নিউজ ডেস্ক : ঢাকাসহ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা সকাল-সন্ধা হরতাল চলছে। দলটির নেতা মীর কাসেম আলীর একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়।
আজ বুধবার জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়। বিবৃতিতে জামায়াতের আটক সব নেতার মুক্তিও দাবি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, তবে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, হজযাত্রীদের বহনকারী যানবাহন ও সংবাদপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে হরতালে রাজধানীসহ সারাদেশে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হরতালে নাশকতা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। র্যাবের সব ব্যাটালিয়নও সতর্কতামূলকভাবে অবস্থান করেছে।
হরতালের সমর্থনে দলটির নেতাকর্মীরা রাজধানীসহ যেসব সম্ভাব্য স্থানে বিক্ষোভ করতে পারে সেসব স্থানে বুধবার সকাল থেকেই নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টার হরতাল বিক্ষোভ কিংবা কোনো ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঠেকাতে রাজধানীতে সতর্কাবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার(ডিসি) মাসুদুর রহমান বলেন, জনগণের নিরাপত্তা ও জানমালের হুমকি এমন যে কোনো ধরনের কর্মসূচি রাজধানীতে হতে দেয়া হবে না। হরতালের যারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করবে তাদের কোনোভাবে ছাড় দেয়া হবে না। বিকেলে হরতালের সমর্থনে জামায়াত বিক্ষোভ কিংবা ভাংচুর বা জ্বালাও পোড়াও করলে তা শক্ত হাতে দমন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার চারটি প্রবেশমুখে অতিরিক্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের দেহ তল্লাশি করা হবে। বঙ্গভবন, গণভবন, কূটনৈতিক এলাকা, বিচারকদের বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা।
জামায়াতের হরতাল কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এলিট ফোর্স র্যাব।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান বলেন, রাজধানীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাবের প্রক্যেকটি ব্যাটালিয়নকে সতর্কাবস্থানে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নিয়মিত টহলের পাশাপাশি নৈশ টহল বাড়ানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে এ রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার ও বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমান।
জামায়াতের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র করে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের একের পর এক হত্যা করছে। সরকারের সেই ষড়যন্ত্রের শিকার মীর কাসেম আলী। সরকার তথাকথিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার মিথ্যা, বায়বীয় ও কাল্পনিক অভিযোগে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে নিজেদের দলীয় লোকদের দিয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে।’
৩১ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম