মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৬, ০৫:২৪:৫৭

হামলাকারী বদরুলের ঘৃণাস্তম্ভে থুতু

হামলাকারী বদরুলের ঘৃণাস্তম্ভে থুতু

নিউজ ডেস্ক: কলেজছাত্রী খাদিজা বেগমের হামলাকারী বদরুলের ছবি মুড়িয়ে তৈরি করা হয়েছে ডাস্টবিনের মতো দুটি ঘৃণাস্তম্ভ। সেখানে লেখা রয়েছে ‘আমাকে ব্যবহার করুন’ আর ‘থুতু ফেলুন’। পথচারী থেকে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেই স্তম্ভে থুতু ফেলে তীব্র ঘৃণা জানিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে এক ব্যতিক্রমী কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

বাংলাদেশ মানবাধিকার সাংবাদিক কমিশন ব্যতিক্রমী এই কর্মসূচি পালন করেছে। থুতু ফেলার আগে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে খাদিজার বাবা মাসুক মিয়া বক্তব্য দেন। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ফয়সল আলম সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন।

বক্তব্যের একপর্যায়ে খাদিজার বাবা আকুতি জানিয়ে বলেন, ‘খাদিজা, মা আমার, সুস্থ হয়ে আবার আমার কোলে ফিরে আয়। মা রে, ফিরে আয় তুই আমার কোলে।’ তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ের জন্য হিন্দু-মুসলিম-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ সব ধর্ম-বর্ণের দেশ-বিদেশের মানুষ চোখের পানি ফেলছেন। তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই। আপনারা সবাই আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।’

রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খাদিজা। চিকিৎসকেরা গতকাল সোমবার জানিয়েছেন, তাঁর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। প্রতিটি মুহূর্ত উদ্বেগ নিয়ে কাটছে খাদিজার মা-বাবার।

খাদিজা বেগমকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করার এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে গতকাল। এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতা বদরুল আলমের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ সাজার দাবি উঠেছে দেশজুড়ে। তবে পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় শিগগির অভিযোগপত্র দেওয়া সম্ভব নয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, খাদিজার ঘটনায় গোটা দেশ এখন প্রতিবাদমুখর, গোটা জাতি এখন প্রতিবাদমুখর। তবে তনু, আফসানাদের মতো যেন খাদিজার ঘটনা আড়ালে চলে না যায়। সে বিষয়ে সাধারণ মানুষকেই খেয়াল রাখতে হবে। ঘটনার সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে সাধারণ মানুষের আন্দোলন যেন চলতেই থাকে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দীন আহমদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সিলেটের সভাপতি মো. ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সিকান্দর আলী, সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর রেবেকা বেগম, সাংবাদিক আল-আজাদ, ইকরামুল কবীর, অ্যাসিড সন্ত্রাস নির্মূল কমিটি সিলেটের সাধারণ সম্পাদক জুরেজ আবদুল্লাহ প্রমুখ।

৩ অক্টোবর বিকেলে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজাকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতা বদরুল আলম। খাদিজা সিলেটের এমসি কলেজের পরীক্ষা হল থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পরে খাদিজার সহপাঠী ও স্থানীয় জনতা ধাওয়া করে বদরুলকে আটকের পর পুলিশে সোপর্দ করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন খাদিজাকে কোপানোর দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেন। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার নৃশংসতায় শিউরে ওঠে দেশ-বিদেশের মানুষ। এরপর থেকেই বিভিন্ন কর্মসূচিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারের দাবিও জানিয়েছে জনতা।

হামলার ঘটনায় খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস হত্যাচেষ্টার অভিযোগে হামলার পরদিন ৪ অক্টোবর বদরুলের বিরুদ্ধে সিলেটের শাহপরান থানায় মামলা করেন। প্রথম আলো

১১ অক্টোবর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/ইসলাম/নাঈম/

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে