মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:৫৫:২৫

অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে অস্ত্র আসে ভারত হয়ে

অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে অস্ত্র আসে ভারত হয়ে

নিউজ ডেস্ক : গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার অর্থ আসে মধ্যপ্রাচ্য থেকে হুন্ডির মাধ্যমে। আর অস্ত্র আসে ভারত হয়ে। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের অনুসন্ধানে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। গুলশান হামলায় রাজীব গান্ধী ওরফে প্রভাষ নামে আরও এক মাস্টারমাইন্ড ছিল বলেও অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটি) প্রধান মনিরুল ইসলাম গতকাল এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই দুই হামলায় ব্যবহৃত অর্থ ও অস্ত্র দু’টিই এসেছে বিদেশ থেকে। অস্ত্র এসেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত হয়ে। ওই অস্ত্রগুলো সীমান্ত এলাকা থেকে পাচার করে নিয়ে আসা হয়েছে। আর অর্থ মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে এসেছে।

গতকাল দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। মনিরুল ইসলাম বলেন, সামপ্রতিকালে দুইটি বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয়। অন্যটি হচ্ছে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ার ঈদ জামাতে। ওই দুইটি হামলার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র, অর্থ ও মদতদাতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকা থেকে ওই অস্ত্রগুলো আনা হলেও কোন সীমান্ত এলাকা থেকে আনা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আর অস্ত্রগুলো কোন দেশের তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তিনি আরও বলেন, ওই হামলায় অর্থ এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকে। অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে পাচার করে ওই অর্থগুলো আনা হয়েছিল। মোট ১৪ লাখ টাকা হুন্ডির মাধ্যমে এসেছিল। ওই টাকা জঙ্গিরা হামলার অন্যান্য কাজে ব্যবহার করেছে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশ এবং কারা ওই টাকা পাঠিয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পুলিশ অর্থ প্রেরণকারীকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি হামলার কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রগুলো কোন দেশের তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ার হামলার ঘটনায় জড়িত রাজীব গান্ধী ওরফে প্রভাষ (সাংগঠনিক নাম) নামে একজনের নাম পাওয়া গেছে। ওই দুই হামলার ঘটনায় পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে। তাকে চিহ্নিত এবং গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। পলাতক জঙ্গি নেতা মেজর জিয়াকে ধরার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটুকু চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার ঘটনার অন্যতম মাস্টার মাইন্ড সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা মেজর জিয়া। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে। খুব শিগগিরই তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

উল্লেখ্য, গত ১লা জুলাই রাত ৯ টা ২০ মিনিটে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান রেস্তরাঁয় জঙ্গিরা হামলা চালিয়ে অতিথিদের হত্যা ও জিম্মি করে। এ ঘটনায় পুলিশসহ মোট ২৮ জন নিহত হন। ২৮ জনের মধ্যে মোট ২০ জন জিম্মিকে জঙ্গিরা নৃশংসভাবে হত্যা করে। তাদের ১৭ জনই বিদেশি। কমান্ডো অপারেশনে ৬ জন জঙ্গি নিহত হয়।

 সেখানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২  জন পুলিশ সদস্য নিহত হন। ওই ঘটনার ধকল কাটতে না কাটতেই কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে হামলার ঘটনা ঘটে ৭ই জুলাই সকালে। জঙ্গিরা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ওই হামলা চালায়। কিন্তু, ওই হামলা পুলিশ রুখে দেয়। এতে ঘটনাস্থলে দুই পুলিশ নিহত হন। গুলিতে মারা যান ওই এলাকার এক গৃহবধূ। পুলিশের গুলিতে মারা যায় এক জঙ্গি। -এমজমিন

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে