রবিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০১৫, ০৯:৪১:৩৪

বিদেশিদের নিরাপত্তায় পুুলিশ তৎপর

 বিদেশিদের নিরাপত্তায় পুুলিশ তৎপর

নিউজ ডেস্ক : এক সপ্তাহে ঢাকা ও রংপুরে পরপর দু’জন বিদেশি নাগরিক হত্যার পর রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে টেনশনে পড়েছে পুলিশ প্রশাসন।

ইতোমধ্যেই বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের গতিবিধির ওপর নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের বাসস্থান ও কর্মস্থানে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।

বিশেষ করে চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর, খুলশী, ইপিজেড, কর্ণফুলী ও চকবাজার, ডবলমুরিং থানা এলাকায় বিদেশিদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এসব এলাকায় চেক পোস্ট স্থাপনের পাশাপাশি পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া এসব এলাকায় অবস্থায় হোটেল ও রেস্ট হাউজের সামনেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এসব হোটেলের বোর্ডারদের যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট থানায় জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিএমপির পক্ষ থেকে।

রাজধানীর গুলশানে ইতালির নাগরিক খুনের পরের দিন পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

এ প্রসেঙ্গ নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, পর পর দু’জন বিদেশি নাগরিক হত্যার পর চট্টগ্রামে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়তি টেনশনে পড়েছি। বিদেশিদের নিরাপত্তায় প্রত্যেক থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের টহল জোরদার ও তাদের ওপর নজরদারি বাড়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘ঢাকার পর ব্যবসায়িক ও চাকরির কারণে চট্টগ্রামেই বেশি বিদেশি নাগরিক থাকেন। সেকারণে আমাদের কাছে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে থেকে বিদেশি কতজন নাগরিক ছিলো সেই তালিকা বা পরিসংখ্যান না থাকলেও এখন থেকে বিদেশিদের ব্যাপারে খোঁজ খবর রাখার জন্য স্পেশাল ব্রাঞ্চকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

নগর পুলিশের (বিশেষ শাখা) উপ-কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘চট্টগ্রামে কতজন বিদেশি রয়েছে কিংবা তাদের অবস্থান কোথায় সেটির সঠিক হিসাব আমাদের নেই। এছাড়া প্রত্যেক বিদেশি নাগরিকের পেছনে পেছনে গানম্যান দেয়াও সম্ভব নয়। তবে আমরা তাদের গতিবিধির ওপর সাধা পোশাকে নজরদারি শুরু করেছি। গুরুত্বপূর্ণ এসব এলাকায় পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘স্থায়ীভাবে চট্টগ্রামে বসবাসকারী বিদেশিদের নিরাপত্তায় আমরা একটা ছকে এগুচ্ছি। তবে যেসব বিদেশি স্বল্প সময়ের জন্য এখানে এসে বিভিন্ন হোটেল-রেস্ট হাউসে অবস্থান করেন। তাদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আমাদের দিতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাদের যাতায়ত কিংবা ভ্রমণের সময় প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নেয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীতে শ্রীলংকা, ভারত, পাকিস্তান, চীন, নেপালের লোকজনের বসবাস বেশি। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ নিয়ে বিদেশি নাবিকরা আসেন। এর বাইরে বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় কমর্রত আছে আরও কয়েকটি দেশের নাগরিক। কর্ম ও ব্যবসায়িক সূত্রে এসব বিদেশি নাগরিকরা সিইপিজেডের কয়েকটি কারখানায় কাজ করেন। তবে তাদের বেশিরভাগই থাকেন নগরীর খুলশী এলাকায়।

এছাড়া ইউএসটিসি ও এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব উইম্যানসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দূতাবাসের শাখা, অলিয়ঁস ফ্রঁসেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত বিদেশি নাগরিকদের অধিকাংশের বসবাসও নগরীর খুলশী এলাকায়। ফলে চ্যালেঞ্জটাও বেশি এই থানা পুলিশের ওপর।

খুলশী থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘ইতালি নাগরিক খুন হওয়ার পর থেকেই আমরা বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় পুলিশি টহল বাড়ানোর পাশাপাশি যেসকল বিদেশি খুলশীতে রয়েছেন তাদের বাসা ও অফিসের সামনে পুলিশ অ্যাক্টিভিটিস বাড়িয়েছি। এছাড়া সাধা পোশাকে গোয়েন্দারা তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখছে।’

তবে কেউ এখনো পর্যন্ত নিজের জীবনের নিরাপত্তার হুমকিতে রয়েছে এমন জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেননি বলে জানান ওসি খুলশী। তিনি আরো বলেন, ‘কাউকে ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে না। কে কখন কোথায় যাচ্ছে, সেটিও তারা আমাদের জানাচ্ছে না। এরপরও আমরা আগের চেয়ে অনেক বেশি সর্তক অবস্থানে রয়েছি।’  
এদিকে রাজশাহী, খুলনা, নাটোর, সিলট ও বরিশালসহ দেশের অন্যান্য স্থানেও অবস্থানকারী বিদেশীদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
৪ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএম/ডিআরএ

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে