বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০১৬, ০১:২৮:৪৭

দুই হত্যা মামলার রায়ে ১২ জনের ফাঁসি

দুই হত্যা মামলার রায়ে ১২ জনের ফাঁসি

নিউজ ডেস্ক : গাজীপুরে স্কুলছাত্র হত্যার দায়ে ৬ জন এবং চাঁদপুরের কৃষক লীগ সভাপতি হত্যার দায়ে ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ও গাজীপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ পৃথকভাবে এ রায় দেন।

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে জানান, কোটি টাকার জমি দখলের বিরোধের জের ধরে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি অলিউল্লাহ মৃধা হত্যা মামলায় ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। পাশাপাশি এই ঘটনায় অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস পেয়েছেন অপর ৪ আসামি।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিতুল হক এনাম চৌধুরীর আদালত এ রায় দেন। এই সময় আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো- হারুন মৃধা, তার ছেলে আবদুল কাদের মৃধা, আবদুল হামিদ মৃধা, নাজমুল হাসান, মো. গৌরব ও মেহেদি হাসান। এদের মধ্যে হারুন মৃধা অলিউল্লার চাচাত ভাই। আবদুল কাদের ও আবদুল হামিদ তার ভাতিজা।

খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন- আবু তাহের, আক্তার হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন ও জাকির হোসেন। খালাস পাওয়া আসামি আবু তাহের ছাড়া সকল আসামি বর্তমানে জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ২৯শে জুলাই রাত সাড়ে ১০টায় চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার শংকরপুর গ্রামে উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি অলিউল্লাহ মৃধাকে কুপিয়ে খুন করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী জয়নাব বেগম বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে কচুয়া থানায় মামলা করেন। ২০১৫ সালের ৩১শে মার্চ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
 
২০১৬ সালের ৬ই জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি চাদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ১৬ সাক্ষীর মধ্যে ১৫ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দিয়েছেন।

রায় ঘোষণার পর আদালতে জয়নাব বেগম সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি করত। আসামিরা সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক ও সম্পত্তিগত বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়েছে। আদালত ছয়জন আসামির মৃত্যুদণ্ড দেয়ায় আমি সন্তুষ্ট। তবে বাকি চারজনেরও যদি মৃত্যুদণ্ড হতো আমি আরো বেশি খুশি হতাম।

বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আইয়ুব খান বলেন, জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধীদের জের ধরে অলিউল্লাহ মৃধাকে পরিকল্পনা করে খুন করে দণ্ডিত আসামিরা। আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।  তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে জানান, গাজীপুরের কাপাসিয়ায় স্কুলছাত্র হত্যার দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ বিচারক ফজলে এলাহি ভূঁইয়া এ আদেশ প্রদান করেন। এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত সবাই আদালতের কাঠ গড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম, একই এলাকার আতিকুল ইসলাম, আতিক শেখ, সেলিম শেখ, নয়ন শেখ, আনোয়ার হোসেন শেখ। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতরা হলেন- আনোয়ারা বেগম, আবদুল মোতালেব ও শামসুদ্দিন।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার ঘাগটিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে সানাউল্লা সরকারকে পারিবারিক বিরোধ ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আনোয়ারা বেগমের মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে ২০০১ সালের ৯ই ফেব্রুয়ারি শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আদালতের বিচারক এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন কাজল। -এমজমিন

১০ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে