নিউজ ডেস্ক : রাজধানীর উত্তর বাসাবোতে নিজের বাসায় দুই শিশুকে গলা কেটে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই আজ রোববার পিরোজপুরে দুই শিশুকে বিষপানে হত্যা করেছেন এক মা। তিনি নিজেও আত্মহত্যা করেছেন। অবশ্য বাসাবোর ওই খুনি মা দুই সন্তানকে খুন করে বাসা ছেড়ে রাস্তায় দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। পরে পুলিশের হাতে আটক হন।
আজ রোববার পিরোজপুরে মাইশা আক্তার কণা (২) ও মাহিয়া আক্তার বেবি (৯ মাস) নামে দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছেন মা নাজমুন্নাহার লাইজু (২৬)। রোববার বিকেলে জেলার হারজী উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ময়নাতদন্তের জন্য নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
লাইজুর স্বামী মনিরুজ্জামান ফরিদ উপজেলার গুদিঘাটা সরোজনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। থানা পুলিশ রোববার সন্ধ্যায় নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে মনিরুজ্জামান ফরিদ পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার হারজী নলবুনিয়া গ্রামের মৃত আলহাজ বাহার আলী খানের ছেলে মনিরুজ্জমান ফরিদের সঙ্গে প্রায় আড়াই বছর আগে উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের আ. রব তালুকদারের মেয়ে নাজমুন্নাহার লাইজুর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের ঘরে কণা ও বেবী নামে দুই মেয়ে শিশু জন্ম নেয়।
মনিরুজ্জামান ফরিদের বরাত দিয়ে এলাকাবাসী জানান, মনিরুজ্জামান ফরিদ রোববার সকালে স্কুলে যায়। বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পায়। পরে ডাকাডাকি করে কোনো সারাশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে তিনজনকে মৃত দেখতে পান।
এদিকে রাজধানীর উত্তর বাসাবোতে নিজের বাসায় দুই শিশুকে গলাকেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তাদের মা তানজিনা রহমান। শনিবার ভোরে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এ দায় স্বীকার করেন তিনি। সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল কুদ্দুস ফকির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
১৩ আগস্ট শনিবার ভোর ৪টার দিকে দুই শিশুর মা তানজিনা রহমানকে সুবজবাগ এলাকা থেকে আটক করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
এর আগে শনিবার ভোরে দুই শিশুকে হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে সবুজবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন তার স্বামী মাহবুব রহমান।
উল্লেখ্য, উত্তর বাসাবোর ১৫৭/২ নম্বর বাসা থেকে শুক্রবার রাতে দুই ভাই-বোনের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাত পৌনে ১০টার দিকে 'ষড়ঋতু' নামের একটি ছয়তলা ভবনের চিলেকোঠায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত হুমায়রা বিনতে মাহবুব তাকিয়া (৬) ও মাশরাফি ইবনে মাহবুব আবরারের (৭) বাবা মাহবুব রহমান ওয়াসায় চাকরি করেন।
মাহবুব রহমান জানান, তিনি এশার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। বাসায় ফিরে দেখেন, দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। পরে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে বিছানার ওপর একজনের এবং পাশের কক্ষে অন্য সন্তানের লাশ দেখতে পান তিনি।
ওই সময় স্ত্রী তানজিনা রহমান ঘরে ছিল না বলে জানান তিনি। নিহত দুই শিশু মাদ্রাসায় পড়াশোনা করতো।
১৪ আগস্ট,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম