ঢাকা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না। ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক যুক্তি দিয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। আর এর পেছনে উসকানি রয়েছে বিএনপির।
শনিবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে আসছে। ভবিষ্যতে গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে শংকা রয়েছে। এ ছাড়া উন্নত দেশগুলোতে এখন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।'
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, '১৯৯৬ সালে আমরা পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় এসেছিলাম। তখন আমরা উন্নয়নের ধারা এগিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা পরের বার ক্ষমতায় যেতে পারিনি। এরপর ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আমরা করণীয় ঠিক করি। এরই অংশ হিসেবে নির্মাণ করি একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র।'
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে। আন্দোলনের খুটির জোর এতোদিন পাওয়া যায়নি। এবার আন্দোলনের খুটির জোর পাওয়া গেছে। বিএনপি নেত্রী রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে এসেছেন। আমার মনে হয় এটার মধ্যে ষড়যন্ত্র আছে। তাহলে এতোদিন বিএনপি নেত্রী বিরোধীতা করেননি কেন। বিরোধীতাকারীরা বলছেন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কারণে নাকি সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
রামপালে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ উদ্যোগে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। গত ১২ জুলাই বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট মৈত্রী সুপার থারমাল পাওয়ার প্রজেক্ট বাস্তবায়নে মূল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু তেল-গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটিসহ পরিবেশবাদীদের অনেকে দাবি করে আসছে, রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আছেন পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম।
শুরুতেই সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তারপর রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন।
উল্লেখ্য, গত ১২ জুলাই দুই শ কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয়ে রামপালে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তিতে স্বাক্ষর করে ভারত হেভি ইলেকট্রিক্যালস লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কম্পানি লিমিটেড।
২৬ আগস্ট, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই