নিউজ ডেস্ক : ফাঁসির দড়ি থেকে মাত্র একধাপ দূরে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। তার সামনে এখন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইলে তিনি যদি নাকচ করে দেন তাহলে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে প্রক্রিয়া শুরু করবে কারা কর্তৃপক্ষ।
সেক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা মীর কাসেমের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর কি কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে, না কি কাশিমপুর কারাগারে হবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মধ্যে। উত্তর খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, এই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কোথায় কার্যকর করা হবে, সরকারের সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। তবে উভয় কারাগারের কর্মকর্তারাই বলছেন, সিদ্ধান্ত যাই হোক, তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
নাজিমউদ্দিন সড়কে কারাগার না থাকায় কেরানীগঞ্জে হোক আর কাশিমপুরে হোক, দুটি ক্ষেত্রেই মীর কাসেম হবেন প্রথম যুদ্ধাপরাধী, যার কারাদণ্ড নতুন কোনো কারাগারে হচ্ছে। এর আগে পাঁচজন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে এবং সবার ক্ষেত্রেই তা হয় পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।
২০১৩ সালে আব্দুল কাদের মোল্লা থেকে শুরু করে দণ্ডিত সবাইকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এনে নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারের কাঁসিকাষ্ঠে নেওয়া হয়েছিল। বহু পুরনো সেই কারাগার সম্প্রতি সরে গেছে রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জে, আর এর মধ্যেই আরেক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আইনি লড়াইয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে।
রিভিউ রায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছার পর কাশিমপুরের কারারক্ষক নাসির উদ্দিনবলেন, “ফাঁসি কার্যকর করতে যা করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলার পর বাকি কাজ সারব।”
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আগের পাঁচটি দণ্ড কার্যকরে তদারকির ভূমিকা ছিল জাহাঙ্গীর কবিরের, তবে এখন তার কারাগারই চলে গেছে কেরানীগঞ্জে। জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি তাদেরও রয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তারা।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রিভিউ আবেদন খারিজ করে এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা ছিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা না চাইলে রায় বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। যেকোনো দিন তা কার্যকর করা হবে।
৩১ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি