বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৬:৩২:১০

নয়াপল্টনেও হান্নান শাহ্'র জানাজায় মানুষের ঢল

নয়াপল্টনেও হান্নান শাহ্'র জানাজায় মানুষের ঢল

ঢাকা : বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ্'র তৃতীয় নামাজে জানাজা নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বৃহস্পতিবার বাদ জোহর এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।  জানাজা নামাজে ইমামতি করেন ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক।  জানাজায় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের ঢল নামে।

এর আগে দুটি নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর মহাখালীর ডিওএইচএস মসজিদে প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।  

এরপর বেলা ১১টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হয় দ্বিতীয় নামাজে জানাজা।  এ দুটি নামাজে জানাজায় বিএনপির নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহণ করে।

নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত নামাজে জানাজায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, তরিকুল ইসলাম, এমকে আনোয়ার, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহ জাহান, এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ সহস্রাধিক নেতা-কর্মী জানাজায় অংশ নেন।

সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় হান্নান শাহ'র দ্বিতীয় নামাজে জানাজার পর তার মরদেহ নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নেয়া হয়।

সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত জানাজায় জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদুসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১০টায় মহাখালী ডিওএইচএস মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।  এ সময় বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, এলডিপির সভাপতি অলি আহমদ, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বিএনপির সাবেক নেতা তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী, বিএনপির নেতা ওসমান ফারুক, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, রুহুল আলম চৌধুরী, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদসহ নেতৃবৃন্দ জানাজায় অংশ নেন।

এর আগে বুধবার রাতে আ স ম হান্নান শাহ্'র মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানান দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি তার মহাখালী ডিওএইচএসের বাসায় গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানান। দলীয় চেয়ারপারসন মরহুমের বাসায় পৌঁছানের পর সেখানে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। খালেদা জিয়াও চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  প্রিয় নেতাকে এক নজর দেখতে সন্ধ্যার পর মরহুমের বাসভবনে শত শত নেতাকর্মী জড়ো হন।  সেখানে আসেন সাবেক সেনাপ্রধান লে. জে. নূর উদ্দিন খানও।

মঙ্গলবার ভোরে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান হান্নান শাহ্।  বুধবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের এক ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় তার মরদেহ।  মরহুমের ছোট ছেলে শাহ্ রিয়াজুল হান্নান ও মেয়ে শারমিন হান্নান সুমি মরদেহের সঙ্গে ছিলেন।

লাশ গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে ছিলেন হান্নান শাহ্'র বড় ছেলে শাহ্ রেজাউল হান্নান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ।

বিমানবন্দর থেকে লাশ আনা হয় মরহুমের মহাখালীর ডিওএইচএসের বাসায়। সেখানে দলীয় নেতাকর্মী, আত্মীয়-স্বজনসহ সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা জানান। এরপর লাশ নেয়া হয় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের হিমঘরে।

হান্নান শাহ্’র মৃত্যুতে মঙ্গলবার থেকে ৪ দিনের শোক ঘোষণা করেছে বিএনপি।  শোকের দ্বিতীয়দিনে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশের অফিসে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খোলা শোক বইতে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সই করেন। ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা উন্মুক্ত থাকবে।

হান্নান শাহ্’র নিজ এলাকা গাজীপুরেও পালন করা হচ্ছে শোক। বিভিন্ন মসজিদে তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

শুক্রবার সকালে সড়কপথে গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হবে তার লাশ।  সকাল ৯টায় জয়দেবপুর রাজবাড়ী মাঠে, সকাল সাড়ে ১০টায় কাপাসিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ও জুমার পর নিজগ্রাম চালাবাজার উচ্চবিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে মরহুমের বাবার কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হবে।  
২৯ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে