শুক্রবার, ০৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১০:৫২:৪৫

জঙ্গি হামলার শিকার হলে যা করবেন

জঙ্গি হামলার শিকার হলে যা করবেন

জামাল উদ্দিন: জঙ্গি কিংবা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলে প্রথমে নিজেকে শান্ত রেখে দ্রুত পরিস্থিতি বুঝতে হবে। এরপর প্রতিরোধ করার সক্ষমতা থাকলে আক্রমণকারীদের প্রতিরোধ করতে হবে। কোনোভাবেই তাদের হামলা চালানোর সুযোগ দেওয়া যাবে না। আর যদি প্রতিরোধের সক্ষমতা না থাকে, তাহলে যেভাবেই হোক পালানোর সুযোগ নিতে হবে। সেটাও যদি সম্ভব না হয়, তাহলে চুপচাপ জঙ্গিদের নজর এড়িয়ে থাকার চেষ্টা করতে হবে। হামলাকারীদের সঙ্গে বিরোধে জড়ানো যাবে না। তাছাড়া, তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনাগুলো মেনে চলাই জিম্মিদের জন্য মঙ্গলজনক বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

দেশের ইতিহাসে প্রথম জঙ্গি হামলা ও জিম্মি ঘটনা ঘটে গত ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয়। ওইদিন জঙ্গিরা ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জন জিম্মিকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। এছাড়া, জঙ্গিদের হামলায় মারা যান পুলিশের দুই কর্মকর্তা। আহত  হন আরও অনেকে।বাংলাদেশ পুলিশের অভিজ্ঞতায়ও দেশের ইতিহাসে এটা ছিল  প্রথম জিম্মি ঘটনা।

গুলশান হামলার পর অনেকেই জানতে চান এ ধরনের আক্রমণের শিকার হলে করণীয় কী। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলে পরিস্থিতি বুঝে ধৈর্যের সঙ্গে তা মোকাবিলা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।তা নাহলে জীবনহানীর আশঙ্কা থাকে বেশি।

জঙ্গি দমনে নিয়োজিত পুলিশ ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী আক্রমণের শিকার হলে প্রথমেই হামলাকারীদের মনোভাব বুঝার চেষ্টা করতে হবে। যতটা পারা যায় তাদের অ্যাটেনশন এড়িয়ে চলতে হবে। তাদের চোখে চোখ রেখে কথা বলা ও কোনও প্রকার উচ্চবাচ্য করা যাবে না। হামলাকারীদের মধ্যে সমঝোতার কোনও মনোভাব আছে কিনা, থাকলে সেব্যাপারে তাদের সতর্কভাবে সহায়তা করে যেতে হবে। তাছাড়া তারা কী পরিমাণ সময় নিতে চায় সেটাও জানতে হবে। সম্ভব হলে ও সুযোগ থাকলে তাদের সমঝোতার বিষয়টি বাইরে থাকা স্বজন কিংবা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জানাতে হবে। হামলাকারীরা যাতে জিম্মির কোনও ক্ষতি না করে সেজন্য বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে চেষ্টা চালাতে হবে। তাদের সঙ্গে স্পর্শকাতর কোনও বিষয়ে কথা না বলাই ভালো। তারা যা করতে বলে সতর্কতার সঙ্গে তা করতে হবে। তবে হত্যাকাণ্ডসহ অন্যকোনও স্পর্শকাতর ঘটনার সঙ্গে জড়ানো যাবে না। জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি সার্বক্ষণিক মাথায় রাখতে হবে।তবে নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান,যখন উদ্ধারকারী দল অভিযানে যাবে তখনও চুপচাপ থাকতে হবে।কোনও অস্ত্র হাতে রাখা যাবে না। উদ্ধারকারীরা যাতে জিম্মিকে খালি হাতে দেখে। সম্ভব হলে দু’হাত উপরের দিকে তুলে আত্মসমর্পণের ভঙ্গি দেখাতে হবে। কী হতে যাচ্ছে বুঝতে না পারলে চুপচাপ ধৈর্যের সঙ্গে মেঝেতে বসে থাকতে হবে। উদ্ধারকারী দল আসার পর পালানোর চেষ্টা করা যাবে না। এতে ঝুঁকি বেড়ে যাবে। তবে ঝুঁকি মনে না করলে পালানোর চেষ্টা করা যাতে পারে। জীবন যাতে বিপন্ন না হয়, সেই বিষয়টিও সবসময় মনে রাখতে হবে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘এমন পরিস্থিতির শিকার হলে পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলা উচিৎ। জিম্মি বা ভিকটিমের প্রথম কাজটি হচ্ছে হামলাকারীর চোখের দিকে না তাকানো।তখন জঙ্গিরা যে নির্দেশনা দেয়, আপদকালীন সময়ে নিজের বুদ্ধি বিবেচনায় যতটুকু না করলেই নয়, ততটুকু আদেশ পালন করে যেতে হবে। তাদের সঙ্গে বাদানুবাদে না জড়ানো যাবে না।’-বাংলা ট্রিবিউন
০৭ অক্টোবর,২০১৬/এমটি নিউজ২৪ ডটকম/এইচএস/কেএস

 

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে