বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট, ২০১৬, ০৭:৩০:২২

দীর্ঘ বিরতির পর আবারো ভারতবিরোধিতায় সোচ্চার হচ্ছে বিএনপি

দীর্ঘ বিরতির পর আবারো ভারতবিরোধিতায় সোচ্চার হচ্ছে বিএনপি

সেলিম জাহিদ : দীর্ঘ বিরতির পর আবার ভারতবিরোধী বক্তব্য নিয়ে রাজনীতিতে সোচ্চার হওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে সামনে আনবে দলটি। এ ব্যাপারে দলের উচ্চপর্যায়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।

বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক নেতা বলেছেন, বর্তমান সরকারের সময়ে ‘কম মাশুলে’ ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া এবং সুন্দরবনের অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে আলোচিত রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নেওয়া হবে। বুধবার বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলতে পারেন।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব এত দিন আশায় ছিলেন যে, নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারত নীতির পরিবর্তন আসবে এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সমর্থন দেবে। এ লক্ষ্যে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টাও চালিয়েছে বিএনপি। কিন্তু ভারতের মনোভাবের পরিবর্তনের ব্যাপারে কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছে না বিএনপি। তার ওপর এখন বিএনপির নেতারা মনে করছেন, দেশে ভারতবিরোধী মনোভাব যেভাবে বাড়ছে, তার সঙ্গে না থাকলে বিএনপি রাজনৈতিকভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এ অবস্থায় বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব ট্রানজিট ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বাংলাদেশের স্বার্থপরিপন্থী চুক্তিগুলো নিয়ে সোচ্চার হওয়ার মনস্থির করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তারা আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ঝুঁকে পড়া ভারতকে একটি বার্তা দিতে চান। এ বিষয়ে বিএনপির নেতাদের অনেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কথা বললেও পত্রিকায় নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের একজন ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে, সরকার ও প্রশাসনে ভারতের অবস্থান কী, তা কারও অজানা নয়। বিভিন্ন অন্যায্য চুক্তি নিয়েও মানুষ ক্ষুব্ধ। এ অবস্থায় মানুষ চায় বিএনপি যথাযথ ভূমিকা পালন করুক।

২০-দলীয় জোটের একাধিক সূত্র জানায়, গত রোববার জোটের বৈঠকেও রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প, ট্রানজিট ও সীমান্ত হত্যাসহ ভারত-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। এ সময় খালেদা জিয়া ভারতের চলমান নীতির কড়া সমালোচনা করেন বলে জোটের একাধিক নেতা বলেছেন।

জানা গেছে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের জন্য ১০ দিন আগে বক্তব্যও তৈরি করা হয়। যদিও ওই খসড়া বক্তব্যে সরাসরি ভারতের নাম আনা হয়নি, কৌশলে বিরোধিতা করা হয়েছে।

দলের আরেকটি সূত্র বলছে, বিএনপি আবার ভারতবিরোধী নীতি নিলে সামনে আরও বিরূপ পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কাও করছেন কোনো কোনো নেতা। এ কারণে খালেদা জিয়া কিছুটা দোটানায়ও আছেন।

জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, ‘বিএনপি মনে করে ভারতের সরকার, সে দেশের রাজনৈতিক দল ও ইনস্টিটিউশনগুলোর আমাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকা জরুরি। যাতে একে অপরকে বুঝতে পারে। তবে বিএনপি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়।’ -প্রথম আলো

২৫ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস‌‌‌‌

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে