রফিকুল ইসলাম রনি : এবারও তারকা নেতা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠন করা হচ্ছে আওয়ামী লীগের চিন্তাকোষ বা থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত উপদেষ্টা পরিষদ। রাজনীতিবিদের পাশাপাশি থাকবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান উপাচার্য, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ। রাজনীতিক, কূটনীতিক, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদদের নতুন করে কাজে লাগবেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ তালিকায় আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল মাল আবদুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সঙ্গে যোগ হতে পারেন অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, ড. হারুনুর রশিদ, আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, চিত্রনায়ক রাজ্জাক, কৃতী ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, ড. আতিউর রহমান, কৃষি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুসহ বেশ কিছু ব্যক্তিবর্গ। উপদেষ্টা পরিষদে যোগ হতে পারেন বর্তমানে প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, নূহ-উল-আলম লেনিন ও সতীশ চন্দ্র রায়।
এ ছাড়াও উপদেষ্টা পরিষদকে আরও বেশি শক্তিশালী করতে প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীকে পাঠানো হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য থেকে উপদেষ্টা পরিষদে স্থান হতে পারে পিন্সিপাল মতিউর রহমান ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর। আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতার সঙ্গে আলাপকালে এমন আভাস পাওয়া গেছে। তবে সব কিছু চূড়ান্ত করবেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৬ ধারার (ক) অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে, দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদে সদস্য থাকবেন ৪১ জন। তবে সভাপতি প্রয়োজনে সদস্য সংখ্যা বাড়াতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের দফতর সূত্রে জানা গেছে, এ পরিষদে বর্তমানে ৩২ জন। একই অনুচ্ছেদে বলা আছে, উপদেষ্টা পরিষদের ৩টি সেল থাকবে। ১. রাজনৈতিক ২. অর্থনৈতিক ৩. সামাজিক। (খ) অনুচ্ছেদে বলা আছে, উপদেষ্টা পরিষদ দলের চিন্তাকোষ বা ‘থিঙ্কট্যাঙ্ক’ হিসেবে কাজ করবে। সেখানে আরও বলা আছে, উপদেষ্টা পরিষদ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ের ওপর গবেষণা, মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে এবং সময়ে সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দলের বক্তব্য, বিবৃতি, মন্তব্য ও প্রকাশনা-সহায়ক তথ্য-উপাত্ত ও পরিসংখ্যান সরবরাহ করবে। দলীয় সূত্রমতে, আগামী ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে মাথায় রেখেই মূল আওয়ামী লীগকে নবীন-প্রবীণে ঢেলে সাজাবেন দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে বিতর্কিত, অদক্ষ, হাইব্রিডদের বাদ দিয়ে মাঠের জনপ্রিয় নেতাদের স্থান দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় কমিটির পাশাপাশি এবার শক্তিশালী উপদেষ্টা পরিষদ গঠনে নজর দেবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা।
এ জন্য তারকাখ্যাত নেতাদের পাশাপাশি বুদ্ধিজীবী, কূটনীতিক, শিক্ষাবিদ, অর্থনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্টজনদের পছন্দের তালিকায় রেখেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদে আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আবুল মাল আবদুল মুহিত, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, ডা. এস এ মালেক, মো. ইসহাক মিঞা, অ্যাডভোকেট এ কে এম রহমত আলী, এইচ টি ইমাম, ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, রাজীউদ্দীন আহমেদ রাজু, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, মেজর জেনারেল (অব.) কে এম শফিউল্লাহ বীর উত্তম, অ্যাডভোকেট সৈয়দ আবু নসর, মির্জা তোফাজ্জল হোসেন মুকুল, অধ্যাপক ড. আবদুল খালেক, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, এস এম নুরুন্নবী, অধ্যাপক ড. আলাউদ্দিন আহমেদ, অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান, ড. অনুপম সেন, প্রফেসর হামিদা বানু, অধ্যাপক ড. হোসেন মুনসুর, অধ্যাপিকা সুলতানা শফি, এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সি, অ্যাম্বাসেডর জমির, গোলাম মওলা নকশাবন্দী, ড. মির্জা জলিল, ড. প্রণব কুমার বড়ুয়া, মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল হাফিজ মল্লিক, অ্যাডভোকেট শিরিল শিকদার। বর্তমানে ৩১ জন এই দায়িত্বে রয়েছেন।
এবার দলের গঠণতন্ত্র অনুযায়ী ৪১ জন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদের মধ্য থেকে কাউকে কাউকে বাদ দেওয়া হবে। নতুন করে নিয়ে আসা হচ্ছে তারকাখ্যাত নেতা ও স্ব স্ব ক্ষেত্রে অবদান রাখা বিশিষ্টজনকে। দলীয় সূত্রমতে, এবারের উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পেতে পারেন আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর হোসেন পল্টু, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম, অ্যাডভোকেট বাছেদ মজুমদার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ডা. অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত, বর্তমান উপাচার্য ডা. অধ্যাপক কামরুল আহসান খান, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাত, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. প্রফেসর নাসরিন আহমেদ। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান না হলে উপদেষ্টা পরিষদে দেখা যেতে পারে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করে আসা ড. আবদুল মোমেনকে। তিনি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাই। বিডি প্রতিদিন
১৮ অক্টোবর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি