শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:৪২:১৫

কানাডায় সামরিক প্রশিক্ষণ পেয়েছিল জঙ্গি মুরাদ?

কানাডায় সামরিক প্রশিক্ষণ পেয়েছিল জঙ্গি মুরাদ?

নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশে গত সপ্তাহে নিহত জঙ্গি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ওরফে মেজর মুরাদ কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকতে পারেন। দেশটির ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাশনাল ডিফেন্স (ডিএনডি) বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে। কানাডার প্রতিরক্ষা সূত্রের বরাত দিয়ে ন্যাশনাল পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।

খবরে আরও বলা হয়, আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হয়তো মুরাদ ওই প্রশিক্ষণ পেয়েছিলেন। গত শুক্রবার বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর এক অভিযানে নিহত হন মুরাদ। এর পর থেকে ঢাকার গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুরাদ (৩৭) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন মেজর ছিলেন। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে তিনি কানাডিয়ান ফোর্সেস জুনিয়র স্টাফ কলেজে প্রশিক্ষণ নেন। পরে বাংলাদেশে এসে সেনাবাহিনীর চাকরি ছেড়ে দিয়ে সন্ত্রাসবাদে ঝুঁকে পড়েন।

ডিএনডির মিডিয়া রিলেশন্স-এর প্রধান ড্যানিলে লে বাউথিলিয়ের বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। তবে এ মুহূর্তে নিশ্চিত করতে পারছি না।’ তবে প্রতিরক্ষা সূত্রগুলো বলছেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যগুলো সঠিক বলেই মনে হচ্ছে। ওদিকে, কানাডার সাপ্তাহিক ম্যাগাজিন ম্যাকলিনের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, মুরাদের কানাডায় প্রশিক্ষণ নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ডিএনডির এক সূত্র।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই সূত্র বলেছেন, ‘জাহিদুল ইসলাম ২০১৪ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত কানাডার ওই কলেজে ছিলেন। তবে প্রশিক্ষণের পর তিনি কানাডায় আরও কিছু সময় ছিলেন, নাকি অবিলম্বে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন তা স্পষ্ট নয়।’ ওই সূত্র আরও জানায়, বাংলাদেশি অফিসারদের ছোট্ট একটি দলের অংশ হিসেবে সেখানে গিয়েছিলেন মেজর মুরাদ। দলের সদস্য সংখ্যা ১০-এর কম ছিল বলে ওই সূত্র উল্লেখ করেন।

ন্যাশনাল পোস্টের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, কানাডার সামরিক প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা বিষয়ক কার্যক্রম ১৯৬৫ সাল থেকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ২ সহস্রাধিক সামরিক শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। বিদেশি সামরিক বাহিনীগুলোর মধ্যে বাংলাদেশও অন্যতম, যে দেশের শিক্ষার্থীরা এই কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কানাডা থেকে প্রশিক্ষণ পেয়েছে।

ড্যানিয়েল বলেন, ‘কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীর বিনিময় ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম রয়েছে। এগুলোর লক্ষ্য হলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করা এবং কানাডিয়ান মূল্যবোধ প্রচার করা।’

মেজর মুরাদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে অবসর নেন। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয় ২০১৬’র এপ্রিলে। বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে নিহত হওয়ার সময় তিনি তাদের জঙ্গি গ্রুপের সামরিক কমান্ডার ছিলেন বলে বলা হচ্ছে। দলের সদস্যদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ তিনিই দিতেন।

ওই সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে ৩০ বছর বয়সী তামিম চৌধুরীকে। বাংলাদেশি-কানাডিয়ান তামিম বেড়ে ওঠেন কানাডার উউন্ডসরে। অভিযোগ রয়েছে তিনি ইউনিভার্সিটি অব উইন্ডসর থেকে স্নাতক পাস করে সিরিয়ায় চলে যান। পরে ২০১৩’র অক্টোবরে বাংলাদেশে আসেন। এ বছর ২৭শে আগস্ট বাংলাদেশি নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দুই সহযোগী সহ নিহত হন তামিম।   
ন্যাশনাল পোস্টের খবরে বলা হয়, রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ (আরসিএমপি) তামিম চৌধুরীর মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে। বাংলাদেশ পুলিশ অভিযানের পর নিহত ব্যক্তির যে ছবি প্রকাশ করেছে তার সঙ্গে তামিমের চেহারার অনেক মিল রয়েছে। উইন্ডসরে তার পরিবার এ নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। - এমজমিন
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে