নিউজ ডেস্ক : জঙ্গি হামলার শিকার হলে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলাই সবার জন্য মঙ্গলজনক বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) জনসংযোগ শাখার উপকমিশনার মাসুদুর রহমান। সোমবার রাতে ‘বাংলা ট্রিবিউন ইনফো শো’তে এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
জাবেদ ইকবাল নামে একজন উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমানের কাছে জানতে চান, ‘গুলশানের মতো জঙ্গি হামলার শিকার হলে বা এমন পরিস্থিতিতে পড়লে আমরা কী করবো?’
জবাবে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘অবশ্যই পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলা উচিত। একটি ঘটনার পরপরই যদি সবাই ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে চেষ্টা করেন, সেক্ষেত্রে পুলিশের কাজে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। আপনারা দেখেছেন, এরকম কোনও ঘটনা ঘটলে আমাদের ওই এলাকাটি কর্ডন করতে হয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে অপরাধীরা যাতে অপরাধ করে ঘটনাস্থল থেকে পালাতে না পারে। সেজন্য পুলিশের রোড ডাইভার্সনের বিষয়ও থাকে। তখন ওই এলাকায় যারা বসবাস করেন তারা কিছু না কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হন। সেই কষ্টটুকু আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে। পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যখন অপারেশন চালাই, তখন পুলিশের যে নির্দেশনাগুলো থাকে সেগুলো মেনে চলতে হবে। দেশটা আমার, আমাদের সবার। সেজন্যই আমরা সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করি।’
গুলশানের মতো পরিস্থিতিতে ভিকটিম বা জিম্মি হলে কী করা উচিত- এমন প্রশ্নের জবাবে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘কেউ জিম্মি বা ভিকটিম হয়ে থাকলে, প্রথমত যে কাজটি করা উচিত তা হলো, জিম্মিকারীর চোখের দিকে তাকানো যাবে না। ওই সময়ে জিম্মিকারী যে নির্দেশনা দেবে, তা নিজের বুদ্ধি বিবেচনায় যতটুকু না করলেই নয়, ততটুকু আদেশ পালন করা। বাদানুবাদে না জড়ানো ভালো। (জিম্মিকারীর সঙ্গে) চোখে চোখ রেখে কথা না বলাটাই ভালো।’
মিউনিখ হামলার সময় সেখানকার পুলিশ টুইটারে ঘটনার নিয়মিত আপডেট দিয়েছিল, বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকেও এমনটি করা যায় কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মহানগর পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দেখুন এমন ঘটনা যখন ঘটে, তখন কিন্তু বিভিন্ন ধরনের গুজব থাকে। তথ্য বিভ্রাট থাকে। তখন যদি এগুলো আমরা বলি সেগুলো কোড হয়ে যায়। অনেকে হয় তো খুব দ্রুত তথ্য পেতে চান। সেক্ষেত্রে কিন্তু ভুলও হতে পারে। সেই ভুলের কারণে অনেক ক্ষতিও হতে পারে। তাই এ ধরনের পরিস্থতিতে আমরা অবশ্যই আপডেট তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবো।’
মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা অবশ্যই প্রত্যাশা করবো সত্য ঘটনা নিয়ে মামলা হবে। অনেক সময় মিথ্যা মামলাও হয়। আবার যে সংখ্যক অপরাধী কোনও অপরাধের সঙ্গে জড়িত, এজাহারে তার চেয়ে বেশি নাম দেওয়া হয়। পারস্পরিক শত্রুতা থাকলে এমনটা হয়ে থাকে।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এসব ক্ষেত্রে বিশেষ করে চাঞ্চল্যকর ঘটনার ক্ষেত্রে আমরা জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন ধরনের নিরপেক্ষ সাক্ষীদের জিজ্ঞাসা করি। আলামত সংগ্রহ করার চেষ্টা করি। যেমন, আসামি করা হলো ১০ জনকে, অথচ দেখা গেল সেখানে চারজন মাত্র ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। পুলিশের প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে তদন্ত। যেকোনও ঘটনায় যখন মামলা হয়, তখন একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
০৯ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম