নিউজ ডেস্ক : পশ্চিমবঙ্গের এক পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ৩৬ বাংলাদেশি শিশুকে ‘বেআইনিভাবে’ আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে কলকাতাভিত্তিক সংগঠন মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ-মাসুম।
এ সংগঠনের প্রধান কৃতি রায় এক বিবৃতিতে বলেছেন, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট এলাকায় শুভায়ন হোমে ওই শিশুদের রাখা হয়েছে। এরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। ভারতীয় আইনে তাদের বিরুদ্ধে যেসব ফৌজদারি মামলা হয়েছিল, সেগুলোর নিষ্পত্তি হয়ে গেলেও এদের ফেরত পাঠানো হয়নি।
এই শিশুদের মধ্যে ১৩ জনের নামও বিবৃতিতে প্রকাশ করেছেন কৃতি রায়। এরা হল- স্বপন রায়, মো. রুবেল, নুরুল ইসলাম, মো, ইলিয়াস, গৌতম রায়, অমৃতা রায়, আজিজুল ইসলাম, মো. সোহেল রানা, মিজানুরর রহমান, সুজন আলী আরিফুল ইসলাম, মো. আল আমিন ও বাদশাহ হক।
কৃতি রায় বলেন, এই শিশুরা অনির্দিষ্টকাল ধরে ওই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে আটকে আছে, যার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এছাড়া মো. আতিকুল, মো শরিফ, মোকিদুল ইসলাম ও মো. সুজন নামের আরও চার শিশু ওই হোমে রয়েছে, যাদের নামে মামলা রয়েছে।
মাসুম বলছে, এই শিশুদের সবাই পাচারের শিকার। অথচ দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ না নিয়ে তাদের সবার বিরুদ্ধে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা দেওয়া হয়।
কর্তৃপক্ষের এ ধরনের পদক্ষেপ ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১২ সালের একটি নির্দেশনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করেন মাসুম প্রধান।
ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যারা পাচারের শিকার হয়ে দেশান্তরী হন, তাদের কাছে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বৈধ কাগজপত্র বা পাসপোর্ট থাকে না। পাচারের শিকার হওয়ার বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মামলা করা যাবে না। তদন্তে যদি দেখা যায়, সে স্বেচ্ছায় ভারতে আসেনি বা কোনো অপরাধে জড়ায়নি, তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রও দেওয়া যাবে না।
আর পুলিশ যদি ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র জমা দিয়ে থাকে, তাহলে সেই মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়।
কৃতি রায় জানান, রমজান হক নামে ছয় বছরের এক শিশু গত দুই বছর ধরে এবং এনামুল হক নামের দশ বছরের আরেকজন পাঁচ বছর ধরে শুভায়ন হোমে রয়েছে।
আরও ১৭ বাংলাদেশি শিশুকে কয়েক বছর ধরে ওই পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। কাগজপত্রে বলা হয়েছে, এই শিশুদের নিরাপত্তা প্রয়োজন।
এরা হল- মো. মোমেন, মো. অসীম, মো. জানারুল ইসলাম, মো. সোহেল রানা, গোলাম মুস্তফা, মো জুবায়ের, মো সোহান শেখ, মো. দুলাল আলী, মো. রাজু ইসলাম, শ্রীকৃষ্ণ না তপ্পো, কৃষ্ণা তপ্পো, স্বাধীন হোসেন, রবি আলম, মো. জুনায়েদ পাঠান, ইলিয়াস আলী বাদশা, রাফি শেখ ও নাজমুল হক।
পুরো বিষয়টি ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত শাখার মাধ্যমে স্বাধীনভাবে তদন্ত করে ওই বাংলাদেশি শিশুদের দেশে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছে মাসুম।
১১ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম