নিউজ ডেস্ক : ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপে ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধুসেতু মহাসড়কে ৬০ কিমি যানজট দেখা দিয়েছে। ফলে উত্তরের পথে এই ধীরগতির কারণে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ঘরমুখী যাত্রীরা।
কারণ ঢাকা থেকে এই পথ ধরেই বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণের বিভিন্ন জেলায় পৌঁছান নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা উত্তর পথের মানুষ। আর ঢাকার কোরবানির পশুর হাটের চাহিদা মেটাতে এই পথ ধরেই উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকা আসছে গরুবোঝাই ট্রাক। তাই আগের দুদিনের মত ব্যাপক জট না থাকলেও ঈদের ছুটি শুরুর প্রথম দিন সকালেও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলছে ধীর গতিতে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ ও চালকদের।
বৃহস্পতিবার রাত রাত ৯টা পর্যন্ত যানবাহন ধীরগতিতে চললেও রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে এই মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধুসেতু পূর্ব পার থেকে মির্জাপুরের গোড়াই পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার যানজটের কারণে নাজেহাল হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা।
গোড়াই মহাসড়ক থানার এলেঙ্গা ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পার থেকে গাজীপুরের চন্দ্রা পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে, সামনে এগোতে হচ্ছে থেমে থেমে।
রাজশাহীগামী এক যাত্রী বলেন, বাস দুই হাত করে যাচ্ছে, আধা ঘণ্টা বসে থাকছে, আবার দুই হাত যাচ্ছে। কখন পৌঁছাব বলতে পারছি না।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম জানান, ঈদে ঘরে ফেরা মানুষবাহী গাড়িগুলোর ব্যাপক চাপ রয়েছে। অতিরিক্ত চাপের কারণে যান চলাচলের গতি কমে আসছে। তবে বড় ধরনের কোনো যানজট নেই।
অপরদিকে হাটিকুরুল হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু গোল চত্বর থেকে গাড়িগুলো খুব ধীর গতিতে চললেও হাটিকুমরুল গোলচত্বর থেকে অপর তিনটি রুটে গতি স্বাভাবিক হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, ঈদে ঘরে ফেরা যাত্রীদের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে জেলার ১০৩ কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়ে নেয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ ছাড়াও যাত্রীদের সচেতন করতে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালনো হচ্ছে।
এদিকে শুক্রবার ভোর থেকে মহাসড়কের মেঘনা সেতু থেকে মেঘনা-গোমতী সেতু (দাউদকান্দি) পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে তীব্র যানজট।
এছাড়া দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে শুরু হয়ে গৌরীপুর পেন্নাই এলাকা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে।
গৌরীপুর তিন রাস্তারমোড়, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা, পদুয়ার বাজার এলাকাতেও যানবাহনের চাপে মাঝে মধ্যে বিচ্ছিন্ন জট তৈরি হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট মোঃ কামারুজ্জামান রাজ জানান, মেঘনা সেতু থেকে মেঘনা গোমতী সেতু (দাউদকান্দি) পর্যন্ত গজারিয়া অংশের পুরোটা, অর্থাৎ প্রায় ১৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট রয়েছে।
তিনি বলেন, 'মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতিতি তৈরি হয়েছে।'
দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ওসি আবদুল আউয়াল জানান, যাত্রীবাহী বাসের পাশাপাশি সড়কে পণ্য ও কোরবানীর পশুবাহী যানবাহনের চাপ রয়েছে। ফলে যেখানে জট নেই, সেখানেও গাড়ি দ্রুত এগোতে পারছে না।
দাউদকান্দি টোলপ্লাজা, গৌরীপুর তিন রাস্তারমোড়, ইলিয়টগঞ্জ, চান্দিনা ও পদুয়ার বাজার এলাকায় যানবাহনের চাপ সবচেয়ে বেশি বলে জানান তিনি।
যানজটের কারণ জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'মেঘনা সেতুর একদিক ছেড়ে অন্য দিক বন্ধ রাখা হলে যানবাহনের জট বাঁধে। তাছাড়া টোলপাল্লাজায় কোনো গাড়ির খানিকটা দেরি হলেই কয়েক শ গাড়ি জমে যায়।'
কুমিল্লার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেন, মহাসড়কের পরিস্থিতি সামাল দিতে গৌরীপুর, বারপাড়া, শহীদনগর, হাসানপুর, বিশ্বরোড, বলদাখাল, টোলপ্লাজা ও দাউদকান্দি সেতুতে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ কাজ করছে।
০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম