন্ত্রণা ও মনোকষ্ট থেকে চিরতরে মুক্তি পেতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে। নিজ বাড়িতে গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করে সে।
মুক্তি পায় সব বেদনা-কষ্ট থেকে। আর কোনোদিন পরীক্ষার ফি’র টাকা সংগ্রহে অন্যের কাছে হাত পাতবে না সে।
এ ব্যাপারে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
৯ মার্চ,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম